ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

একনেকে পাস হয়নি ইভিএম

সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের দিকে ঝুঁকছে ইসি

সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের দিকে ঝুঁকছে ইসি

ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) প্রকল্প গত মঙ্গলবার ্একনেকে পাস না হওয়ায় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের দিকে ঝুঁকছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আগামীতে যদি এ প্রকল্প পাস হয় তখন হয়তো ২০ থেকে ৩০ আসনে ইভিএমে ভোট করতে পারবে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।

ইসি সূত্র জানায়, ইভিএম ভোট স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য হয়। কিন্তু এ যন্ত্র ভোট দেয়ার জন্য বাংলাদেশের অনেক নাগরিক উপযুক্ত নয়। এ কারণে ভোট গ্রহণে ধীর গতি হচ্ছে। সংসদ নির্বাচনে বৃহৎ আকারে ইভিএম ব্যবহারের জন্য জনবল নেই । তাছাড়া ১৫ জানুয়ারির মধ্যে প্রকল্প পাস না হওয়ায়। আগামী সংসদ নির্বাচনে বেশি আসনে ভোট করা সম্ভব হচ্ছে না। ইভিএম বেশি ব্যবহারের জন্য প্রস্তুতি এবং ট্রেনিং দিয়ে জনবল তৈরির মতো সময় পাওয়া যাবে না। এ জন্য ব্যালটে ভোট করার দিকে এগোচ্ছে ইসি।

নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান এর আগে জানিয়েছেন, ইভিএম প্রকল্পের বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত। ১৫ জানুয়ারির পর হলে খুবই কঠিন হবে ইভিএমে ভোট নেয়া। ইভিএমে না হলে ব্যালটেও ভোট করার জন্য প্রস্তুত ইসি।

নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানা বলেন, জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে ইভিএম নতুন প্রকল্প পাস না হলে ব্যালট পেপারে ভোটগ্রহণের প্রস্তুতি নিতে হবে।

ইভিএম প্রকল্প খুব একটা এগিয়েছে বলে মনে হয় না এমন মন্তব্য করে ইসি রাশেদা সুলতানা বলেন, প্রকল্পের অর্থ প্রাপ্তি সাপেক্ষে সর্বোচ্চ ১৫০ আসনে ইভিএম ব্যবহার করব বলে আমরা বলেছিলাম। এক্ষেত্রে প্রকল্প পাস না হলে আমাদের কাছে বর্তমানে যা আছে তা দিয়েই ভোট করব।

মধ্য জানুয়ারির মধ্যে নতুন প্রকল্প পাস না হলে ব্যালটে যেতে হবে জানিয়ে বেগম রাশেদা সুলতানা বলেন, ইভিএম প্রকল্প পাস না হলে আমাদের ব্যালটে ভোট গ্রহণের প্রস্তুতি নিতে হবে। সময়মতো হলে তো ভালো। না হলে যা আছে তা নিয়েই ভোটগ্রহণ করব।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এসব নিয়ে নীতি-নির্ধারকদের (মন্ত্রণালয়/সরকার) সঙ্গে কথা হয়নি। এটার রীতিও নেই। ইসি সচিবালয় হয়তো কথা বলবে। আমাদের সক্ষমতা যা আছে তাই করব। আমাদের সক্ষমতা তো জানামতে ৭০ থেকে ৮০টি আসনে ইভিএম ব্যবহার করার মতো আছে। এখন কি আছে জানি না।

জানা যায়, আরও দুই লাখ ইভিএম কেনার জন্য আট হাজার ৭১১ কোটি টাকার একটি প্রকল্প প্রস্তাব চূড়ান্ত করে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাঠায় নির্বাচন কমিশন। পরে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় ফেরত পাঠায় ইসিকে ব্যয় কমানোর জন্য। যাছাই-বাছাই করে আবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠায় ইসি। তবে প্রকল্পটি এখনও অনুমোদন দেয়া হয়নি। বর্তমানে প্রকল্পের ব্যয় নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়।

পরিকল্পনা মন্ত্রী এমএ মান্নান আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, ইভিএম প্রকল্প আমি কিছু বলব না। ইভিএম প্রকল্প একনেকে উঠবে কি না জানি না। কেউ যদি প্রকল্পটি একনেকে উঠার কথা বলে থাকে সেটার দায়দায়িত্ব তার।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার সাংবাদিকদের বলেন, আমরা অনেক আগে থেকেই ইভিএমের ত্রুটির কথা বলে আসছি। রংপুর নির্বাচনে সেটি আবারো প্রমাণিত হলো। এতে নির্বাচন কমিশন ও ইভিএমের প্রতি জনগণের আস্থা আরো কমল। তিনি বলেন, ইভিএম ব্যবহারে নির্বাচন কমিশনের অতি উৎসাহের কারণ হলো এতে স্বার্থ রয়েছে। একটি হলো বাণিজ্যিক স্বার্থ, আরেকটি হলো ফল পরিবর্তন করা যায়।

জানা যায়, বর্তমানে ইসির কাছে ১ লাখ ৫০ হাজারের কম ইভিএম রয়েছে। তবে আগামী জাতীয় নির্বাচনে বুথ থাকতে পারে আড়াই লাখের মতো।

সব দলের অংশগ্রহণে এর আগে নবম সংসদ নির্বাচনে কেন্দ্র ছিল ৩৫ হাজার ২৬৩, কক্ষ ১ লাখ ৭৭ হাজার ২৭৭, ভোটার ছিল ৮ কোটি ১০ লাখ ৮৭ হাজার তিনজন।

দশম সংসদ নির্বাচনে দেশে ভোট হয়েছে অর্ধেকের মতো আসনে। বাকিগুলোতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ভোট হওয়ায় সেখানে কেন্দ্রসংখ্যা ছিল কম।

সব দলের অংশগ্রহণে গত সংসদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র ছিল ৪০ হাজার ১৮৩টি। আর বুথ ছিল ২ লাখ ৭ হাজার ৩১২টি, ভোটার ১০ কোটি ৪১ লাখ ৯০ হাজার ৪৮০ জন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত