পাঠ্যবইয়ে ‘ভুল রয়েছে’ স্বীকার করে সংশোধনী দিয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। গত মঙ্গলবার এসব সংশোধনী প্রকাশ করা হয়। সংশোধনীতে আগের ভুল এবং তার স্থলে সঠিক তথ্য কী হবে, সেটা প্রকাশ করা হয়েছে। মোট তিনটি বইয়ের বেশ কিছু সংশোধনী দেয়া হয়েছে, সবগুলো বই-ই নবম-দশম শ্রেণির।
বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা : নবম-দশম শ্রেণির ‘বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা’ বইয়ের একটি অধ্যায়ের লেখায় আগে উল্লেখ ছিল, ‘১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশজুড়ে পাকিস্তান সামরিক বাহিনী নির্যাতন, গণহত্যা আর ধ্বংসলীলায় মেতে ওঠে।’ সংশোধনীতে ‘২৬ মার্চ’ এর পরিবর্তে ‘২৫ মার্চ’ করা হয়েছে।
‘১২ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধান বিচারপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েমের কাছে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন’ এই অংশটুকুর সংশোধনীতে বলা হয়, ‘১২ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, রাষ্ট্রপতি আবু সাঈদ চৌধুরীর কাছে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে
শপথ নেন।’ ‘সংবিধান প্রণয়ন ১০৭২-এর পটভূমি অংশের প্রথম অনুচ্ছেদের পরে যুক্ত হবে’। এই অংশের সংশোধনীতে উল্লেখ করে বলা হয়, ‘সংবিধান প্রণয়ন ১৯৭২ এর পটভূমি অংশের প্রথম অনুচ্ছেদের পর যুক্ত হবে ‘সংবিধান প্রণয়নে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শিক অবস্থান প্রতিফলিত হয়েছিল। সংবিধান প্রণয়নের ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুর সার্বক্ষণিক দিকনির্দেশনা ছিল। তিনি সংবিধান কমিটিকে বিভিন্ন মৌলিক বিষয়ে প্রত্যক্ষ নির্দেশনা দিয়েছেন।’ ‘পঞ্চমভাগে জাতীয় সংসদ’ অংশে সংশোধনে বলা হয়েছে, ‘পঞ্চমভাগে আইনসভা’।
বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ের সংশোধনী : ৫৪ সালের নির্বাচনে ৪টি দল নিয়ে যুক্তফ্রন্ট গঠিত হয়। দল চারটি হলো- আওয়ামী লীগ, কৃষক শ্রমিক পার্টি, নেজামে ইসলাম ও গণতন্ত্রী দল। এর সংশোধনীতে বলা হয়েছে, ৫৪ সালের নির্বাচনে ৫টি দল নিয়ে যুক্তফ্রন্ট গঠিত হয়। দল পাঁচটি হলো- আওয়ামী লীগ, কৃষক শ্রমিক পার্টি, নেজামে ইসলাম, গণতন্ত্রী দল ও পাকিস্তান খেলাফতে রব্বানী পার্টি। ‘ঢাকার রাজারবাগ পুলিশ ক্যাম্প ও পিলখানা ইপিআর ক্যাম্প’-এর সংশোধনীতে বলা হয়, ‘রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স ও পিলখানা ইপিআর সদর দপ্তর’। ‘ধারণ মানুষের মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ এ সংবিধানের প্রধান বৈশিষ্ট্য’- এর সংশোধনীতে বলা হয়, ‘সাধারণ মানুষের মৌলিক মানবাধিকার সংরক্ষণ এ সংবিধানের বৈশিষ্ট্য।
পৌরনীতি ও নাগরিকতা বইয়ের সংশোধনী : ‘রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ও কাজ’ এর ১ ক্রমিকের অনুচ্ছেদে একটি অংশের সংশোধনী দিয়ে বলা হয়- সেখানে প্রতিস্থাপিত হবে, ‘প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিপরিষদের প্রধান। প্রধানমন্ত্রীর কর্তৃত্বে সংবিধান অনুযায়ী প্রজাতন্ত্রের নির্বাহী ক্ষমতা প্রয়োগ করা হয়। তিনি মন্ত্রিসভার সদস্য সংখ্যা নির্ধারণ করেন ও মন্ত্রীদের মধ্যে দপ্তর বণ্টন করেন। তিনি যেকোনো মন্ত্রীকে তার পদ থেকে অপসারণের পরামর্শ দিতে পারেন’।