ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্য

ইন্ডাস্ট্রিয়াল রঙে মাত্রাতিরিক্ত সিসা

ইন্ডাস্ট্রিয়াল রঙে মাত্রাতিরিক্ত সিসা

রঙে সিসার ব্যবহারের মান ৯০ পিপিএম (পার্টস পার মিলিয়ন) পর্যন্ত নির্ধারণ করে দিয়েছে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউট (বিএসটিআই)। ২০১৮ সালে এই মাত্রা নির্ধারণ করা হয়। ৫ বছর হয়ে গেলেও এখনো বিভিন্ন রং উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান উচ্চ মাত্রায় সিসার ব্যবহার করছে। এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের (এসডো) ২০২২ সালের ‘লেড ইন পেইন্টস : অ্যা সিগনিফিক্যান্ট পাথওয়ে অব লেড এক্সপোজার ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার এই গবেষণার ফলাফল এসডোর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে উপস্থাপন করা হয়।

জানানো হয়, বাংলাদেশে রঙে সিসার ব্যবহার নিষিদ্ধকরণের লক্ষ্যে এবং ডেকোরেটিভ ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল রঙে আগের ও বর্তমানে সিসার মাত্রার ফলাফল তুলনা করতে এসডো এই গবেষণা চালায়। লাল, হলুদ ও সোনালি হলুদ রঙের ৩৯টি জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডসহ মোট ৬৩টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষাকৃত নমুনাগুলোর মধ্যে বিভিন্ন মাত্রার সিসার উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়েছে। পরীক্ষাকৃত নমুনাগুলোর মধ্যে ৩০ দশমিক ৮ শতাংশ ডেকোরেটিভ পেইন্টে ৯০ থেকে ২৫০পিপিএম পর্যন্ত সিসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। বাকি ৬৯ দশমিক ২ ভাগ ডেকোরেটিভ পেইন্টে সিসার মাত্রা ছিল ৯০পিপিএম এর কম। তবে ইন্ডাস্ট্রিয়াল রঙে উচ্চ মাত্রায় সিসার উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। মোট নমুনার ৫০ ভাগে এই উচ্চ মাত্রার সিসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এর মধ্যে কমলা রঙে সর্বোচ্চ ৯৭ হাজার পিপিএম পর্যন্ত সিসার মাত্রা শনাক্ত হয়েছে। ‘সিসামুক্ত রং’ এ ধরনের লোগো থাকা সত্ত্বেও ইন্ডাস্ট্রিয়াল রঙে সর্বোচ্চ ৯৭ হাজার পিপিএম পর্যন্ত সিসার উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। ইন্ডাস্ট্রিয়াল পেইন্টে এমন উচ্চ মাত্রায় সিসার উপস্থিতি উদ্বেগজনক। এসডোর সিনিয়র টেকনিক্যাল এডভাইজার ও বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) কেমিক্যাল বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবুল হাসেম বলেন, ‘উন্নয়নশীল দেশে সিসাযুক্ত রঙের সংস্পর্শে আসার কারণে শিশুরা আজীবন মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে। রঙে সিসার ব্যবহার নিষিদ্ধ করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।

এসডোর নির্বাহী পরিচালক সিদ্দীকা সুলতানা বলেন, বাংলাদেশে প্রায় ৩৫ দশমিক ৫ মিলিয়ন (তিন কোটি ৫৫ লাখ) শিশু সিসা দূষণের শিকার। রক্তে সিসার কোনও নিরাপদ মাত্রা নেই। মানবস্বাস্থ্য ও পরিবেশের ওপর সিসার ক্ষতিকর প্রভাব এবং এর বিষক্রিয়া কমাতে আরও গুরুত্ব সহকারে সিসার উৎস খুঁজে বের করতে হবে। এসডোর মহাসচিব ড. শাহরিয়ার হোসেন বলেন, আমরা ঘর সাজানোর জন্য ব্যবহৃত সিসাযুক্ত রঙের বিষক্রিয়ার মাধ্যমে আমাদের শিশুদের জন্য হুমকি সৃষ্টি করি। এ ধারা অব্যাহত থাকলে আমাদের ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে পড়বে। শিশুদের স্বাস্থ্যকর, নিরাপদ ও সুন্দর পরিবেশ প্রদান এবং নারীর স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে রঙে সিসার ব্যবহার বন্ধ করতে হবে এবং প্রচলিত আইনের বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত