ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

যমুনার বঙ্গবন্ধু সেতু

৭ বছরেও অপারেটর নিয়োগ হয়নি

৭ বছরেও অপারেটর নিয়োগ হয়নি

মামলা জটিলতায় যমুনার বঙ্গবন্ধু সেতুতে টোল আদায়ে সাত বছরেও অপারেটর নিয়োগ সম্ভব হয়নি। সেতু কর্তৃপক্ষ নিজেই টোল আদায় করছে। এতে আয়ও বেড়েছে। তবে অপারেটর নিয়োগে ২০১৬ সালে আহ্বান করা দরপত্রের সর্বনিম্ন দরদাতার সঙ্গে দরকষাকষির (নেগোসিয়েশন) সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর বনানীতে সেতু ভবনে বঙ্গবন্ধু সেতু কর্তৃপক্ষের (বিবিএ) বোর্ড সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি সভার পর জানান, সর্বনিম্ন দরদাতার সঙ্গে নেগোসিয়েশন হবে।

সভায় পদ্মা সেতুর উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবের (ডিপিপি) তৃতীয় সংশোধনীর আলোচনা হয়। গত

বছরের ২৫ জুন চালু হওয়া এই সেতুর ব্যয় ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ৩২ হাজার ৮৭৫ কোটি টাকা হতে যাচ্ছে। ২ হাজার ৬৮২ কোটি টাকা বাড়তে যাচ্ছে পদ্মা সেতুর ব্যয়। নদীশাসন ব্যয় ৯ হাজার ৪০০ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ১০ হাজার ২৭৭ কোটি টাকা হচ্ছে।

বঙ্গবন্ধু সেতু ১৯৯৮ সালে চালুর পর থেকে অপারেটরের মাধ্যমে টোল তুলছে বিবিএ। এ পদ্ধতিতে আদায়কৃত টোলের একাংশ নেন ঠিকাদার। নতুন অপারেটর নিয়োগে ২০১৬ সালের ১৬ মার্চ ইওআই আহ্বান করা হয়। ছয়টি প্রতিষ্ঠান প্রাক যোগ্যতা অর্জন করলেও এর পাঁচটি দরপত্রে অংশ নেয়।

কারিগরি যোগ্যতা মূল্যায়নে অস্বচ্ছতার অভিযোগ করে হাইকোর্টে মামলা করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেম (সিএনএস)। স্থগিতাদেশ উঠলে কারিগরি ও আর্থিক প্রস্তাবের যৌথ মূল্যায়নে দক্ষিণ কোরিয়ার এইচপিসি এবং বাংলাদেশের এসইএলের যৌথ উদ্যোগ (জেভি) সর্বোচ্চ নম্বর পায়।

প্রতিষ্ঠানটি আদায়কৃত টোলের সাড়ে ৪ শতাংশ সার্ভিস চার্জ হিসেবে নেয়ার প্রস্তাব করে। সিএনএস চেয়েছিল সাড়ে ১২ শতাংশ। তবে হাইকোর্ট এইচপিসি-এসইএল জেভিকে কার্যাদেশ না দিতে ছয় মাসের নিষেধাজ্ঞা দেন। গত ৩০ আগস্ট এ আদেশ বাতিল করেছেন আপিল বিভাগ।

এখন এইচপিসি-এসইএল জেভিকে কার্যাদেশ দিতে আইনি বাধা নেই। বিবিএর আইন উপদেষ্টার মতামত গতকালের বোর্ড সভায় উপস্থাপন করা হয়। এতে বলা হয়, বিবিএ দীর্ঘদিন ধরেই নিজেই টোল আদায় করছে। সংস্থাটি ভবিষ্যতেও টোল আদায়ে সক্ষম। দ্বিতীয় মতামত ছিল, দরপত্র আহ্বানের পর দীর্ঘ সময় চলে গেছে। নতুন করে দরপত্র আহ্বান করা হলে অপারেটরকে মোট টোলের টাকা থেকে শতকরা হারে সার্ভিস চার্জ না দিয়ে নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা দেয়া উচিত। নয়তো সেতু কর্তৃপক্ষের অনর্থক আর্থিক ক্ষতি হবে। আইন উপদেষ্টার তৃতীয় মতামত, সর্বনিম্ন দরদাতাকে কার্যাদেশ দেয়া যেতে পারে। তবে এতে বিপুল আর্থিক চাপ তৈরি হবে সেতু কর্তৃপক্ষের জন্য।

এই মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে বোর্ড সভায় সিদ্ধান্ত হয়, সার্ভিস চার্জ কমাতে সর্বনিম্ন দরদাতার সঙ্গে নেগোসিয়েশন হবে। ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সেতু কর্তৃপক্ষ নিজস্ব সফটওয়্যারে টোল আদায় করছে। ঠিকাদার তা ব্যবহার করবে কিনা তা নিয়ে আলোচনা করা হবে।

সভায় বঙ্গবন্ধু সেতুর পট বিয়ারিংয়ের ত্রুটি মেরামতের বিষয়ে আলোচনা হয়। সিদ্ধান্ত হয় পদ্মা সেতুসহ সব সেতুতে একমাত্র রাষ্ট্রপতি টোল অব্যাহতি পাবেন। মন্ত্রীসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে টোল দিতে হবে। টোল লাগবে সরকারি সংস্থার যানবাহনেরও।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত