দিনে দিনে দেশে কিশোর অপরাধ বেড়েই চলেছে। ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকাসহ সারা দেশে বিস্তার ঘটেছে কিশোর অপরাধের। শুধু ঢাকার শিশু আদালতের বিচারিক কার্যক্রমের নথি অনুযায়ী গত ১৫ বছরে রাজধানীতে কিশোর গ্যাং কালচার ও মহল্লায় সিনিয়র-জুনিয়র দ্বন্দ্বে প্রায় ২০০টি খুনের ঘটনা ঘটেছে।
সামাজিক নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও গোয়েন্দারা বলছেন, এদের অপরাধের বিস্তার এতোটা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে যে, আগামীতে এসব বখাটে কিশোর গ্যাংই হবে নগরবাসীর দুশ্চিন্তার বড় কারণ। বখাটে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা যেভাবে বেপরোয়া হয়ে উঠছে তাতে রাজধানীর পাড়া-মহল্লায় সচেতন মহলসহ সবাই তৎপর না হলে এই গ্যাং নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। পরিস্থিতি সামাল দিতে লাগাম টানতে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ জরুরি বলেও মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
কিশোর গ্যাংয়ের বিভিন্ন অপরাধ বিশ্লেষণের পর সমাজ বিজ্ঞানী, সামাজিক নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও গোয়েন্দারা আরও বলছেন, অনেক সময় কিছু অভিভাবক তাদের সন্তানের খোঁজ নেন না। তারা কোথায় যাচ্ছে, কী করছে তার খোঁজও নিচ্ছেন না। যার কারণে এমন অপরাধ দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। তাদের দাবি, ৭/৮ বছর আগেও দেশের চিত্র এমন ছিল না। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষালাভ থেকে সরে এসে কিশোররা নানা অপরাধে জড়িয়ে যাচ্ছে। তবে বিশ্লেষকদের তথ্যমতে এ চিত্র দেশের অন্যান্য এলাকার তুলনায় রাজধানী ঢাকায় বেশি। ফলে রাজধানীতে ‘কিশোর গ্যাংয়ের ‘তৎপরতা থামছেই না। বরং কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য সংখ্যা বাড়ছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দারিদ্র্য ও অর্থনৈতিক বৈষম্যের কারণে অনেকে গ্যাং কালচারের দিকে ধাবিত হয়। ফলে সামগ্রিক প্রচেষ্টা নেয়া না হলে কিশোর গ্যাংয়ের এ ভয়াবহ অবস্থা থেকে সহজে মুক্তি পাওয়া যাবে না। বয়সে কিশোর হওয়ার সুবাধে শাস্তির আওতায় আনতে আইনের যথেষ্ট ফাঁকফোকর থাকায় এর সুযোগ নিচ্ছে এসব গ্যাংয়ের লিডারসহ বাকি সদস্যরা। অনেক বড় বড় অপরাধ ঘটিয়েও বয়সের অজুহাতে সহজেই পাওয়া যাচ্ছে জামিনে বের হওয়ার সুযোগ। জামিনে বাইরে এসে এরা আবারও জড়িয়ে পড়ছে অপরাধে।অভিযোগ রয়েছে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় ব্যবহার হয়ে এরা রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বড় বড় অপরাধেও জড়াচ্ছে। অপহরণ, হত্যা, চাঁদাবাজিসহ এমন কোনো অপরাধ নেই যাতে জড়িয়ে পড়ছে না কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে এদের বেপরোয়া চলাফেরা ও আচরণ কিছুতেই নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। মাঝেমধ্যে অপরাধ দমনে র্যাব-পুলিশকে সক্রিয় হতে দেখা যায়। তখন কিছুটা ভাটা পড়লেও কিছুদিন যেতে না যেতে ফের মাথাচারা দিয়ে ওঠে এসব খুদে অপরাধীরা।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তথ্য মতে, রাজধানীতে বেপরোয়া হয়ে ওঠা কিশোর গ্যাংয়ের সংখ্যা তিন হাজারেরও বেশি। তারা নানা অপরাধে যুক্ত হয়ে পড়ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন, কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা যারা অপরাধে জড়াচ্ছে তাদের বয়স ১৩ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে। এরা যত বড় অপরাধই করুক না কেন তাদের শিশু আইনে বিচারের আওতায় আনা হচ্ছে। ওই আইনে হত্যাকাণ্ডের মতো অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি দশ বছর। ফলে আইনের সুযোগ নিয়ে কিশোর অপরাধীদের বড় বড় অপরাধে ব্যবহার করারও অভিযোগ পেয়েছে গোয়েন্দারা। দিনের পর দিন কিশোর গ্যাংয়ের বেপরোয়া কর্মকাণ্ড ভাবিয়ে তুলছে সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দা ও অভিভাবকদের। গ্যাংয়ের সদস্যদের আচরণ এতটাই বেপরোয়া যে, তাদের কেউ কিছু বলার সাহস পাচ্ছেন না। এলাকার বড় ভাইদের প্রভাব বলয়ে থেকে এরা গুরুতর অপরাধ কর্মকাণ্ড সংঘটনে সিদ্ধহস্ত। কোনো অপরাধ করার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতেও গ্রেফতার হচ্ছে অনেকে। কিন্তু তারপরও এদের দৌরাত্ম্য কমছে না।
পুলিশের প্রস্তুত করা একটি ডাটাবেজ দেখা গেছে, কিশোর গ্যাংয়ের গডফাদার রয়েছে আওয়ামী লীগের ১১ জন, ছাত্রলীগের ১৬ জন, স্বেচ্ছাসেবকলীগের ৫ জন, ওয়ার্ড কাউন্সিলর ৪ জন, যুবলীগের ৭ জন, বিএনপির একজন, যুবদলের একজন, শ্রমিক লীগের একজন এবং রাজনৈতিক পরিচয় নেই এলাকায় প্রভাবশালী এমন পাঁচজন। গডফাদাররা কিশোর গ্যাংকে অর্থ ও দেশীয় অস্ত্র সরবরাহও করে। এছাড়া সব অপরাধ করতে উৎসাহ দেয়। মহল্লা-বস্তির ছিঁচকে সন্ত্রাসী থেকে ধনাঢ্য পরিবারের ধনীর দুলালদের সমন্বয়ে গড়া বেশ কিছু গ্যাংয়ের সদস্যদের কাছে এরই মধ্যে পৌঁছে গেছে দেশি-বিদেশি অস্ত্র। মাঝেমধ্যেই গ্যাংয়ের সদস্যরা নিজেদের ক্ষমতা দেখাতে অন্য এলাকায়ও মহড়া দিচ্ছে বলে খবর রয়েছে গোয়েন্দাদের কাছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্র আরও বলছে, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে গড়ে উঠছে এসব কিশোর গ্যাং। তারা বিভিন্ন অপরাধ সংগঠনের পাশাপাশি নিজেদের একটা জগত তৈরি করেছে । পাড়া-মহল্লায় তৈরি হওয়া কিশোর গ্যাং নিজেদের তৈরি করা সাংকেতিক ভাষায় তথ্য আদান-প্রদান করে। বিগবস, নাইন এমএম, নাইন স্টার, ডিসকো বয়েজ ইত্যাদি নামে পরিচিত ‘কিশোর গ্যাং’ আধিপত্য বিস্তার, ছিনতাই, চুরি, পাড়া বা মহল্লার রাস্তায় মোটরসাইকেলের ভয়ংকর মহড়া, মাদক এবং ইয়াবা সেবন ও বিক্রি, চাঁদাবাজি, মেয়েদের উত্ত্যক্ত করা এমনকি বিভিন্ন হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িয়ে পড়ছে।
পুলিশের তালিকা অনুযায়ী রাজধানীতে সবচেয়ে বেশি কিশোর গ্যাং রয়েছে মিরপুর এলাকায়। এছাড়া তেজগাঁও, উত্তরা, গুলশান, ধানমন্ডি, ঝিগাতলা, আজিমপুর, লালবাগ, ওয়ারী, সায়েদাবাদ, খিলগাঁও, মতিঝিল, রমনা, মগবাজার, গাবতলী, মহাখালী, বাড্ডা, রামপুরা, হাতিরঝিলসহ বিভিন্ন এলাকায় তারা মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে।
তাদের চিহ্নিত করার পাশাপাশি পৃষ্ঠপোষক বা রাজনৈতিক গডফাদারদের নামও তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। সেগুলো রাজনৈতিকভাবে দেখা হচ্ছে। পুলিশের তালিকায় কিশোর গ্যাংয়ের রাজনৈতিক শেলটারদাতা বা পৃষ্ঠপোষক হিসেবে অর্ধশত ব্যক্তির নাম উঠে এসেছে। কেউ কেউ এলাকায় আধিপত্য বিস্তারে সুবিধার জন্য সরকারি দলের সাইনবোর্ড এবং পদ-পদবিও নিয়েছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারপারসন খন্দকার ফারজানা রহমান বলেন, ‘কিশোর অপরাধ অনেক আগে থেকেই চলে আসছে। তবে স্কুলছাত্র আদনান কবীর হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে কিশোর গ্যাংয়ের বিষয়টি আলোচনায় আসে ২০১৭ সালের শুরুতে। কিশোর গ্যাং বিস্তারের অন্যতম কারণ হলো সামাজিকভাবে তাদের প্রতিহত করার জায়গাটি অনেক দুর্বল। সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলো দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে পারছে না। এজন্য এর প্রভাব বেড়েই চলেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. জিয়া রহমান বলেন, কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণ করতে হলে এর কারণ নিরূপণ করা জরুরি। নানা কারণে কিশোর শ্রেণি বিপথে ধাবিত হয়। এজন্য সমাজে অপরাধপ্রবণতা হ্রাস, মাদকের সহজলভ্যতা বন্ধ, দারিদ্র্যবিমোচন এবং মানবিক আচরণ জরুরি। শুধু পুলিশ দিয়ে নয়, সমাজের সম্মিলিত প্রচেষ্টা থাকতে হবে। দারিদ্র্য ও অর্থনৈতিক বৈষম্যের কারণেও অনেকে গ্যাং কালচারের দিকে ধাবিত হয়। ফলে সামগ্রিক প্রচেষ্টা নেয়া না হলে কিশোর গ্যাংয়ের এ ভয়াবহ অবস্থা থেকে সহজে মুক্তি পাওয়া যাবে না।
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, মসজিদ কমিটি থেকে স্কুল কমিটি, রাজনীতি, পরিবার সব জায়গায় দ্বন্দ্ব, মারামারি, কলহ। আমাদের শিশু-কিশোররা এ সব সংস্কৃতির মধ্যে বড় হচ্ছে। তাই তারাও নানাভাবে অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। কিশোর অপরাধ কমাতে যারা দায়িত্বপূর্ণ জায়গায় আছেন তাদের আগে ঠিক করতে হবে।
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, লেখাপড়া ছেড়ে দেয়া বিশেষ করে উঠতি বয়সি ছেলেরা নানাবিধ অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে। তাদের পুলিশের পক্ষ থেকে কাউন্সেলিং করা হচ্ছে।
এ ধরনের অপরাধ নিয়ন্ত্রণে শুধু মেট্রাপলিটন পুলিশ নয়, সারা দেশের পুলিশ কাজ করছে। তিনি বলেন, কিশোর গ্যাং হলো আমাদের সামজের একটি মারাত্মক ব্যাধি। ছোটখাটো ছিনতাই থেকে শুরু করে মাদক সেবন, মেয়েদের ইভটিজিং করা এমনকি নিজেদের মহল্লায় জুনিয়র-সিনিয়র সংঘাতের কারণে খুনের ঘটনাও ঘটছে। সব কিছু বিবেচনায় নিয়ে আমরা কাজ করছি। এরইমধ্যে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সব থানায় এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। থানা পুলিশের পাশাপাশি এ বিষয়ে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশও কাজ করছে। কিশোর অপরাধ দমনে সচেতন নাগরিকদের এ সম্পর্কিত তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করতে হবে। সঠিক তথ্য পেলে হয়তো কিশোর অপরাধ কমে আসবে।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘কিশোর অপরাধ বাড়ার পেছনে সব স্টেকহোল্ডারদের ভূমিকা আছে। মূলত সমাজের বিভিন্ন ছোটো ছোটো অপরাধ করতে করতেই কিশোররা বড় ধরনের অপরাধ করে থাকে। নৈতিক শিক্ষার অভাবে কিশোর অপরাধ বাড়ছে। তাছাড়া পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সঠিকভাবে ভূমিকা রাখতে পারছে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীরও কিছু ঘাটতি আছে।’
অপরাধ বিশেষজ্ঞ তৌহিদুল হক বলেন, কিশোর গ্যাং ভয়াবহভাবে মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। এই গ্যাং বৃদ্ধির পেছনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পাতি নেতা থেকে শুরু করে স্থানীয় কাউন্সিলরসহ অনেক নেতাকর্মী জড়িত। কিশোররা না বুঝে অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে। কিশোর অপরাধ দমন করতে হলে আইনি, সামাজিক ও পারিবারিকভাবে বিভিন্ন স্তরের মানুষকে সচেতন হতে হবে।
রাজধানী দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ৮৬ কিশোর গ্যাং: র্যাব-পুলিশের বিভিন্ন গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী ৫৪ গডফাদারের রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় রাজধানীতে ৮৬ কিশোর গ্যাংয়ের ২ হাজার ৫০০ সদস্য নিত্যদিনই করে যাচ্ছে একের পর এক অপরাধ। হত্যা, ছিনতাই, অপহরণ, ইফটিজিং ও চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধ। ওই গডফাদারদের বেশিরভাগই রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী। আছেন ওয়ার্ড কাউন্সিলরও।
রাজধানীর উত্তরা বিভাগে মোট ১১টি গ্রুপ পুলিশের তালিকাভুক্ত হয়েছে। এগুলো হলো- নাইন স্টার, এইচবিটি আ হিটার বয়েজ, সানি গ্রুপ, ইয়ংস্টার গ্রুপ, বিগ বস গ্রুপ, রানা ভোলা কিং মহল, জিদান গ্রুপ, শাহীন গ্রুপ, রিপন গ্যাং, সলেমান গ্যাং, দি বস (হৃদয় গ্যাং) গ্রুপ। এই ১১টি কিশোর গ্রুপের সদস্য সংখ্যা ৩২০ জন। গুলশান এলাকায় ডি নাইন নামের মাত্র একটি গ্রুপ শনাক্ত করেছে পুলিশ। এর সদস্য সংখ্যা ৩০ জনের বেশি।
তেজগাঁও বিভাগে সক্রিয় গ্রুপ ১৭টি। কানা জসিম গ্রুপ, মাইন উদ্দিন গ্রুপ, শাকিল গ্রুপ, মামুন গ্রুপ, লাড়া-দে, চিনে ল, কোপাইয়া দে, স্লোগান গ্রুপ, বাঁধন গ্রুপ, পলক গ্রুপ, গাংচিল গ্রুপ, ঘুটা দে, চেতাইলেই ভেজাল, দ্যা কিং অব গাইরালা, ভইরা দে এবং অনলি কোপাইয়া দে গ্রুপ। এই ১৭টি কিশোর গ্রুপের সদস্য সংখ্যা এক হাজারের অধিক।
এছাড়া মিরপুরে সক্রিয় ২৩টি গ্রুপ। এদের মোট সদস্য সংখ্যা ১২০জন। এগুলো হলো- অপু গ্রুপ, আব্বাস গ্রুপ, নাডা ইসমাইল, হ্যাপি, বগা হৃদয়, ভাস্কর, রবিন, এল কে ডেভিল বা বয়েজ এল কে তালতলা, পটেটো রুবেল, অতুল গ্রুপ, আশিক গ্রুপ, জল্লা মিলন গ্রুপ, রকি, পিন্টু-কাল্লু গ্রুপ, মুসা হারুন গ্রুপ ওরফে ভাই ভাই গ্রুপ, রোমান্টিক গ্রুপ, সোহেল গ্রুপ, ইসামিন, ইমন ও জুয়েল গ্রুপ।
রমনা বিভাগে ৮টি গ্রুপের নাম হচ্ছে- বেইলী কিং রন, অলি গ্রুপ, জসিম, লাভলেন, বাংলা গ্রুপ, পারফেক্ট গ্যাং স্টার বা পিজিএস, সুমনের গ্রুপ এবং লাড়া-দে। এই ৮টি গ্রুপের সক্রিয় সদস্য ১৪০ জন।
এছাড়া ওয়ারী বিভাগে শুক্কুর গ্রুপ, লিটন গ্রুপ, তাহমিদ গ্রুপ, পলাশ গ্রুপ, মোল্লা গ্রুপ এবং সাঈদ গ্রুপ নামে ছয়টি গ্রুপ চিহ্নিত করা হয়েছে। যাদের মোট সদস্য ১০০ জনের মতো।
রাজধানীর ব্যাংকপাড়া হিসাবে পরিচিত মতিঝিল এলাকায়ও পুলিশের তালিকায় উঠে এসছে ১১টি কিশোর গ্যাং। সেগুলো হলো- মিম গ্রুপ, চাঁন যাদু গ্রুপ, ডেভিল কিং গ্রুপ, ফুল পার্টি, জিসান গ্রুপ, বিচ্ছু বাহিনী, আকিল ও অন্নয় গ্রুপ, নিবির গ্রুপ, মাসুদ গ্রুপ। এছাড়া সক্রিয় আরও ৩টি গ্রুপের নাম জানা যায়নি। এই ১১টি কিশোর গ্রুপের সদস্য সংখ্যা ৯০ জন। লালবাগ বিভাগে সক্রিয় ৬টি গ্রুপ। এগুলো হলো জুম্মন গ্রুপ, বহুল আলোচিত টিকটক হৃদয়, আহম্মেদ পাত্তি গ্রুপ, ইয়ামিন, ফায়সাল ও নাসির গ্রুপ। এই ৬টি কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য সংখ্যা ১৫০ জন।
ঢাকার বাইরে চট্টগ্রাম, সিলেট, বরিশাল, যশোর, রাজশাহী, রংপুর ও খুলনায় অর্ধশতাধিক কিশোর গ্যাংয়ের তথ্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে এসেছে। তবে বাহিনীর কর্মকর্তাদের মতে, সারা দেশে প্রতি পাড়া-মহল্লায় এক বা একাধিক কিশোর গ্যাং রয়েছে। তাদের তালিকা করা হচ্ছে।