ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ইউজিসির প্রতিবেদন

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯ শতাংশ অধ্যাপক বেশি প্রাইভেটের চেয়ে

৩৯ শতাংশ প্রভাষক বেশি প্রাইভেটে
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯ শতাংশ অধ্যাপক বেশি প্রাইভেটের চেয়ে

দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় কর্মরত শিক্ষকদের মধ্যে সর্বোচ্চ অধ্যাপক পদে আছেন ৩০ শতাংশ। অন্যদিকে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে এ পদের হার মাত্র ১১ শতাংশ। অর্থাৎ প্রাইভেটের চেয়ে ২৯ শতাংশ বেশি অধ্যাপক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে। অন্যদিকে সর্বনিম্ন প্রভাষক পদের শিক্ষক বেশি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে। পাবলিকে যেখানে এ পদের শিক্ষকদের হার ১৪ শতাংশ, সেখানে প্রাইভেটের হার ৫৩ শতাংশ। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদনে এই চিত্র উঠে এসেছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দেয়া ২০২১ সালের তথ্য নিয়ে তৈরি করা প্রতিবেদনটি সম্প্রতি প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদন সূত্র মতে, ২০২১ সালে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকের সংখ্যা ছিল ১৫ হাজার ২৩৬ জন। এরমধ্যে প্রভাষক ২ হাজার ৯০ জন (১৪ শতাংশ), সহকারী অধ্যাপক ৫ হাজার ৪৪৯ জন (৩৬ শতাংশ), সহযোগী অধ্যাপক ২ হাজার ৭৯৯ জন (১৮ শতাংশ) এবং অধ্যাপক ৪ হাজার ৪৬১ জন (৩০ শতাংশ)। অন্যদিকে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক সংখ্যা ছিল ১৫ হাজার ৩৯৩ জন। এরমধ্যে প্রভাষক ৮ হাজার ২২৩ জন (৫৩ শতাংশ), সহকারী অধ্যাপক ৩ হাজার ৬৯১ জন (২৪ শতাংশ), সহযোগী অধ্যাপক ১ হাজার ৩৩২ জন (৯ শতাংশ) এবং অধ্যাপক ১ হাজার ৭৬৬ জন (১১ শতাংশ)। এদিকে পিএইচডি ডিগ্রিধারী শিক্ষকদের ক্ষেত্রে এগিয়ে আছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি ডিগ্রিধারী শিক্ষকের হার ৩৭ শতাংশ। অন্যদিকে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে এ হার মাত্র ১৯ শতাংশের কিছু বেশি। এছাড়া শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাতের দিক থেকেও এগিয়ে আছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়।

ইউজিসির প্রতিবেদন সূত্র মতে, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাত ১:১৯। আর প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে এ অনুপাত ১:২০। অবশ্য এর আগের বছর ২০২০ সালে উভয়ের অনুপাত বেশি ছিল। ওই বছর পাবলিকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাত ছিল ১:২০ ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ছিল ১: ২২। প্রাইভেট ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পদোন্নতি প্রক্রিয়া ও বর্তমান পদের হার সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক আলোকিত বাংলাদেশকে জানান, পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের পদোন্নতি প্রক্রিয়া ভিন্ন। প্রাইভেটে একজন শিক্ষককে প্রভাষক থেকে অধ্যাপক হতে গড়ে ২০ বছর লেগে যায়। অন্যদিকে পাবলিকে ১০ বছরেই অধ্যাপক হয়ে যান। তিনি বলেন, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বেতন বাড়ার ভয়সহ নানা কারণে শিক্ষকদের পদোন্নতি দিতে চান না। তাছাড়া প্রাইভেটে পদোন্নতির ক্ষেত্রে গবেষণাসহ অন্য শর্তগুলো যেভাবে দেখা হয়, পাবলিকে সেভাবে দেখা হয় না। অথচ প্রাইভেটে সুযোগ না থাকলেও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের গবেষণার সুযোগ আছে।

শিক্ষাক্ষেত্রে এর নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে ওই শিক্ষক আরও বলেন, একই ব্যক্তি প্রফেসর হিসেবে ক্লাসে গেলে যে গুরুত্ব পান, প্রভাষক হিসেবে গেলে ততটা পান না। এতে শিক্ষকদের মাঝে হীনমন্যতাও তৈরি হয়। তাই পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে একটি সমন্বিত নীতিমালা হওয়া উচিত বলেও মনে করেন তিনি। শিক্ষাবিদরা জানান, মানসম্মত শিক্ষার জন্য অবশ্যই মানসম্মত শিক্ষক প্রয়োজন। এক্ষেত্রে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাতও কমানো দরকার বলে তারা মনে করেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত