ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

আজ রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের তফসিল

আলোচনায় শিরীন শারমিন চৌধুরী

আলোচনায় শিরীন শারমিন চৌধুরী

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের বিস্তারিত সময়সূচি আজ বুধবার ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নতুন রাষ্ট্রপতি হিসেবে বর্তমান স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর নাম আলোচনায় রয়েছে। তিনি দেশের ইতিহাসে প্রথম নারী রাষ্ট্রপতি হতে যাচ্ছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে।

গতকাল স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, আমাদের স্পিকারের সঙ্গে সাক্ষাৎকার সংক্ষিপ্ত ছিল। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আজ সকাল ১১টায় নির্বাচন কমিশন সভা করবে। সভা করে আমরা তফসিলটা উন্মুক্ত করব, তখন আপনারা বিস্তারিত জানতে পারবেন।

কাজী হাবিবুল আউয়াল জানান, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন সামনে রেখে আইন অনুযায়ী তফসিল ঘোষণার আগে স্পিকারের সঙ্গে সিইসির সাক্ষাৎ করতে হয়। স্পিকারের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। মতবিনিময় করেছি। এরপর সিদ্ধান্ত হয়েছে, আমরা অচিরেই রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করব। সে তফসিল ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন, সিইসি নন।

সংবিধানের ১২৩ (১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে- রাষ্ট্রপতি পদের মেয়াদ অবসানের কারণে এ পদ শূন্য হলে মেয়াদ সমাপ্তি তারিখের আগের ৯০ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে শূন্য পদ পূরণের জন্য নির্বাচন হবে।

রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন সংসদ সদস্যদের ভোটে। সংসদে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় তাদের প্রার্থীর রাষ্ট্রপতি হওয়াটা নিশ্চিত।

সবশেষ রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের তফসিল হয় ২০১৮ সালের ২৫ জানুয়ারি। সে সময় ১৮ ফেব্রুয়ারি ভোটের তারিখ থাকলেও প্রার্থী একজন থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ৬ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় দফায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন মো. আবদুল হামিদ। আগামী ২৩ এপ্রিল শেষ হবে তার মেয়াদ।

এবার ২৩ জানুয়ারি থেকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ক্ষণ গণনা শুরু হয়েছে। ২৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করতে হবে।

বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের দ্বিতীয় মেয়াদ আগামী ২৩ এপ্রিল শেষ হচ্ছে। ১০ বছর পর নতুন রাষ্ট্রপতি পাচ্ছে দেশ। যদিও ২৩ এপ্রিল রাষ্ট্রপতির মেয়াদ শেষ হবে, কিন্তু সংবিধান অনুযায়ী দুই মাস আগে অর্থাৎ ২৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যেই নতুন রাষ্ট্রপতি নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। সেই হিসেবে নতুন রাষ্ট্রপতি নিয়োগে বাকি আর ২২ দিন।

এরই মধ্যে বিভিন্ন মহলে নানা জল্পনাকল্পনা শুরু হয়েছে কে বসছেন রাষ্ট্রপতির চেয়ারে। বেশ কয়েকজন আছেন আলোচনায়। তবে এদের মধ্যে বর্তমান স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সবার চেয়ে এগিয়ে আছেন। রংপুর-৬ আসন থেকে নির্বাচিত শিরীন ২০১৩ সালের এপ্রিলে জাতীয় সংসদের সবচেয়ে তরুণ স্পিকার হিসেবে নির্বাচিত হন। তিনি এখনো এ দায়িত্ব পালন করছেন।

যেভাবে হবে নির্বাচন : প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এই নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করবেন। সংসদ সদস্যরাই রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ভোটার। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে নির্বাচনি কর্মকর্তার সামনে নির্ধারিত ব্যালট পেপারে পছন্দের প্রার্থীর নাম ও নিজের স্বাক্ষর দিয়ে তা জমা দিতে হবে। এর মুড়ি অংশে স্বাক্ষর দিয়ে ভোটারদের ব্যালট পেপার সংগ্রহ করতে হবে। ভোট দেয়ার পর সংসদকক্ষে স্থাপিত এক বা একাধিক ব্যালট বাক্সে তা জমা দিতে হবে। প্রত্যেক সংসদ সদস্যের একটি মাত্র ভোট থাকবে। সংসদ সদস্য হিসেবে স্পিকারও এ নির্বাচনে ভোটার। ভোটের দিন গ্যালারিসহ সংসদকক্ষে প্রার্থী, ভোটার, ভোট নেয়ায় সহায়তাকারী কর্মকর্তা ছাড়া সবার প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণ করবেন নির্বাচনি কর্মকর্তা। ভোট শেষে নির্বাচন কমিশনার প্রকাশ্যে ভোট গণনা করবেন। সর্বাধিকসংখ্যক ভোটপ্রাপ্তকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করা হবে। আর সমান ভোট পেলে প্রার্থীদের মধ্যে লটারির মাধ্যমে ফল নির্ধারণ করা হবে।

যদিও ১৯৯১ সালে পরোক্ষ ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের বিধান চালু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত সাতবার রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র একবার রাষ্ট্রপতি পদে একাধিক প্রার্থী থাকায় সংসদে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৯১ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে তৎকালীন ক্ষমতাসীন বিএনপি আব্দুর রহমান বিশ্বাসকে রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়ন দেয়। আর ওই সময় বিরোধীদল ও বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ প্রার্থী করেছিল বিচারপতি বদরুল হায়দার চৌধুরীকে। ওই নির্বাচনে আব্দুর রহমান বিশ্বাস বিজয়ী হন। এছাড়া প্রতিবার একক প্রার্থী হিসেবে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছেন। নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পর কমিশন গেজেটে নোটিফিকেশনের মাধ্যমে একক প্রার্থীকে নির্বাচিত ঘোষণা করে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত