সাংবাদিকতার পথে অন্তরায় আইন পরিবর্তনে উদ্যোগ নেয়া দরকার

মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান

প্রকাশ : ২৫ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  সংবাদ বিজ্ঞপ্তি

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ও গণমাধ্যমের উদ্দেশ্য এক ও অভিন্ন। এই দুই প্রতিষ্ঠানের সেতুবন্ধন আরও সুদৃঢ় হওয়া দরকার। শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিক বা সেরিমনিয়াল প্রতিষ্ঠান নয়, যে কোনো প্রকারের দীর্ঘসূত্রিতা অতিক্রম করে কমিশন মানুষের অধিকার সুরক্ষা ও উন্নয়নে আরও জোরালো ভূমিকা রাখতে চায়। আমাদের বিশ্বাস, গণমাধ্যম ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশন একসঙ্গে কাজ করলে গণমানুষের আকাঙ্ক্ষা পূরণে আমরা শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে পারব।’

তিনি আরও বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ব্যাপারে কমিশন সচেতন। সরকারের পক্ষ থেকে এই আইন সংশোধন করার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে। আমরা এর জন্য অপেক্ষা করছি। প্রয়োজনে আমরা এ বিষয়ে কথা বলব।’

গতকাল ঢাকার এক স্থানীয় হোটেলে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আয়োজিত ‘মানবাধিকার ও সুরক্ষায় গণমানুষের প্রত্যাশা : গণমাধ্যম ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সমন্বিত প্রয়াস’ শীর্ষক এক সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনের মাধ্যমে এসব কথা বলেন ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ। সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমেদ, অর্থনীতিবিদ, কলামিস্ট ও চেয়ারম্যান, পিকেএসএফ; বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মিজ ফরিদা ইয়াসমিন, সভাপতি, জাতীয় প্রেসক্লাব; মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ, চেয়ারম্যান, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন; সভাপতিত্ব করেন মো. সেলিম রেজা, সার্বক্ষণিক সদস্য, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। উপস্থিত ছিলেন কমিশনের অবৈতনিক সদস্য ড. বিশ্বজিৎ চন্দ, আমিনুল ইসলাম, কংজরী চৌধুরী, ড. তানিয়া হক; কমিশনের সচিব নারায়ণ চন্দ্র সরকার এবং কর্মকর্তারা। বিশিষ্ট সাংবাদিকদের মধ্যে মতামত প্রদান করেন ইকবাল সোবহান চৌধুরী, সম্পাদক, দি ডেইলি অবজারভার; আবুল কালাম আজাদ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক, বাসস; ফরিদ, সম্পাদক, ইউএনবি; সোহরাব হোসেন, দৈনিক প্রথম আলো; মনজুরুল আহসান বুলবুল, সিনিয়র সাংবাদিক; মোজাম্মেল হোসেন, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, দৈনিক সমকাল; সুভাষ চন্দ্র সিংহ রায়, প্রধান সম্পাদক, এবি নিউজ ২৪ ডটকম; এসএম জাহিদ হাসান, প্রধান সম্পাদক, রাইজিংবিডিডটকমসহ আরও অনেকে। বক্তারা বর্তমান কমিশনকে সংবাদকর্মীদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় সোচ্চার থাকার আহ্বান জানান।

প্রধান অতিথি ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমেদ বলেন, ‘ব্যক্তি, পরিবার, প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়। বাংলাদেশে মূল্যবোধের অবক্ষয়, নিজেকে এগিয়ে নিতে চাই, এই দৌড়ে কাকে মারলাম, কাকে অবজ্ঞা করলাম তা দেখিনা। বর্তমানে সমাজে মাদকের ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে যা তরুণ সমাজকে হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে। এভাবেই মানবাধিকার লঙ্ঘন বেশি হয়। তৃণমূল পর্যায়ে নারী নির্যাতন বেড়ে গেছে। এই নির্যাতন বন্ধে কমিশন কাজ করতে পারে। প্রতিবন্ধীদের অধিকার সুরক্ষার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।’ তিনি কমিশনকে প্রত্যেকটা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সাথে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে কি না, তা পর্যবেক্ষণ করার এবং মানবাধিকার বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করার আহ৯Ÿান জানান।

বিশেষ অতিথি মিজ ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, ‘সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার তারিখ কেন ৯৫ বারেও দেয়া হলো না, এর ব্যাখ্যা প্রয়োজন। পাশাপাশি, কোনো সাংবাদিকও এটার কোনো অনুসন্ধানি প্রতিবেদন করতে পারেননি, যা দুর্ভাগ্যজনক।’ মানবাধিকার কমিশন সব চাপের ঊর্ধ্বে থেকে জনগণের প্রত্যাশা পূরণে কাজ করে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। পাশাপাশি, মানবাধিকার সুরক্ষায় কমিশনের গণমাধ্যম কমিশনের পাশে থাকবে বলে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন তিনি।

সভাপতি মো. সেলিম রেজা বলেন, ‘নাগরিকের মানবাধিকার লঙ্ঘনের খবর যেমন কমিশন গণমাধ্যম থেকে পেয়ে থাকে, তেমনি মানবাধিকার লঙ্ঘনে কমিশনের গৃহীত পদক্ষেপ গণমাধ্যম প্রকাশ করে সমাজে বার্তা প্রদান করে থাকে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত এ ধরনের অনেক ঘটনা কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে আমলে নিয়েছে এবং সরকারি কর্তৃপক্ষের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করেছে।’