পাঠ্যবইয়ের ভুল সংশোধন ও গাফিলতি

তদন্তে দুটি কমিটি গঠন

প্রকাশ : ২৫ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

নতুন শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য ছাপানো বিনামূল্যের পাঠ্যবইয়ের ভুলভ্রান্তি চিহ্নিত করা এবং পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নে জড়িত ব্যক্তিদের কারো কোনো গাফিলতি আছে কি না, তা তদন্তের জন্য দুটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আগামী রোববারের মধ্যে দুটি কমিটির বিস্তারিত তথ্য সবাইকে জানিয়ে দেয়া হবে। একটি কমিটি গঠন করা হবে শিক্ষা বিশেষজ্ঞ, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও ধর্মীয় বিশেষজ্ঞদের নিয়ে। তারা একটি লিঙ্ক দেবে। সেই লিঙ্কে যে কেউ চাইলে মতামত দিতে পারবেন। তার আলোকে পাঠ্যবইয়ে ভুল সংশোধন, সংযোজন, বিয়োজন, পরিমার্জন প্রয়োজন হলে তারা সেটি করবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাসহ অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে আরেকটি কমিটি গঠন করা হবে। তারা পাঠ্যবই রচনা ও সম্পাদনার বিষয়টি তদন্ত করে দেখবে। এতে কারো ইচ্ছাকৃত ত্রুটি, গাফিলতি বা অস্থিরতা সৃষ্টির কোনো উদ্দেশ্য ছিল কি না, তা তদন্ত করবে। কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ প্রমাণিত হলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এক বছরে নতুন কারিকুলামের এ পাঠ্যবই একেবারে সঠিক করে ফেলা দুরূহ কাজ। এ বছর আমরা বইগুলো পরীক্ষামূলক হিসেবে দিয়েছি। সারা বছর আমরা সবার কাছ থেকে মতামত নেব এবং সেখানে পরামর্শ অনুযায়ী পরিমার্জন পরিশীলনের সুযোগ থাকবে। বইগুলো প্রণয়নের সঙ্গে যারা যুক্ত ছিলেন বইয়ের কোথাও যেন তাদের ধর্ম, বর্ণ, শ্রেণি, পেশা, লিঙ্গ বিদ্বেষবৈষম্য না থাকে, সেজন্য সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, পাঠ্যবই নিয়ে বিভিন্ন মাধ্যম থেকে আমরা মতামত পাচ্ছি। গণমাধ্যম, রাজনীতির মাঠ, সামাজিক মাধ্যম সব জায়গা থেকেই আমরা বইয়ের ভুলগুলো নিয়ে আলোচনা শুনছি। বইগুলো নিয়ে মানুষের মাঝে যে আগ্রহ তৈরি হয়েছে, সেটিকে আমরা ইতিবাচক হিসেবেই দেখছি।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ কখনোই ধর্মবিরোধী বা বিদ্বেষী কিছু কখনো করেনি, করবেও না। আমাদের (আওয়ামী লীগের) ঘোষিত নীতি হচ্ছে- আমরা কোরআন-সুন্নাহবিরোধী কিছু করেনি, কিছু করবেও না। তাই পাঠ্য বইয়েও কোনো ধর্মের বিদ্বেষ বা আঘাতমূলক কিছু থাকবে না। কাজেই আপত্তিকর বা অস্বস্তিকর কিছু থাকলে বা যৌক্তিক অভিযোগ অবশ্যই সংশোধন করা হবে। কারো ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার কোনো অধিকার বা ইচ্ছা আমাদের নেই। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, হয়তো সর্ষের মধ্যেও কোথাও ভূত থাকতে পারে। এনসিটিবির ভেতরেও যদি কেউ থেকে থাকে যে কেউ ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃতভাবে এই ভুলগুলো করেছে। বই ছাপানোর বিষয়টি এত গুরুত্বপূর্ণ যে, এখানে ভুল করার বিষয়টি কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। কোথাও কারো গাফিলতি বা ইচ্ছাকৃতভাবে নেতিবাচক কোনো দিকে নেওয়ার অভিপ্রায় থেকে থাকলে, তা খুঁজে বের করতেই আমরা একটি কমিটি করে দিচ্ছি।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতি মন্ত্রী মো. জাকির হোসেন, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এবং উভয় মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।