দুর্যোগ মোকাবিলা ও প্রস্তুতি সমন্বয়

বাংলাদেশ সরকার ও মানবিক সহায়তা সংস্থা কাজ করছে

প্রকাশ : ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  সংবাদ বিজ্ঞপ্তি

মানবিক সহায়তা সমন্বয় টাস্ক টিমের ২০২৩ সালের প্রথম সভায় সরকার পরিচালিত জরুরি মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রে দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার বিষয়ে সহযোগিতা জোরদার করার উপর আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের (এমওডিএমআর) সচিব মো. কামরুল হাসান এবং বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস যৌথভাবে সভাপতিত্ব করেন। বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা, জাতিসংঘ সংস্থার ফোকাল পয়েন্টস, বেসরকারি সংস্থাসমূহ (এনজিওস), আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহ, রেডক্রস মুভমেন্ট ও রেড ক্রিসেন্ট এবং কূটনৈতিক মিশনের প্রতিনিধিগণ গতকাল বুধবার অনুষ্ঠিত মানবিক সহায়তা সমন্বয় টাস্ক টিমের সভায় যোগদান করেন।

সভায় অংশগ্রহণকারীদের স্বাগত জানিয়ে বাংলাদেশে জাতিসংঘ আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস দুর্যোগ মোকাবিলার যৌথ প্রয়াস জোরদার করার উপর গুরুত্বারোপ করেন, যাতে কোনো বন্যা অথবা ঘূর্ণিঝড় বাংলাদেশে আঘাত হানলে ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন সম্ভাব্য সর্বোত্তম এবং দ্রুততম সময়ে সহায়তা পেতে পারে। ‘জলবায়ু সংক্রান্ত বিভিন্ন দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকার খুব গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রায়শই জীবন রক্ষাকারী ভূমিকা পালন করছে। বিভিন্ন দুর্যোগের ক্ষতি মোকাবিলায় অনতিবিলম্বে পদক্ষেপ গ্রহণ ও ক্ষতির পরিমাণ হ্রাস করার লক্ষ্যে সরকারকে আরো ভালোভাবে সহায়তা করার একটি উপায় হলো জলবায়ু সংক্রান্ত বিভিন্ন ঝুঁকি সম্পর্কে আগাম ধারণা করা। আমাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো দুর্যোগ কবলিত জনগোষ্ঠীকে সহায়তা করা, যাতে তারা যত দ্রুত সম্ভব ক্ষতি কাটিয়ে উঠার পাশাপাশি স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারে’, যৌথভাবে সভার আয়োজন করার জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন জাতিসংঘ আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস।

দুর্যোগ মোকাবিলা সংক্রান্ত জাতীয় পরিকল্পনা ও দুর্যোগ বিষয়ক স্ট্যান্ডিং অর্ডার (এস ও ডি) বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টার জন্য সচিব জাতিসংঘ আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইসকে ধন্যবাদ জানান এবং বলেন যে সবার জন্য বহুমাত্রিক ঝুঁকি মোকাবিলায় আগাম সর্তকতা, আগাম ধারণা নির্ভর কার্যক্রম, অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতি মোকাবিলার ব্যবস্থা এবং পরিবেশগত সুরক্ষা বিবেচনায় এইচসিটিটি ও গুচ্ছ সহযোগিতায় পরিবর্তন আনা দরকার। ‘বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম সর্বাধিক দুর্যোগপ্রবণ দেশ। উপরন্তু, সাম্প্রতিক সময়ে দ্রুত নগরায়নের ফলে ভূমিকম্পের ঝুঁকির পাশাপাশি মানবসৃষ্ট সংকট বৃদ্ধি পেয়েছে। চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ডে সম্প্রতি সংঘটিত অগ্নি দুর্ঘটনা অথবা সুনামগঞ্জের দীর্ঘস্থায়ী বন্যা আমাদেরকে দক্ষতার সাথে সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনার আবশ্যকতা মনে করিয়ে দেয়’, সমন্বয় কাজের কেন্দ্রভাগে সুরক্ষা ও জেন্ডার বিবেচনায় রাখার বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন। সার্বিক বিচারে, ২০২২ সালের জুন মাসে সংঘটিত বন্যা পরবর্তী মানবিক কার্যক্রম সমন্বয় টাস্ক টিম ও এর বিভিন্ন অংশীদার সরকার কর্তৃক প্রণীত আকস্মিক বন্যা মোকাবিলা পরিকল্পনায় উল্লেখিত সর্বাধিক জরুরি চাহিদাসমূহ পূরণের জন্য প্রায় ২০ মিলিয়ন ইউএস ডলার সংগ্রহ করে।

২০২২ সালে এই মানবিক কার্যক্রম সমন্বয় ব্যবস্থার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য হল বাংলাদেশের ‘ইনফর্ম’ সাব ন্যাশনাল রিস্ক ইনডেক্স তৈরি : এটি স্থানীয় পর্যায়ে ঝুঁকি নিরূপণের জন্য একটি উন্মুক্ত উৎস, যা ঝুঁকিগ্রস্ত জনগোষ্ঠী চিহ্নিতকরণের কাজে ব্যবহার করা হয়। সভায় অংশগ্রহণকারীগণ জলবায়ু সম্পর্কিত বিভিন্ন দুর্যোগ মোকাবিলায় সহযোগিতা বৃদ্ধির পাশাপাশি মানবিক সহায়তা প্রস্তুতি ও কার্যক্রম জোরদার করার বিভিন্ন পন্থা নিয়ে আলোচনা করেন। কার্যকর পরিকল্পনা, মনিটরিং ও সম্পদ ব্যবহারের মাধ্যমে দুর্যোগ ঝুঁকি বিষয়ক তথ্য ব্যবস্থা উন্নত করার পাশাপাশি মানবিক সহায়তা কার্যক্রম সমন্বয় করার বিষয়ে এইচসিটিটি সদস্যগণ ঐক্যমত পোষণ করেন।