জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে কুতুবদিয়া

প্রকাশ : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  এএইচ সেলিম উল্লাহ, (কক্সবাজার) কুতুবদিয়া

চলতি মাসেই জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে কুতুবদিয়া উপজেলা। ইতিমধ্যে মূল ভূখ- পেকুয়ার মগনামা ঘাট থেকে কুতুবদিয়া বড়ঘোপ ল্যান্ডিং বিদ্যুৎ এর সাব স্টেশনে ডাবল সার্কিট সাবমেরিন লাইন নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। বিচ্ছিন্ন এই দ্বীপের মানুষ বিদ্যুৎ সেবার আওতায় আসার খবরে খুশি। সরেজমিনে দেখা যায়, মগনামা ঘাট থেকে কুতুবদিয়া ৫ কিলোমিটার ডাবল সার্কিট সাবমেরিন লাইন নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। এখন শুধু বাকি জাতীয় গ্রিডের সাথে সংযুক্ত করলেই পুরো দ্বীপ আলোকিত হবে বিদ্যুতে। এছাড়া রয়েছে কুতুবদিয়ায় দুই কিলোমিটার ওভার হেডলাইন ও বিতরণ লাইনের কাজ এখনো বাকি আছে। এ কাজের প্রায় ৯০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। মহেশখালীর মাতারবাড়ি থেকে মগনামা ঘাট পর্যন্ত ৩৩ কেভি রিভার ক্রসিংসহ লাইন নির্মাণ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, কক্সবাজারের কুতুবদিয়ার প্রায় ২১৫ বর্গকিলোমিটার এলাকায় বর্তমানে প্রায় ২ লাখ মানুষ বসবাস করেন। এখানে ১৯৮০ সালে জেনারেটরের মাধ্যমে প্রায় ৬০০ গ্রাহকের মধ্যে সান্ধ্যকালীন কয়েক ঘণ্টার জন্য বিদ্যুৎ ব্যবস্থা চালু করা হয়।

১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ে বিদ্যুতের খুঁটি নষ্ট হওয়ায় সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। এরপর বিভিন্ন সময় স্বল্প আকারে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। ২০০৫ সালে দেড় কিলোমিটার লাইন মেরামত করে দুটি জেনারেটরের মাধ্যমে উপজেলা সদর ও কিছু এলাকায় সন্ধ্যার পর কয়েক ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে পিডিবি। এছাড়া ২০০৮ সালে কুতুবদিয়ায় ১ মেগাওয়াট সক্ষমতার বায়ু বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হলেও তেমন কাজে আসেনি। এটিও বন্ধ রয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা সাংবাদিক হুমায়ুন সিকদার জানিয়েছেন, সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপনের মাধ্যমে কুতুবদিয়ায় বিদ্যুতের জাতীয় গ্রীড লাইন থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হলে কুতুবদিয়াবাসীর দীর্ঘদিনের একটি প্রাণের দাবি পূরণ হওয়ার পথে। কুতুবদিয়ায় গড়ে উঠবে নানা ধরণের শিল্প কারখানা ব্যাপক উন্নয়নের আওতায় আসবে এই সাগরদ্বীপ।

প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মো. ফারুক আহমেদ জানিয়েছেন, ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে কুতুবদিয়ার মানুষ বিদ্যুৎ পাবেন। হাতিয়ায় একটি সাব স্টেশন চালু হয়েছে। বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রটিও প্রস্তুত রয়েছে। কিন্তু শীতকাল হওয়ায় গ্রাহক লোড তৈরি হচ্ছে না বলে পুরোপুরি চালু করা যাচ্ছে না। আশা করছি, মার্চের শেষের দিকে আইপিপি চালু করা যাবে।

উল্লেখ্য, প্রকল্পের সংশ্লিষ্টদের তথ্যমতে, দেশব্যাপী শতভাগ মানুষকে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনতে কুতুবদিয়ার জনসাধারণকে অন্ধকার থেকে আলোকিত করার লক্ষ্যে ২০১৯ সালে ৮০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার।

এছাড়া ২০২০ সালে ৪০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘কুতুবদিয়া দ্বীপ, হাতিয়া দ্বীপ ও নিঝুম দ্বীপ শতভাগ নির্ভরযোগ্য এবং টেকসই বিদ্যুতায়ন’ প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। প্রকল্পটির আওতায় তিনটি দ্বীপে মোট ৭২০ কিলোমিটার সঞ্চালন ও বিতরণ লাইন স্থাপন করা হচ্ছে ।