স্কুলছাত্রী জেসিকা হত্যা মামলা

প্রধান আসামি বিজয় গ্রেপ্তার

প্রকাশ : ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

মুন্সীগঞ্জের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী জেসিকা মাহমুদ জেসি হত্যা মামলার প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। রাজধানীর ওয়ারী থেকে শনিবার রাতে বিজয় রহমান নামে ২২ বছর বয়সি এক তরুণকে জেসিকা হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয় বলে গতকাল রোববার র্যাব সদর দপ্তর থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

এতে বলা হয়, গত ৩ জানুয়ারি মুন্সীগঞ্জের কোর্টগাঁও এলাকায় বন্ধুর বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে জেসিকার ‘রহস্যজনক’ মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই হত্যা মামলা করলে তদন্তে নামে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

গ্রেপ্তারকৃত বিজয় জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, ২০১৯ সালে একই স্কুলে পড়–য়া আদিবা আক্তার নামে এক মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ায়। এদিকে সম্পর্ক চলাকালে ২০২২ সালের জানুয়ারিতে জেসিকার সঙ্গেও তার প্রেমের সম্পর্ক হয়। দুজনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক বজায় রেখেই ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে আদিবাকে গোপনে বিয়ে করে বিজয়। জেসিকা বিয়ের বিষয়টি জেনে গেলে বিজয়ের সঙ্গে তার বিভিন্ন কথোপকথনের স্ক্রিনশর্ট আদিবার মেসেঞ্জারে পাঠায়। এ নিয়ে বিজয় ও আদিবার মধ্যে বিভিন্ন সময় কথা কাটাকাটি ও ঝগড়া-বিবাদ হলে দুজনের সম্পর্কের অবনতি শুরু হয়। বিজয় আরও জানায়, ২০২২ সালের ডিসেম্বরে জেসিকাকে ‘উচিৎ শিক্ষা’ দিতে আদিবার সঙ্গে আলোচনা করে সে। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ৩ জানুয়ারি বিকালে আদিবা জেসিকার সঙ্গে দেখা করে। জেসিকা তখন বিজয়ের সঙ্গে তার বিভিন্ন সময়ের কথোপকথোনের স্ক্রিনশর্ট দেখায়। বিষয়টি মীমাংসার কথা বলে আদিবা তখন জেসিকাকে বিজয়দের বাসার ছাদে নিয়ে যায়। পরে আদিবা ফোন করে বিজয়কে ছাদে আসতে বলে। সেখানে তাদের মধ্যে বাগবিত-া ও হাতাহাতির একপর্যায়ে বিজয় ও আদিবা জেসিকার গলাটিপে ধরলে জেসিকা অজ্ঞান হয়ে পড়ে। নিজেদের নির্দোষ প্রমাণ করতে তখন তারা জেসিকার ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ার নাটক সাজায়। অজ্ঞান অবস্থায় জেসিকাকে ছাদ থেকে নামিয়ে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে বাসার ভেতরে চলে যায়। পরে পাশের বাসায় থাকা বিজয়ের চাচা জেসিকাকে রাস্তার পাশে পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার শুরু করেন; এ সময় বিজয় ও তার পরিবারের সদস্যরা বাসা থেকে নিচে নেমে আসে। একপর্যায়ে বিজয় ও তার বাবাসহ স্থানীয়রা জেসিকাকে মুন্সীগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে বিজয়ই ফোন করে জেসিকার ভাইকে হাসপাতালে যেতে বলে। জেসিকার ভাই হাসপাতালে পৌঁছলে চিকিৎসক জেসিকে মৃত ঘোষণা করেন।

জেসিকার মৃত্যুর কথা শুনে বিজয় ও আদিবা সেখান থেকে পালিয়ে যায়। ময়নাতদন্তে জেসিকাকে শ্বাসরোধে হত্যার বিষয়টি ওঠে আসে। তখন জেসিকার ভাই মুন্সীগঞ্জ থানায় বিজয় ও আদিবার নামে উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় গত ৪ জানুয়ারি আদিবাকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়। পরে গ্রেপ্তার করা হয় বিজয়কে। মুন্সীগঞ্জের একটি কলেজ থেকে ২০২২ সালে এইচএসসি পরীক্ষা দেয় বিজয়। হত্যাকাণ্ডের পর মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান এলাকায় এক বন্ধুর বাড়িতে চারদিন আত্মগোপনে থাকে সে। পরে ফরিদপুরের একটি মাজারে আরও ২২ দিন সে আত্মগোপনে থাকে বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে। ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকার ওয়ারীতে এসে আরেক বন্ধুর বাসায় আত্মগোপনের চেষ্টা করলে সেখান থেকে র্যাব তাকে গ্রেপ্তার করে।