ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

চেতনায় একুশ

বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার আন্দোলন বেগবান হয়ে ওঠে

বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার আন্দোলন বেগবান হয়ে ওঠে

১৯৪৮ সালের ২৮ মার্চ মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঢাকা ত্যাগ করেন এবং সেদিন সন্ধ্যায় রেডিওতে দেয়া বক্তব্যে তার অবস্থানের কথা পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করতে হবে।

৬ এপ্রিল রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের নেতৃত্বে বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার আন্দোলন আরও বেগবান হয়ে ওঠে। উপায়ান্তর না দেখে খাজা নাজিমুদ্দিন ইস্ট বেঙ্গল লেজিসলেটিভ অ্যাসেম্বলিতে (ইবিএলএ) বাংলাকে পূর্ব পাকিস্তানের সরকারি ভাষা এবং ডাকটিকিট, ট্রেন টিকিট, স্কুলসহ সর্বত্র উর্দুর পাশাপাশি বাংলা ব্যবহারের কথা উল্লেখ করে একটি প্রস্তাব আনেন। যদিও এ প্রস্তাবের মূল উদ্দেশ্য ছিল বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা করার আন্দোলনকে বিভ্রান্ত করা। তথাপি এ প্রস্তাবের ব্যাপারে তৎকালীন নেতারা ইতিবাচক মনোভাব দেখান। ভাষা আন্দোলনের অন্যতম প্রাণপুরুষ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত এ প্রস্তাবে কিছু সংশোধনী প্রস্তাব করে বাংলাকে ‘ওয়ান অব দ্য স্টেট ল্যাঙ্গুয়েজ অব পাকিস্তান’ করার জন্য একটি সংশোধনী প্রস্তাব করেন। কিন্তু ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের সংশোধনী প্রস্তাব বাতিল করে খাজা নাজিমুুদ্দিনের মূল প্রস্তাবটি ইবিএলএতে গৃহীত হয়।

১৯৪৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর মৃত্যুর পর খাজা নাজিমুদ্দিন পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল হিসেবে নিযুক্ত হন। এর পরপরই রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ এবং বাঙালি সংসদ সদস্যরা ইবিএলএতে গৃহীত প্রস্তাবের পূর্ণ বাস্তবায়ন এবং বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার জন্য নাজিমুদ্দিনের কাছে দাবি জানান। নাজিমুদ্দিন পূর্ব পাকিস্তানের অধিবাসী হওয়া সত্ত্বেও তিনি আবার তার অঙ্গীকার ভঙ্গ করেন এবং ক্ষমতার স্বার্থে রাষ্ট্রভাষার ক্ষেত্রে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর পদাঙ্ক অনুসরণ করেন।

১৯৪৮ সালের ২৭ নভেম্বর পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খানের সফরকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন ফের দানা বাঁধে। লিয়াকত আলীর আগমন উপলক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমনেশিয়াম মাঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের একটি সমাবেশ আয়োজন করা হয়। সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের অন্যান্য দাবি-দাওয়ার পাশাপাশি বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা করা এবং ইবিএলএতে গৃহীত প্রস্তাবের পূর্ণ বাস্তবায়ন দাবিতে একটি দাবিনামা প্রস্তত করা হয়। দাবিনামাটি তৈরি করেন আবদুর রহমান চৌধুরী। দাবিনামাটি পাঠ করার দায়িত্ব ডাকসুর তৎকালীন ভাইস প্রেসিডেন্টের ওপর ন্যস্ত হলেও স্টুডেন্টস অ্যাকশন কমিটির নেতারা দাবিনামাটি পাঠের দায়িত্ব দেন তৎকালীন জিএস গোলাম আজমকে। দাবিনামা প্রস্তুতের সঙ্গে জড়িত ছিলেন কাজী গোলাম মাহবুবসহ স্টুডেন্টস অ্যাকশন কমিটির নেতারা।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত