ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র ১৭ সদস্য ও তিন বিচ্ছিন্নতাবাদী গ্রেপ্তার

‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র ১৭ সদস্য ও তিন বিচ্ছিন্নতাবাদী গ্রেপ্তার

জঙ্গিবিরোধী জনমত গড়তে প্রতিষ্ঠাতাকালীন থেকেই র‍্যাব কার্যকরী ভূমিকা পালন করে আসছে। গত বছরের ৩ অক্টোবর থেকে নজরদারি বৃদ্ধি করে র‍্যাব। যার পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ২০ অক্টোবরে রাঙ্গামাটির বিলাইছড়ি ও বান্দরবানের রোয়াংছড়ি থেকে নতুন এই জঙ্গি সংগঠনের ৭ জন এবং পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ৩ জনসহ মোট ১০ জনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় র‍্যাব। গ্রেপ্তারকৃতদের নিকট হতে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে আমরা বিভিন্ন সময়ে রাঙ্গামাটি ও বান্দরবানের বিভিন্ন পাহাড়ী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। গত ১১ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখে পাহাড়ে প্রশিক্ষণরত ৫ সদস্যকে বান্দরবানের থানচি ও রোয়াংছড়ি থেকে গ্রেফতার করে র‍্যাব। পরবর্তীতে তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে গত ১৫ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখ জঙ্গি সংগঠনের এক সদস্যের কবরের সন্ধানে র‍্যাবের একটি দল বান্দরবানের লোয়াংমল পাড়ায় যায়; কিন্তু নির্ধারিত স্থানে কবরের অবস্থান পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে গত ২৩ জানুয়ারি কক্সবাজারের কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি এলাকার ইয়াহিয়া গার্ডেনের গহীন বনাঞ্চলে অভিযান পরিচালনা করে উক্ত সংগঠনের শূরা সদস্য ও সামরিক শাখার প্রধান রনবীর ও বোমা বিশেষজ্ঞ বাশারকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। গ্রেপ্তারকৃতদের নিকট থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে পাহাড়ী অঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকায় নজরদারী পরিচালনা অব্যাহত রাখা হয়। বিভিন্ন সময়ে র‍্যাবের পরিচালিত অভিযানে ইতোমধ্যে নতুন এই জঙ্গি সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাসহ সর্বমোট ৩৮ জন এবং পাহাড়ে অবস্থান, প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য কার্যক্রমে জঙ্গিদের সহায়তার জন্য পাহাড়ী বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ‘ কেএনএফ’ এর ১৪ জন নেতা ও সদস্যকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‍্যাব জানতে পারে যে, নব্য এই জঙ্গি সংগঠনের বেশকয়েকজন সদস্য বান্দরবানের থানচির লোয়াংমুয়াল পাড়া হয়ে রেমাক্রি ব্রিজ সংলগ্ন এলাকার দিকে অগ্রসর হ”েছ। এই তথ্যের ভিত্তিতে অদ্য ভোর হতে র‍্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‍্যাব-৭ এর যৌথ অভিযানে রেমাক্রি ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মোঃ আস সামী রহমান ওরফে সাদ, মোঃ সোহেল মোল্লা ওরফে সাইফুল্লাহ, মোঃ আল আমিন ফকির ওরফে মোস্তাক, মো. জহিরুল ইসলাম ওরফে ওমর ফারুক ওরফে সাংওয়াই , পিতাঃ আব্দুল লতিফ, মোঃ মিরাজ শিকদারন ওরফে আশরাফ হোসেন @ দোলন, রিয়াজ শেখ ওরফে জায়েদ, মোঃ ওবায়দুল্লাহ ওবায়দুল ওরফে সাকিব ওরফে ওরফে শান্ত , জুয়েল মাহমুদ ওরফে মাহমুদ , মোঃ ইলিয়াস রহমান, মোঃ হাবিবুর রহমান, মোঃ সাখাওয়াত হোসেইন, মোঃ আব্দুস সালাম রাকি, যোবায়ের আহম্মেদ, মোঃ শামীম হোসেন, তাওয়াবুর রহমান সোহান, মোহাম্মদ মাহমুদ ডাকুয়া, মোহাম্মদ আবু হুরাইরা, মালসম পাংকুয়া গ্রেপ্তার করা হয়। উদ্ধার করা হয় বিপুল পরিমাণ দেশি ও বিদেশি অস্ত্র, গোলাবারুদ ও বোমা তৈরির সরঞ্জামাদি, উগ্রবাদী বই, কন্টেন্ট, লিফলেট, অস্ত্র ক্রয়ের উদ্দেশ্যে রক্ষিত নগদ ০৭ লক্ষ টাকা ও গ্রেফতারকৃতদের ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জামাদি। গ্রেপ্তারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, গত ২০ অক্টোবর ২০২২ মাসে রাঙ্গামাটির বিলাইছড়ির সাইজামপাড়া ও বান্দরবানের রোয়াংছড়ি এলাকায় অভিযানে পাহাড়ি বিচ্ছিছন্নতাবাদী সংগঠন এর ০৩ জনসহ মোট ১০ জনকে গ্রেফতারের পর উক্ত সংগঠনের বাকি সদস্যরা রামজুদান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে থাকে। পরবর্তীতে র‍্যাবের অভিযানে জঙ্গিরা স্থান পরিবর্তন করতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় গত রাতে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে র‍্যাব জানতে পারে যে, একটি দল বান্দরবানের থানচির লোয়াংমুয়াল পাড়া হয়ে রেমাক্রি ব্রিজ সংলগ্ন এলাকার দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এ তথ্যের ভিত্তিতে র‍্যাব রেমাক্রি ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। র‍্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে জঙ্গি ও পাহাড়ী সন্ত্রাসীরা র‍্যাবের উপর গুলিবর্ষণ করে। একপর্যায়ে তাদের সাথে র‍্যাবের গুলিবিনিময়ের ঘটনা ঘটে। গতকাল ভোর হতে পরিচালিত র‍্যাবের অভিযানে ১৭ জন এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত