জিএম কাদেরের দায়িত্ব পালন

হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন

প্রকাশ : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের (জিএম কাদের) দায়িত্ব পালনের ওপর নিম্ন আদালতের দেয়া নিষেধাজ্ঞাদেশ স্থগিত করা হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে চেম্বার জজ আদালতে আবেদন জানানো হয়েছে।

গতকাল আইনজীবী হেলাল উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি আবেদনটির ওপর শুনানি হতে পারে। এর আগে, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে জিএম কাদেরের দায়িত্ব পালনের ওপর নিম্ন আদালতের দেয়া নিষেধাজ্ঞাদেশ স্থগিত করেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে এ বিষয়ে রুল জারি করেছেন আদালত। মামলার বিবাদীদের আট সপ্তাহের মধ্যে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়।

নিম্ন আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে করা রিভিশন আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে গত ৫ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি আব্দুল হাফিজের নেতৃত্বাধীন একক হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

২০২২ সালের ৪ অক্টোবর জাতীয় পার্টির বহিষ্কৃত নেতা এবং দলটির সাবেক এমপি জিয়াউল হক মৃধা চেয়ারম্যান হিসেবে গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের দায়িত্ব পালনে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে মামলা করেন। বাদীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৩১ অক্টোবর ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালত জিএম কাদেরের দলীয় যাবতীয় কার্যক্রমের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন।

পরে জিএম কাদেরের ওপর গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দলের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনে নিষেধাজ্ঞার আদেশ প্রত্যাহার চেয়ে আবেদন করা হয়। এরপর একই বছরের ২৪ নভেম্বর ওই আবেদনের ওপর শুনানির জন্য জেলা জজ আদালতে মিস আপিল দায়ের করা হয়। কিন্তু সে আবেদন নামঞ্জুর করেন জেলা জজ আদালত। পরে ওই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করেন জিএম কাদের। আবেদনটির শুনানি নিয়ে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে জিএম কাদেরের দায়িত্ব পালনের ওপর নিষেধাজ্ঞাদেশ স্থগিত করেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি এ বিষয়ে রুলও জারি করেন আদালত। গত ২৯ নভেম্বর বিচারপতি শেখ আবদুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন একক হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

এরপর ওই আদেশ স্থগিত চেয়ে চেম্বার জজ আদালতে আবেদন জানানো হয়। সে আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ৩০ নভেম্বর গঠনতন্ত্র অনুযায়ী জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে জিএম কাদেরের দায়িত্ব পালনে নিষেধাজ্ঞার ওপর হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ স্থগিত করেন চেম্বার জজ আদালত। একই সঙ্গে আবেদনটি আপিল বিভাগে শুনানির জন্য পাঠানো হয়। যার ধারাবাহিকতায় আবেদনটির শুনানি নিয়ে জিএম কাদের দলটির দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না বলে আদেশ দেন আপিল বিভাগ। পাশাপাশি এ বিষয়ে নিম্ন আদালতে চলমান মামলাটি চলতি বছরের ৯ জানুয়ারির মধ্যে নিষ্পত্তিরও নির্দেশ দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ।

এরপর দায়িত্ব পালনের ওপর নিষেধাজ্ঞাদেশ বাতিল চেয়ে জিএম কাদেরের আপিল গত ১৯ জানুয়ারি নামঞ্জুর করেন ঢাকার জেলা জজ আদালত। পরে ওই আদেশের বিরুদ্ধে জিএম কাদের হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন জানান।

প্রসঙ্গত, দলটির সাবেক এমপি জিয়াউল হক মৃধার দায়ের করা মামলায় অভিযোগ করা হয়, গত ১৭ সেপ্টেম্বর অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধাকেও জাতীয় পার্টি থেকে বহিষ্কার করেন, যা সম্পূর্ণ অবৈধ। তাই ২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বরের কাউন্সিলসহ চলতি বছর ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বহিষ্কার আদেশ অবৈধ ঘোষণা করতে এবং হাইকোর্ট বিভাগের রিট নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জাতীয় পার্টির পরবর্তী কাউন্সিল স্থগিত রাখতে মামলায় আদেশ চাওয়া হয়। গত ৬ অক্টোবর জাতীয় পার্টির পক্ষে শেখ সিরাজুল ইসলাম, কলিম উল্যাহ মজুমদারসহ বেশ কয়েকজন আইনজীবী এই আবেদন করেন। আবেদনে জিএম কাদেরের ওপর গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দলের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনে নিষেধাজ্ঞার আদেশ প্রত্যাহার চাওয়া হয়। মামলার বিবরণীতে বলা হয়, জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ ২০১৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। এরপর বিবাদি জিএম কাদের হাইকোর্ট বিভাগের একটি রিট মামলা বিচারাধীন থাকার পরও জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ওই বছর ২৮ ডিসেম্বর কাউন্সিল করে নিজেকে চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা করেন।