ডিএমপির ৪৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ

প্রকাশ : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ৪৮তম প্রতিষ্ঠা দিবস আজ। এ উপলক্ষ্যে আজ র‍্যালি, আলোচনা অনুষ্ঠান এবং নাগরিক সংবর্ধনার আয়োজন করেছে ডিএমপি। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব আমিনুল ইসলাম খান, পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন।

বিকাল ৩টায় প্রতিষ্ঠা দিবসের উদ্বোধন ও র‍্যালি ডিএমপি হেডকোয়ার্টার্স থেকে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে গিয়ে শেষ হবে। রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স অডিটরিয়ামে প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষ্যে কেক কাটা হবে। আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বিশেষ অতিথি ও কমিশনার বক্তব্য দেবেন।

ডিএমপি প্রতিষ্ঠার ৪৮ বছর পেরিয়ে ঊনপঞ্চাশে এসে দাঁড়িয়েছে। ডিএমপিতে বর্তমানে ৩২ হাজার পুলিশ ৫০টি থানার মাধ্যমে ২ কোটি নগরবাসীকে নিরাপত্তা দিচ্ছে। অপরাধ তদন্ত ও রহস্য উন্মোচনে সাফল্যসহ বিভিন্ন মানবিক সহায়তায় অংশ নিয়ে প্রশংসিত হচ্ছে বাহিনীটি। সেই সাথে কারো কারো অপেশাদার আচরণের কারণে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে পুলিশে। অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জনবান্ধব পুলিশ গড়তে জনগণকে সম্পৃক্ত করতে হবে। ডিএমপি এলাকায় কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রম সেভাবে নেই। এছাড়া ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের পরিষেবা এবং সেন্টারের সংখ্যা বাড়ানো প্রয়োজন। তদন্তের ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার ছাড়াও অপরাধীর মনস্তাত্ত্বিক বিষয়েও গুরুত্ব দেয়া দরকার। সেই সঙ্গে থানায় সেবা নিতে আসা জনসাধারণের সঙ্গে ভালো আচরণ এবং তাদের সর্বাত্মক সহায়তার মন-মানসিকতা গড়ে তোলার জন্য আচরণগত বিষয়ের ওপর পুলিশ সদস্যদের প্রশিক্ষণে জোর দেন তারা। এছাড়াও রাজনৈতিকভাবে পুলিশকে ব্যবহারের বিষয়টিও কমিয়ে আনতে কাজ করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তারা। ডিএমপি সূত্র বলছে, বারোটি থানা এবং ছয় হাজার পুলিশ নিয়ে ১৯৭৬ সালে যাত্রা শুরু করে ডিএমপি। ৪৯ বছরে এসে বাহিনীর সদস্য যেমন বেড়েছে তেমনি দক্ষ-প্রশিক্ষিত সদস্য সংখ্যাও বেড়েছে। শুধু থানা পুলিশ নয়, ডিএমপি এলাকার নগরবাসীর নিরাপত্তার কাজ করে যাচ্ছে গোয়েন্দা বিভাগ, ট্রাফিক বিভাগ, কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট। সবাই বলিষ্ঠভাবে কাজ করে যাচ্ছে জনগণের নিরাপত্তায়। অনলাইন জিডি চালু থাকায় যে কেউ অনলাইনে জিডি করতে পারছেন। তবে আইন সংশোধন না হলে অনলাইনে মামলা নেয়া সম্ভব নয়। পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের সার্টিফিকেট অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করলে দেয়া হচ্ছে। হ্যালো অ্যাপ নামে একটি অ্যাপ চালু রয়েছে, যেখানে যে কেউ নিজের পরিচয় গোপন রেখে জঙ্গি কিংবা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি, মাদক ব্যবসায়ীসহ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বিষয় জানাতে পারছেন। তাছাড়া ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিয়েও পুলিশি সেবা পাওয়া যাচ্ছে। কর্মকর্তারা বলেন, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ কিংবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় যে ধরনের সক্ষমতা রয়েছে সেই সক্ষমতা নিয়েই জনগণের নিরাপত্তায় কাজ করে যাচ্ছে ডিএমপির কর্মরত সদস্যরা। মানবিক পুলিশিংয়ের ক্ষেত্রেও ডিএমপির প্রতিটি সদস্য কাজ করে যাচ্ছে। বিশেষ করে করোনাকালীন যখন মানুষ কর্মহীন ছিল বাসায় খাবার ছিল না, পুলিশ সদস্যরা মাঠে থেকে ডিউটি করেছে। লকডাউন কার্যকর করেছে এবং অনেকের বাসায় খাবার পৌঁছে দিয়েছে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে ১০৬ জন ডিএমপি সদস্য দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে মারা গেছেন। প্রায় ৮০০০ সদস্য আক্রান্ত হয়েছিল। সেই সময়ও জনগণের সেবা থেকে পিছিয়ে যায়নি ডিএমপির দায়িত্বরত সদস্যরা। ডিএমপি আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বলিষ্ঠভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এই আইনশৃঙ্খলা স্থিতিশীল থাকার কারণে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। অপরাধ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রেও মোটামুটি সফল। এ ব্যাপারে দক্ষতা এবং সফলতা রয়েছে।

ডিএমপির কর্মকর্তারা বলছেন, আগে মামলা তদন্তের ক্ষেত্রে আসামি গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদের পরিপ্রেক্ষিতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দির মাধ্যমে স্বীকারোক্তি আদায়ের চেষ্টা করা হতো। বর্তমানে ডিজিটালাইজেশনের কারণে প্রযুক্তিগত প্রসারের ধারাবাহিকতায় প্রযুক্তির সুবিধা নিয়ে তদন্তকারীরা বিভিন্ন অপরাধজনিত ঘটনার রহস্য উন্মোচন করছে। প্রযুক্তির সহায়তায় কনক্লুসিভ এভিডেন্সের মাধ্যমে অপরাধীকে আদালতে হাজির করা হয়ে থাকে। আবার অপরাধীরা বিভিন্ন অপরাধের ধরন পাল্টাচ্ছে। অনেক অপরাধী আবার সাইবার অপরাধেও জড়িয়ে যাচ্ছে। সে বিষয়েও ডিএমপির সক্ষমতা রয়েছে এবং পেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়ে কর্মকর্তারা কাজ করে যাচ্ছেন।