ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

৪০ হাজার ইভিএম নিয়ে বিপাকে ইসি

৪০ হাজার ইভিএম নিয়ে বিপাকে ইসি

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ৪০ হাজার ত্রুটিপূর্ণ ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) নিয়ে বিপাকে পড়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ ইভিএমগুলো সেরে তুলতে না পারলে আগামী দ¦াদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বেশিরভাগ আসনে এ যন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না। তখন নামমাত্র কয়েকটি আসনে ইভিএম ব্যবহার করতে হবে।

সূত্র জানায়, সংসদ নির্বানের আগে নতুন ইভিএম প্রকল্প পাস করেনি সরকার। ফলে সংসদ নির্বাচনে ব্যাপক পরিসরে ইভিএম ব্যবহার করা সম্ভব হবে না। এখন ইসির হতে যেসব ইভিএম আছে সেগুলো দিয়ে ভোট করতে হবে। ত্রুটিপূণ ইভিএম না সারালে ভোটে বেশি আসনে ইসিকে ব্যালটের উপর বেশি আস্থা রাখতে হবে।

ইভিএম প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) কর্নেল সৈয়দ রাকিবুল হাসান বলেছেন, ইসির কাছে সংরক্ষিত ৪০ হাজার ইভিএম ত্রুটি পাওয়া গেছে। ত্রুটিপূর্ণ ইভিএমগুলো মেরামতের জন্য বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরিতে পাঠানো হচ্ছে। তিনি বলেছেন, যাচাই-বাছাই করে এখন পর্যন্ত ৪০ হাজার ইভিএমে ত্রুটি পেয়েছি। তবে ১ লাখ ১০ হাজার ইভিএম ভোটের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

নতুন প্রকল্প নিয়ে সৈয়দ রাকিবুল হাসান জানান, অর্থ সংকটে নতুন ইভিএম কেনার প্রকল্প অনুমোদন হয়নি। ফলে মজুত থাকা ইভিএমের ওপরই নির্ভর করতে হচ্ছে নির্বাচন কমিশনকে। কিন্তু যে পরিমাণ ইভিএম মজুত আছে, তার কতগুলো এখন ব্যবহারযোগ্য, আর কতগুলো মেরামত করতে হবে, সে হিসাব আমরা করেছি।

প্রকল্প পরিচালক জানান, বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরিতে মজুত থাকা ৭০ হাজার এবং অন্যান্য গোডাউনে থাকা ৪০ হাজারসহ মোট এক লাখ ১০ হাজার ইভিএম এখন ভোটের জন্য সচল রয়েছে। বিভিন্ন সময় ভোটের পর সঠিকভাবে সংরক্ষণ না করাসহ অযত্ন ও অবহেলায় ত্রুটিপূর্ণ ইভিএমগুলো অকেজো হয়ে গেছে।

জানা যায়, বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ২০১৮ সালে ৩ হাজার ৮২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে দেড় লাখ ইভিএম কিনেছিল ইসি। কিন্তু পর্যাপ্ত ব্যবস্থাপনার অভাবে অনেক ইভিএমই এখন ত্রুটিপূর্ণ। একাদশ জাতীয় সংসদের ৬টি সংসদীয় আসনসহ বিগত ৫ বছরে অনুষ্ঠিত সিটি করপোরেশনসহ বেশিরভাগ স্থানীয় সরকার নির্বাচন ইভিএমের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়। এখন ১০টি আঞ্চলিক কার্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন জেলার ৪০টিরও বেশি অস্থায়ী গুদামে ইভিএমগুলো সংরক্ষিত আছে। গত ৪ মাস ধরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ৪০ হাজার ইভিএম ত্রুটিপূর্ণ পেয়েছে ইসি।

এদিকে আগামী জাতীয় নির্বাচনের জন্য দুই লাখ ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) কেনার পরিকল্পনা থাকলেও আর্থিক সংকটের কারণ দেখিয়ে সেখান থেকে সরে এসেছে সরকার। এখন নির্বাচন কমিশন সচিবালয় চাইছে, আগের কেনা দেড় লাখ ইভিএম যন্ত্র মেরামত করে প্রস্তুত করে রাখতে; যাতে আগামী নির্বাচনে ব্যবহার করা যায়। পুরোনো ইভিএম রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ৪০ কোটি টাকা চায় তারা। এ ছাড়া পাঁচ বছর আগে নেয়া ইভিএম প্রকল্পের মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়। ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ইভিএম কেনার জন্য ৩ হাজার ৮২৫ কোটি টাকার পাঁচ বছর মেয়াদি একটি প্রকল্প নেয় নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন ব্যবস্থায় তথ্যপ্রযুক্তি প্রয়োগের লক্ষ্যে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার’ প্রকল্পের আওতায় দেড় লাখ ইভিএম কেনা হয়। প্রকল্পটির মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী জুনে। গত বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে চলমান ইভিএম প্রকল্পের ওপর একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানেই দেড় লাখ ইভিএম ভাড়া ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ৪০ কোটি টাকা চাওয়া হয়। প্রকল্পের মেয়াদ এক বছর বাড়িয়ে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত করার প্রস্তাব দেয়া হয়। প্রস্তাব দুটি এখন নির্বাচন কমিশনে পাঠানো হবে। প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধির প্রস্তাব ১৫ শতাংশের নিচে থাকায় তা অনুমোদনের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে পাঠাতে হবে না। নির্বাচন কমিশন নিজেরাই এটি অনুমোদন করতে পারবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত