বিজ্ঞানে নারী ও মেয়ে-বিষয়ক আন্তর্জাতিক দিবসে আমরা একটি সরল সমীকরণ তুলে ধরি : অধিকসংখ্যক বিজ্ঞানমনস্ক নারী ও মেয়ে মানেই উন্নততর বিজ্ঞান। নারী ও মেয়েরা গবেষণায় বৈচিত্র্য নিয়ে আসেন, বিজ্ঞান চর্চাকারী পেশাদার ব্যক্তির সংখ্যা বৃদ্ধি করেন এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে নব দৃষ্টিভঙ্গির অবতারণা করেন; যাতে প্রত্যেকে উপকৃত হয়। গতকাল বিজ্ঞানে নারী ও মেয়েবিষয়ক আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষ্যে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস এক বাণীতে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, দিনে দিনে এমন প্রমাণ বাড়ছে যে, নারী দেহের চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন ড্রাগ টেস্ট থেকে শুরু করে পক্ষপাত ও বৈষম্যকে চিরস্থায়ী রূপ দেয় এরকম অ্যালগরিদমের সন্ধান করার মতো বিজ্ঞান চর্চায় জেন্ডারবিষয়ক পক্ষপাত আরও নেতিবাচক ফলাফল বয়ে আনে। তথাপি বিশ্বব্যাপী অনেক অঞ্চলে নারী ও মেয়েদের শিক্ষার সুযোগ সীমিত করা হয়েছে অথবা সে সুযোগ থেকে তাদের পুরোপুরি বঞ্চিত করা হয়েছে। নারীরা যেমন বিজ্ঞাননির্ভর কর্মজীবনে উন্নতি করতে আগ্রহী, তেমনি অসমতা ও বৈষম্য তাদের সম্ভাবনাকে অব্যাহতভাবে বাধাগ্রস্ত করছে। জাতিসংঘ মহাসচিব তার বাণীতে উল্লেখ করেন, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিতের ক্ষেত্রে নিয়োজিত জনবলের এক তৃতীয়াংশ নারী এবং অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ক্ষেত্রে এমনকি এর চাইতেও কম। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে কাজ করছেন এমন প্রতি পাঁচজন পেশাদার ব্যক্তির মধ্যে মাত্র একজন হলেন নারী। নারী ও মেয়ে বিজ্ঞানীদের উৎসাহিত করার জন্য আমাদের অবশ্যই আরও বেশি কিছু করতে হবে এবং আমরা তা করতে পারব। অ্যান্তোনিও গুতেরেস আরও বলেন, মেধাবৃত্তি, ইন্টার্নশিপ ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচির মাধ্যমে, যা সাফল্যের ক্ষেত্র তৈরি করে দেয়। কোটা, কর্মক্ষেত্রে ধরে রাখার প্রণোদনা ও মেন্টরশিপ কর্মসূচির মাধ্যমে, যা নারীদের শেকড় গেঁড়ে বসা প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে ওঠা ও একটি সুন্দর কর্মজীবন গড়ে তোলায় সাহায্য করে। তিনি মনে করিয়ে দেন- গুরুত্বপূর্ণ হলো, নারীর অধিকারসমূহ নিশ্চিত করা ও বাঁধাধরা বিশ্বাস, পক্ষপাত ও কাঠামোগত প্রতিবন্ধকতা ভেঙে দেয়ার। তিনি উল্লেখ করেন, নারী বিজ্ঞানীদের দিয়ে শ্রেণিকক্ষ, গবেষণাগার ও বোর্ডকক্ষগুলো পরিপূর্ণ করার মাধ্যমে অব্যবহৃত রয়ে যাওয়া বিশ্বের বিপুল প্রতিভা উন্মোচন করার জন্য আমরা সবাই আমাদের ভূমিকা পালন করতে পারি।
