ভূমিকম্পে নিহত ২৪ হাজার ছাড়াল

আটকেপড়াদের জীবিত উদ্ধারের আশা ক্ষীণ

প্রকাশ : ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভূমিকম্পের ধ্বংসস্তূপ থেকে নতুন করে উদ্ধারের মধ্যদিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৪ হাজার ছাড়িয়েছে। প্রচণ্ড শীতে ক্ষতিগ্রস্ত লাখ লাখ মানুষের দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। তবে, সময় যত গড়াচ্ছে, আটকেপড়াদের জীবিত উদ্ধারের আশা তত কমে আসছে।

জাতিসংঘ সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, ভূমিকম্পের পর এই দুই দেশে অন্তত ৮ লাখ ৭০ হাজার মানুষের জরুরিভাবে খাদ্যের প্রয়োজন। শুধু সিরিয়াতেই ৫৩ লাখ লোক গৃহহীন হয়ে পড়েছে। সোমবারের ৭ দশমিক ৮ মাত্রার কম্পনের পর ভূমিকম্প পরবর্তী কম্পনে মৃতের সংখ্যা বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেঁচে থাকা মানুষের জীবনের ঝুঁকি আরও বেড়েছে। জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি তুরস্কের ৫ লাখ ৯০ হাজার এবং সিরিয়ায় ২ লাখ ৮৪ হাজার মানুষের খাদ্য সহায়তার জন্য ৭ কোটি ৭০ লাখ ডলার অর্থ সরবরাহের আবেদন করেছে।

এতে বলা হয়েছে, তুরস্কে গৃহহীন মধ্যে ৫ লাখ ৪৫ হাজার মানুষ দেশের মধ্যে এবং ৪৫ হাজার মানুষ দেশের বাইরে আশ্রয় নিয়েছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় কুর্দি যোদ্ধা এবং সিরিয়ার বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেয়ার সুযোগ করে দিতে সব পক্ষকে শান্ত থাকার অনুরোধ জানিয়েছে। বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ায় প্রায় ৪০ লাখ মানুষ মানবিক সহায়তার ওপর নির্ভর করে। তবে, তিন সপ্তাহে সরকার-নিয়ন্ত্রিত এলাকা থেকে কোনো সাহায্য দেয়া হয়নি।

সিরিয়ার সরকার বলেছে, তারা তাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে ভূমিকম্প কবলিত এলাকায় মানবিক সহায়তা বিতরণের অনুমোদন দিয়েছে। ইতোমধ্যে মাত্র দুটি সাহায্য কনভয় তুরস্ক থেকে সীমান্ত অতিক্রম করেছে। এক দশকের গৃহযুদ্ধ এবং সিরীয়-রাশিয়ান বিমান হামলায় ইতোমধ্যে হাসপাতালগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে। হামলায় বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস তুরস্ক ও সিরিয়ার মধ্যে নতুন আন্তঃসীমান্ত মানবিক সহায়তা কেন্দ্র খোলার অনুমোদন দেয়ার জন্য নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। কাউন্সিল সম্ভবত আগামী সপ্তাহের শুরুতে সিরিয়া নিয়ে আলোচনার জন্য বৈঠক করবে।

তুরস্ক বলেছে, তারা সিরিয়ার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত অংশে দুটি নতুন রুট খোলার জন্য কাজ করছে। দেশটির কর্মকর্তারা বলেছেন, ভূমিকম্পে ১২ হাজার ১৪১টি ভবন ধ্বংস হয়েছে বা গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ইস্তাম্বুল-ভিত্তিক বোগাজিসি ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক মুস্তাফা এরদিক বলেছেন, মেঝেগুলো একে অপরের ওপর স্তুপ হয়ে আছে, যার মানে জীবিত কাউকে পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।

১৯৩৯ সালে ৭ দশমিক ৮-মাত্রার কম্পনে ৩৩ হাজার লোক মারা যাওয়ার পর এবারের কম্পনটি ছিল সবচেয়ে শক্তিশালী এবং মারাত্মক। কর্মকর্তা ও চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তুরস্কে ২০ হাজার ৬৬৫ এবং সিরিয়ায় ৩ হাজার ৫৫৩ জন মারা গেছেন। এতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৪ হাজার ২১৮ জন।