ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

তিন কারণে দূষিত শহরের তালিকায় শীর্ষে ঢাকা

* স্বাভাবিক নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে শিক্ষার্থীদের * বায়ুর মানোন্নয়নে উদ্যোগ নেই সংস্থাগুলোর
তিন কারণে দূষিত শহরের তালিকায় শীর্ষে ঢাকা

অপরিকল্পিত নগরী ঢাকায় বছরের পর বছর অবকাঠামো উন্নয়ন ও যানবাহন বাড়ছে। এতে ঘিঞ্জি থেকে আরো ঘিঞ্জি হয়ে উঠছে এই শহর। এখন বহুতল ভবনের সঙ্গে বেড়েছে সরু রাস্তা, কলকারখানা। বেড়েছে মানুষের বসতি। এসবের মধ্যে পিছিয়ে নেই দূষণের মাত্রাও। বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে ঢাকা।

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ঢাকার বাতাসে ধুলা উড়ছে। দূষণের ফলে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে জনস্বাস্থ্য। এতে মানুষের দীর্ঘ মেয়াদে ফুসফুসের ক্যান্সার, শ্বাসকষ্টসহ জটিল ও কঠিন রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকছে। শিশুরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল সেন্টার ফর ক্লিন এয়ার রিসার্চ, যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও হিউস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ গবেষণায় এসব চিত্র ফুটে উঠেছে। আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান সাময়িকী এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ কমিউনিকেশন প্রকাশিত গবেষণা বলা হয়েছে, শিশুরা দিনের ১৭ শতাংশ সময় কাটায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। রাজধানীর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর প্রাঙ্গণ দূষিত বায়ু ও বিষাক্ত গ্যাসে ভরে উঠছে। ১০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ওপর গবেষণা করা হয়েছে। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হচ্ছে নবাবপুর সরকারি উচ্চবিদ্যালয়, কমলাপুর হাইস্কুল, নিউ মডেল বহুমুখী হাইস্কুল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থিত ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি হাইস্কুল, খিলগাঁও গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মতিঝিল মডেল হাইস্কুল, মানিকনগর মডেল হাইস্কুল, আহমেদাবাগ হাইস্কুল ও বাড্ডা হাইস্কুল। গবেষণায় শ্রেণিকক্ষে থাকা ২৫০ জন শিশুর শ্বাস-প্রশ্বাস নেয়ার স্বাভাবিক ক্ষমতা পরীক্ষা করা হয়। নিশ্বাস পরিমাপ করার বিশেষ যন্ত্র ফ্লো মিটার দিয়ে করা ওই পরীক্ষায় ৪০ শতাংশ শিশু স্বাভাবিকভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে পারেনি। বেশির ভাগ শিশুর বায়ুদূষণজনিত সমস্যা পাওয়া গেছে।

সরেজমিনে রাজধানীর ফার্মগেট, বাংলামোটর, যাত্রাবাড়ী, উত্তরা, আব্দুল্লাপুর, জসিমদ্দিন, মিরপুর-১০ নম্বর ও মনিপুরী এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, ঢাকা ওয়াসা পানি সরবরাহ ও পয়োনিষ্কাশন নালা, ডেসকো ও ডিপিডিসি ভূগর্ভস্থ বৈদ্যুতিক তার, বিটিসিএল টেলিফোন লাইন দিতে খোঁড়াখুঁড়ি চলছে। এসব কাজের জন্যও সড়কে ধুলা হচ্ছে। জুরাইন, পোস্তগোলা এলাকার প্রধান সড়কের দোকানপাট, গাছগাছালিতে ধুলার আস্তর পড়ে আছে। সায়েদাবাদ, গাবতলী, মোহাম্মদপুর, শ্যামলী, গুলিস্তান, বাবুবাজার, রায়েরবাজার, ধানমন্ডি, কাকরাইল, কারওয়ান বাজারসহ অন্য এলাকা ধুলায় আচ্ছাদিত। ওড়া ধুলাই ঢাকার বায়ু দূষণের প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করছেন বিশেষজ্ঞরা। ধুলার মধ্যে মিশে থাকা জীবাণু মানুষের শরীরে অ্যালার্জির সৃষ্টি করে, একসময় যা অ্যাজমায় রূপান্তর হয়। ধুলায় কিছু রাসায়নিক উপাদান ইউরিয়া, প্যারাবিন, থ্যালেট, পেট্রলিয়াম বাই প্রডাক্টস ও প্রোপাইলিন গ্লাইকল থাকে, যা পানিতে মিশে না। এগুলো থেকে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভানা থাকে। দীর্ঘদিন শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে মানুষের শরীরে গিয়ে ধীরে ধীরে ফুসফুসে ক্যান্সার সৃষ্টি করে এসব উপাদান।

স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান ড. কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, প্রত্যেক বছর নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি-এই চার মাস দূষণ সবচেয়ে বেশি থাকে। বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নে নিয়ম না মানাকে দূষণের বড় কারণ বলে দায়ী করেন তিনি।

রাজধানীতে মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, বাস র‍্যাপিড ট্রানজিটের কাজ চলছে শহরজুড়ে। রাজউকের পূর্বাচল ৩০০ সড়ক প্রকল্প এবং যাত্রাবাড়ী থেকে শনিরআখড়া পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তের কাজও চলছে এই সময়ে। সড়ক খনন নীতিমালা অনুযায়ী, নির্মাণ এলাকায় যেন ধুলাবালি না উড়ে, সেজন্য নিয়মিত প্রয়োজনীয় পানি ছিটানোর ব্যবস্থা করতে হবে। কিন্তু এসব এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, এই নিয়ম মানা হচ্ছে না। বিভিন্ন জায়গায় খনন করে সড়কের পাশে মাটি ফেলে রাখা হয়েছে। কোথাও খনন করা গর্ত ভরাট করে তাতে মাটি ও ইটের খোয়া ফেলা হয়েছে।

যাত্রাবাড়ী মোড়ে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশ কাজী ফিরোজ বলেন, যাত্রাবাড়ী থেকে শনিরআখড়া পর্যন্ত রাস্তার দুপাশে ধুলা উড়ে। সকাল, দুপুর ও বিকাল পানি দিলেও দ্রুত শুকে যায়। সারাদিন সড়কে ধুলা থাকে। রাতে অবস্থা আরও খারাপ হয়।

শ্রাবণ পরিবহণ চালক জিহাদ চৌধুরী আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, যাত্রাবাড়ী থেকে শনিরআখড়া পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তের কাজটি ৬ মাসের বেশি হচ্ছে, এখনো শেষ হয়নি। এই রাস্তার ধুলায় এলাকা অন্ধকার হয়ে যায়। চট্টগ্রাম ও পদ্মা সেতু হয়ে যেসব গাড়ি যাত্রাবাড়ী হয়ে চলাচল করে সেসব বাসের যাত্রীরা প্রতি নিয়ত ধুলার কবলে পড়ছেন। একই সঙ্গে এই রাস্তার পাশ দিয়ে যেসব গাড়ি যাত্রীরা চলাচল করছেন তারাও ধুলার কারণে ভোগান্তিতে পড়েন।

এদিকে নগর পরিকল্পনাবিদরা বলেছেন, যত্রযত্র রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি, অপরিকল্পিত উন্নয়নের নামে গাছ কাটা, ঘনবসতি, ফাঁকা জায়গার সংকট, সরকারি-বেসরকারি সংস্থাগুলোর সমন্বহীনতা ও নগরের দায়িত্বে ঢাকা দুই সিটি করপোরেশনের গাফিলতি থাকায় দূষণের মাত্রা বেড়েছে। দূষিত শহরের তালিকা থেকে ঢাকা শহরকে উত্তরণে সরকারি-বেসরকারি খাতগুলোকে জোরাল ভূমিকা রাখতে হবে। সব কিছু নতুন করে ঢেলে সাজাতে হবে।

জানা গেছে, স্বাধীনতার পরবর্তী ঢাকা শহরকে গড়ে তুলতে যেসব মহাপরিকল্পনা হয়, তা বাস্তবায়ন হয়নি। বিচ্ছিন্ন ও বিক্ষিপ্তভাবে আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন গড়ে উঠেছে। এখন এক সমস্যার সমাধান করতে গিয়ে অন্য সমস্যা আরও প্রকট রূপ নিয়েছে। রাস্তার পরিধি, খেলার মাঠ কিংবা খোলা জায়গা বিবেচনায় না রেখে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা নিজেদের মতো করে প্রকল্প নেয় ও বাস্তবায়ন করে। অপরিকল্পিত উন্নয়নে ঢাকায় মানুষের চাপ বাড়ায় দূষিত হচ্ছে। ২০১৯ সালের মার্চে পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ঢাকার বায়ু দূষণের তিনটি প্রধান উৎস হলো- ইটভাটা, যানবাহনের ধোঁয়া ও নির্মাণ সাইটের ধূলা।

বায়ুমান যাচাই বিষয়ক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) বায়ুমান সূচকে (একিউআই) ঢাকার বায়ুর মান ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’। বায়ুদূষণে মানুষের শ্বাসরোধ অবস্থা। ঘরের বাইরে এলেই ধুলা ও ধোঁয়ায় ধূসর চারদিক। এ অবস্থায় শিশু, প্রবীণ ও অসুস্থ রোগীদের বাড়ির ভেতরে এবং অন্যদের বাড়ির বাইরের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখার পরামর্শ দিয়েছে একিউআই। একিউআই স্কোর ৩৭০ নিয়ে রাজধানীর বাতাসের মান ‘ঝুঁকিপূর্ণ’। বায়ুর স্কোর ১০১ থেকে ২০০ এর মধ্যে থাকলে সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য ‘অস্বাস্থ্যকর’ বলা হয়। ২০১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে থাকা একিউআই স্কোর ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’। আর ৩০১ থেকে ৪০০ এর মধ্যে থাকা একিউআইকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে বিবেচিত হয়, যা বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে। ভারতের দিল্লি ও মুম্বাই যথাক্রমে ২৫১ ও ২২০ একিউআই স্কোর নিয়ে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান দখল করেছে।

বাংলাদেশে একিউআই নির্ধারণ করা হয় দূষণের পাঁচটি বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে, সেগুলো হলো- বস্তুকণা (পিএম ১০ ও পিএম ২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন (এসও৩)। দীর্ঘদিন ধরে বায়ু দূষণে ভুগছে ঢাকা। এর বাতাসের গুণমান সাধারণত শীতকালে অস্বাস্থ্যকর হয়ে যায় এবং বর্ষাকালে কিছুটা উন্নত হয়।

পরিবেশ অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, বায়ু দূষণ রোধে আইন পালনে প্রভাবশালীদের অনীহা ও বাধা বড় চ্যালেঞ্জ। পরিবেশ সুরক্ষায় রাজনৈতিক চাপও বড় প্রতিবন্ধকতা। বায়ু দূষণকারীদের কেউ কেউ ব্যক্তিগত স্বার্থে এই ক্ষতি করে চলেছে। এই দূষণ বন্ধে প্রথমত সরকারের হাতে থাকা আইনের প্রয়োগ করতে হবে। দ্বিতীয়ত, জনগণকে পরিবেশের বিভিন্ন উপাদান দ্বারা ক্ষতির ভয়ানক পরিণতি সম্পর্কে সচেতন করতে হবে। এছাড়া দূষণে মানুষের অকালমৃত্যু বাড়ছে। বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। বিনিয়োগে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। চিকিৎসাসহ নানাভাবে অর্থনৈতিক ক্ষতি হচ্ছে।

চলতি বছরের ৪ ডিসেম্বর বিশ্ব ব্যাংকের গবেষণা বলেছে, দেশে বায়ু দূষণের প্রভাবে ২০১৯ সালে অন্তত ৭৮ হাজার ১৪৫ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে এবং জিডিপির ৩ দশমিক ৯ শতাংশ ক্ষতি হয়েছে। বায়ুদূষণের ফলে শ্বাসকষ্ট, কাশি, শ্বাসনালীর সংক্রমণ ও হৃদযন্ত্রের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগের পাশাপাশি মানুষের বিষ্ণণতাও বাড়ছে। সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ছে ৫ বছরের কম বয়সি শিশু ও বয়স্ক মানুষ।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকায় যেসব এলাকায় নির্মাণ কাজ ও যানবাহন বেশি চলে সেখানে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর বাতাসে অতি সূক্ষ্ম ধূলিকণার পরিমাণ (পিএম ২.৫) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদিত মাত্রার চেয়ে ১৫০ শতাংশ বেশি। আর ঢাকার আশপাশে ইটভাটা সংলগ্ন এলাকায় তা গড়ে ১৩৬ শতাংশ বেশি। ঢাকায় বিশ্ব ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর ড্যান ড্যান চেন বলেন, বায়ুদূষণ শিশু থেকে বয়স্ক সব মানুষের শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি করছে। বাংলাদেশে মৃত্যু ও ‘ডিসঅ্যাবিলিটির’ দ্বিতীয় বৃহত্তম কারণ এটি।

বিশ্ব ব্যাংকের গবেষণা ছাড়াও সম্প্রতি বেসরকারি স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) জরীপে বলা হয়েছে, দেশের সর্বোচ্চ বায়ুদূষণ ঢাকায়। যেখানে বায়ুতে অতি ক্ষুদ্রকণার মাত্রা বাংলাদেশের আদর্শ মান প্রতি ঘনমিটারে ৬৫ মাইক্রোগ্রামের চাইতে চার থেকে পাঁচগুণ বেশি। এর কারণ হচ্ছে- শহরে অনিয়ন্ত্রিত নির্মাণ কাজ ও সমন্বয়হীন সংস্কার কাজ ও রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি চলছে। এছাড়াও ঢাকার চারপাশে ইটভাটা, ছোট-বড় কয়েক হাজার শিল্প কারখানা, ফিটনেসবিহীন যানবাহনের কালো ধোঁয়া এবং ময়লা-আবর্জনা পোড়ানো।

পানিসম্পদ ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, ‘নতুন সংবিধানের ১৮ (ক) ধারা অনুযায়ী প্রকৃতি, পরিবেশ, বনভূমি, জলাভূমি ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ করা রাষ্ট্রের কর্তব্য। অথচ যারা রাষ্ট্র পরিচালনা করেন তারাই বায়ুদূষণের জন্য প্রধানত দায়ী। বায়ুদূষণ রোধে বাংলাদেশে কোনো পদক্ষেপ দেখতে পাচ্ছি না।’ তিনি বলেন, ‘রাজধানীসহ দেশের প্রতিটি জেলায় ইটের ভাটা রয়েছে। এসব ইটভাটার মালিক স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা। ইটভাটার কালো ধুয়া বায়ুদূষিত করছে। সেজন্য পরিবেশবান্ধব ইটভাটা নির্মাণ করতে হবে। অথচ ছোট ছোট ইটভাটার মালিকদের বাধায় পরিবেশবান্ধব ইটভাটা নির্মাণ সম্ভব হচ্ছে না। সরকার বিশ্ব ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের বহুতল ভবন নির্মাণ করেছে। অথচ বায়ুদূষণ রোধে কার্যকরী কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি।’

বায়ু দূষণ রোধে ঢাকা দুই সিটি করপোরেশনের কোনো দায়িত্ব রয়েছে জানতে চাইলে ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইপিডি) নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, ‘বিদেশে শহরে কোনো ভবন ও অবকাঠামো নির্মাণে স্ট্যান্ডার মেইনটেইন করা হয়, কিন্তু ঢাকায় তা করা হয় না। মেয়াদোত্তীর্ণ গাড়ি ও ঢাকার শহরের চারপাশে ইটভাটা চলছে। এসবে তদারকি অভাব ও আইনের যথাযথ প্রয়োগ করছে না সংস্থাগুলো। সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এলাকায় কেউ আইনের ব্যত্যয় ঘটালো কিনা সেটি মনিটরিং করতে পারেন স্থানীয় কাউন্সিলরা। এমনকি আইন ভঙ্গকারীর বিরুদ্ধে ইচ্ছে করলে সিটি করপোরেশন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। এক্ষেত্রে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন।’

পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের চেয়ারম্যান আবু নাসের খান আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, বায়ুদূষণের উৎস প্রাইভেটকার, ইটভাটা ও অপরিকল্পিত নির্মাণ কাজ। বায়ুদূষণ রোধে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রাইভেটকার কমিয়ে ট্রেনে যাতায়াতের ব্যবস্থা, পরিবেশবান্ধব ইটভাটা ও পরিকল্পিত নির্মাণ করা দরকার। ঢাকার বায়ুর মান ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’। বায়ুদূষণ রোধে পরিবেশ অধিদপ্তরের কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আবদুল হামিদের মোবাইল ফোনে কয়েক বার চেষ্টা করা হলেও তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত