ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভূমিকম্প

মৃতের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়াতে পারে : ধারণা জাতিসংঘের

মৃতের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়াতে পারে : ধারণা জাতিসংঘের

তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বর্তমানের চেয়ে দ্বিগুণ অথবা তার চেয়েও বেশি হতে পারে। বর্তমানে মৃতের সংখ্যা ২৮ হাজার ঘোষণা করা হয়েছে। জাতিসংঘের ত্রাণবিষয়ক সংস্থার প্রধান মার্টিন গ্রিফিথস বলেছেন, মৃতের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে। গত শনিবার তিনি সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় কাহরামনমারাস শহরে যান। এটি গত সোমবারের ৭.৮ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্পের মূল কেন্দ্রস্থল ছিল।

স্কাই নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, সঠিক হিসেব দেয়া কঠিন। তবে, আমি নিশ্চিত এটি দ্বিগুণ কিংবা তার চেয়ে বেশি হবে। তিনি আরও বলেন, আমরা প্রকৃতপক্ষে মৃতের সংখ্যা গণনা শুরু করিনি।

এদিকে, কর্মকর্তা ও হাসপাতাল সূত্রে বলা হয়েছে, তুরস্কে ২৪ হাজার ৬১৭ এবং সিরিয়ায় ৩ হাজার ৫৭৪ জন মারা গেছে। মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৮ হাজার ১৯১ জন। হিমশীতল আবহাওয়া উপেক্ষা করে হাজার হাজার উদ্ধারকর্মী তাদের তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। বৈরী আবহাওয়ায় গৃহহারা লাখ লাখ লোক অবর্ণনীয় দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছে। তাদের জরুরিভিত্তিতে ত্রাণ সহায়তা প্রয়োজন। জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে, তুরস্ক ও সিরিয়ায় অন্তত ৮ লাখ ৭০ হাজার লোকের জরুরি ত্রাণ প্রয়োজন। শুধু সিরিয়ায় ৫৩ লাখ লোক গৃহহীন হয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব মতে, শক্তিশালী এই ভূমিকম্পে ২ কোটি ৬০ লাখ লোক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এদিকে, ভয়াবহ ভূমিকম্পে ব্যাপক প্রাণহানি চাপে ফেলেছে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট ও সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানকে। এরই মধ্যে দেশটিতে প্রশ্ন উঠেছে- এত বড় মাপের ট্র্যাজেডি এড়ানো যেত কি না এবং প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের সরকার মানুষের জীবন বাঁচাতে আরও কিছু করতে পারতেন কি না।

যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএসের তাৎক্ষণিক এক বিবৃতিতে বলা হয়, তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলীয় কাহরামানমারাশ প্রদেশের গাজিয়ানতেপ শহরের কাছে ভূপৃষ্ঠের ১৭ দশমিক ৯ কিলোমিটার গভীরে ছিল ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল। ইউএসজিএসের বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ১৯৩৯ সালের পর এটাই ছিল তুরস্কে সবচেয়ে বড় ভূমিকম্প।

চলতি বছর মে মাসে তুরস্কে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হওয়ার কথা। কিন্তু সময়-সুযোগ ও সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও দুর্যোগ মোকাবিলা ও ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেয়ায় আসন্ন নির্বাচনে জয় নিয়ে ঝুঁকিতে আছেন এরদোয়ান- যিনি টানা ২০ বছর ধরে দেশটির সরকারপ্রধান হিসেবে আছেন।

তবে, জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ হওয়া সত্ত্বেও ভূমিকম্প পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলায় সম্প্রতি তিনি যে জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছেন, তাতে দেশটির অভ্যন্তরে প্রত্যাশিত সাড়া মেলেনি বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি।

ভূগর্ভের দুটি ফল্টলাইনের ওপর তুরস্কের অবস্থান। ফলে ভূমিকম্প ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর তালিকায় তুরস্কের অবস্থান বেশ ওপরের দিকে। কিন্তু দেশটিতে ভবন নির্মাণ সংক্রান্ত যে বিধিমালা বা নির্দেশনা (বিল্ডিং কোড) বর্তমানে কার্যকর আছে, সেটি ৮০ বছরের পুরোনো।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত