ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

চেতনায় একুশ

অনুকূল সময় না থাকলেও সৃষ্টি হয়েছিল সুযোগ

অনুকূল সময় না থাকলেও সৃষ্টি হয়েছিল সুযোগ

ভাষা আন্দোলন শুধু একটি সমন্বিত উদীয়মান জনগোষ্ঠীকে স্বতন্ত্র জাতিগোষ্ঠী ও নির্দিষ্ট ভূখণ্ড বিনির্মাণে এগিয়ে দেয়নি, এ জনগোষ্ঠীর মধ্যেই ডুবতে ও ভাসতে থাকা একটি শ্রেণির মুখে ভাষা জুগিয়েছিল- যাদের সঠিক সময়ে উন্মেষ ঘটেনি। বলা যায়, উন্মেষ ঘটতে দেয়া হয়নি। তাদের উঠে আসার যথেষ্ট অনুকূল সময় না থাকলেও সৃষ্টি হয়েছিল সুযোগ, পরিবেশ এবং ছিল অনেক উপাদান। উঠে আসার পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছিল ঔপনিবেশিকতা, সামন্তবাদ আর ক্ষমতাসীন শাসক-শোষকরা তো ছিলই। পরিতাপ হলো, এ শ্রেণি কিন্তু এখনো উঠে আসেনি। তারা ঠিকই নিজের মনে করে যুদ্ধ, লড়াই-সংগ্রাম করে, কিন্তু ফল ভোগ করতে পারে না। এ শ্রেণিটির আমাদের চাষি, প্রান্তিক চাষি, জেলে, দিনমজুর ও শ্রমিক। সেই সঙ্গে সহায়ক হিসেবে আছে কিছু মধ্যবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্ত আর গরিব শ্রেণি।

ভাষা আন্দোলনকে ধনিক কোনো শ্রেণি এগিয়ে নেয়নি। এর দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে, বুকের রক্ত ঝরিয়ে, মায়ের মুখের বুলিকে মায়ের সম্মান মনে করে তা রক্ষা করেছিল মধ্যবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্ত আর গরিব শ্রেণি। রফিক, সালাম, বরকত, জব্বার- যাদের কথাই আমরা আনি বা ভাবি না কেন, তাদের আর্থসামাজিক পরিচয় কিন্তু এর চেয়ে বেশি নয়; অর্থাৎ কেউ নয় ধনিক গোষ্ঠীভুক্ত। এ শ্রেণিই কিন্তু ’৫৪, ’৬৬, ’৬৯-এ ধারাবাহিক শ্রম, মেধা, রক্ত আর প্রাণ ঝরিয়ে নিয়ে এলো ’৭১-এর চরম মুহূর্ত। ’৭১-এর পুরো সময়টায় অগ্রভাগে ছিল এই শ্রেণি। পুরো সময়টি ছিল তাদের সর্বোচ্চ ত্যাগের মাহিমায় ভাস্বর। তাদের কারণেই মুক্তিযুদ্ধ হয়ে ওঠে জনযুদ্ধ।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত