ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

চেতনায় একুশ

শান্তিপূর্ণ মিছিলের ওপর পুলিশের আবার গুলি

শান্তিপূর্ণ মিছিলের ওপর পুলিশের আবার গুলি

১৯৫২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি হাজার হাজার ছাত্র-জনতা সকাল থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় জড়ো হতে থাকেন। উপস্থিত ছাত্র-জনতা ২১ ফেব্রুয়ারি হিতদের স্মরণে কার্জন হল এলাকায় গায়েবানা জানাজা আদায় করেন এবং একটি শোক মিছিল বের করেন। শান্তিপূর্ণ মিছিলের ওপর পুলিশ আবার গুলি চালালে শফিউর রহমানসহ চারজন ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন। উত্তেজিত জনতা রথখোলায় অবস্থিত সরকারপক্ষীয় পত্রিকা ‘দ্য মর্নিং নিউজ’ এর অফিসে আগুন ধরিয়ে দেয়। পূর্ব পাকিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী নরুল আমিন পুলিশের পাশাপাশি আর্মি নামিয়ে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। আর্মি ও পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে ছাত্র-জনতা ভিক্টোরিয়া পার্কে (বর্তমানে বাহাদুর শাহ পার্ক) জমায়েত হন এবং সেখানে অলি আহাদ, আবদুল মতিন, কাজী গোলাম মাহবুব বক্তব্য রাখেন। উপায়ন্তর না দেখে নরুল আমিন তড়িঘড়ি করে আইন পরিষদে বাংলাকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব আনেন এবং প্রস্তাবটি সর্বসম্মতভাবে পাস হয়। ২৩ ফেব্রুয়ারি সমগ্র পূর্ব পাকিস্তানে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ধর্মঘট পালিত হয়। এর আগের দিন আইন পরিষদে রাষ্ট্রভাষা সংক্রান্ত প্রস্তাব আনার পরও নূরুল আমিনের পেটোয়া বাহিনী আন্দোলনকারীদের ওপর দমনপীড়ন অব্যাহত রাখে। সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ ২৫ ফেব্রুয়ারি সমগ্র পূর্ব পাকিস্তানে সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দেয়। ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে ছাত্রছাত্রীরা বরকত শহীদ হওয়ার স্থানে ভাষা আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে একটি অস্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভ নির্মণ শুরু করেন। ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোর ৬টায় ‘শহীদ স্মৃতিস্তম্ভের’ নির্মাণকাজ সমাপ্ত হয় এবং সকাল ১০টার দিকে শহীদ শফিউর রহমানের বাবাকে দিয়ে স্মৃতিস্তম্ভটির ফলক উন্মোচন করা হয়। নূরুল আমিনের সরকার রাজপথে সর্বত্র সেনাবাহিনী ও পুলিশ মোতায়েন করে এবং ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পরিবেশ স্বাভাবিক করার ঘোষণা দেয়। এই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ভাষা আন্দোলনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব শীর্ষ নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২৫ ফেব্রুয়ারি ছাত্র বিক্ষোভ দমাতে ভাষা আন্দোলনের সূতিকাগার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত