ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

আজ উদ্বোধন করবেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী

উৎপাদনে যাচ্ছে বগুড়ায় ইডিসিএলের স্বপ্নের প্রজেক্ট ‘সেফালোস্পোরিন’

উৎপাদনে যাচ্ছে বগুড়ায় ইডিসিএলের স্বপ্নের প্রজেক্ট ‘সেফালোস্পোরিন’

অবশেষে উৎপাদনে যাচ্ছে রাষ্ট্রায়ত্ত ওষুধ তৈরি প্রতিষ্ঠান এসেনশিয়াল ড্রাগ কোম্পানি লিমিটেডের (ইডিসিএল) স্বপ্নের প্রজেক্ট ‘সেফালোস্পোরিন ইউনিট’। প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদনের অপেক্ষায় থাকা ফোর্থ জেনারেশনের ‘সেফালোস্পোরিন’ অ্যান্টিবায়োটিক তৈরি ইউনিট উদ্বোধন হতে যাচ্ছে আজ। বগুড়ায় অবস্থিত প্রকল্পটির উৎপাদন কার্যক্রম আজ বিকেলে উদ্বোধন করবেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক এমপি। ইডিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) অধ্যাপক ডা. এহ্সানুল কবির জগলুল দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানিয়েছেন, উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা কারখানাটিতে স্টেরাইল অ্যান্টিবায়োটিক বা ইনজেকশন পূর্ণমাত্রায় উৎপাদন শুরু হবে। এছাড়াও এই প্রজেক্টে সিরিয়াস রোগের তাৎক্ষণিক প্রয়োজনে ব্যবহার হয় এমন সেফট্রাইক্সেন, সেফুরোক্সাইম, সেফটাজিডিম ও সেফরাডিন’র মত ১২ টি জীবন রক্ষাকারী স্টেরাইল অ্যান্টিবায়োটিক উৎপাদনে যাবে। যুগোপযোগী উৎপাদন নীতিমালা অনুযায়ী অত্যাধুনিক মেশিনে মান নিশ্চিত করে উৎপাদিত এসব জীবন রক্ষাকারি ওষুধ বিনামূল্যে রোগীদের সরবরাহ করবে সরকার ও বিভিন্ন জাতীয় ও অন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান। এতে একদিকে যেমন বছরে দেড় কোটি মানুষকে বিনামূল্যে ওষুধ দেয়া সহজ হবে, তেমনি বছরে নূন্যতম ১৫০ কোটি টাকার রাজস্বও যোগ হবে।

সরকারি প্রতিষ্ঠানটিতে এ মাসেই পূর্ণদমে উৎপাদনে যাচ্ছে বলেও জানা গেছে সংশ্লিষ্ট সূত্রে। এর মাধ্যমে সরকার বছরে দেড় কোটি মানুষকে বিনামূল্যে ‘সেফালোস্পোরিন’ অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ সরবরাহ করতে সক্ষম হবেন।

অধ্যাপক ডা. এহ্সানুল কবির জগলুল বলেন- বর্তমান বাজারে অ্যান্টিবায়োটিকের যে উচ্চ মূল্য তাতে সাধারণ রোগিরা ক্রয় করে ঠিকমত ওষুধ সেবন করতে পারেন না। ওষুধের উচ্চ মুল্যের বাজারে লাগাম টানতেও ভূমিকা রাখবে ইডিসিএলের এ মহতি উদ্যোগ। প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষ কমিউনিটি ক্লিনিক, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, জেলা সদর হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন মাধ্যমে সরকারিভাবে এ মূল্যবান ওষুধ বিনামূল্যে পাবেন বলেও জানান ইডিসিএলের এমডি।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম ও বর্তমান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এ প্রকল্পকে উৎপাদন উপযোগী করতে নিরলসভাবে পরিশ্রম করেছেন জানিয়ে অধ্যাপক ডা. এহ্সানুল কবির জগলুল বলেন- ২০০৫ সালে নেয়া এ প্রকল্পটি অবহেলায় পড়েছিল। সরকার স্বাস্থ্যখাতে অভূতপূর্ব ভূমিকার অংশ হিসেবে ইডিসিএলের অবহেলায় পরে থাকা বগুড়ার এই ফোর্থ জেনারেশনের ‘সেফালোস্পোরিন’ অ্যান্টিবায়োটিক তৈরির প্রকল্পটিকে পূর্ণমাত্রায় উৎপাদনে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বর্তমান সরকার।

জানা গেছে, সেফালোস্পোরিন গ্রুপের ওষুধ উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা সামনে রেখে ২০০৫ সালের এপ্রিল মাসে এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লি. বগুড়া ইউনিটের বর্ধিতাংশে নতুন এ প্রকল্পের উদ্বোধন হয়। কিন্তু পরবর্তি ১১ বছর নতুন এই প্রকল্পটি আলোর মুখ দেখেনি। ২০১৪ সালে ইডিসিএলের এমডির দায়িত্ব পাওয়ার পর মৃতপ্রায় প্রকল্পটির কাজ ২০১৬ সালে নতুন করে শুরু করেন অধ্যাপক ডা. এহ্সানুল কবির জগলুল। ঢেলে সাজানো এবং যুগোপোযোগী উৎপাদন নীতিমালা অনুসরণ করে ওষুধ উৎপাদনের লক্ষ্যে দুই ধাপে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কাজ শুরু করা হয়। প্রথম ধাপে ননস্টেরাইল অ্যান্টিবায়োটিক (ক্যাপসুল ও ড্রাইসিরাপ) এবং দ্বিতীয় ধাপে স্টেরাইল অ্যান্টিবায়োটিক (ইনজেক্ট্যাবলস) উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা হাতে নেয়া হয়। সে অনুযায়ী ২০১৬ সালে প্রথম ধাপের কাজ শুরু করে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ সম্পাদন করে অসম্পূর্ণ উৎপাদন বিভাগ, কোয়ালিটি কন্ট্রোল বিভাগ, স্টোর বিভাগ এবং ইউটিলিটিজ বিভাগ যুগোপযোগী ও সর্বাধোনিক উৎপাদন নীতিমালা অনুযায়ী রেনোভেট বা সংস্কার করা হয়।

উল্লেখ্য, ছয় দশক আগে প্রতিষ্ঠিত তৎকালিন রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান আজকের এসেনশিয়াল ড্রাগ কোম্পানি লিমিটেড (ইডিসিএল)। ১৯৬২ সালে যাত্রা শুরু পর নানা সংকট-সম্ভাবনায় দীর্ঘ পথ-পরিক্রমা। ইডিসিএল অনেক সময় থমকেও দাঁড়িয়েছে। অনিয়ম আর দ্বন্দ্বে জরাজীর্ণ অবস্থায় পতিত হয়েছিল সম্ভাবনাময় ইডিসিএল।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত