শান্তি সমাবেশে ওবায়দুল কাদের

সংবিধান থেকে এক চুলও নড়বে না আওয়ামী লীগ

প্রকাশ : ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ভুলে যাওয়ার জন্য বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, সংবিধান থেকে আওয়ামী লীগ এক চুলও নড়বে না। অসাংবিধানিক ও অস্বাভাবিক তত্ত্বাবধায়ক সরকার দেশে আর হবে না। নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী।

গতকাল শনিবার বিকালে রাজধানীর ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে এ শান্তি সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচির সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, কোনো পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি নয়, সারা বছরই রাজপথে থাকবে আওয়ামী লীগ। ছাত্রলীগের নাম ব্যবহার করে যেসব অপকর্ম হচ্ছে তা দুর্বৃত্তদের কাজ। এসব দুর্বৃত্তদের আওয়ামী লীগের কোনো সংগঠনে থাকার অধিকার নেই। অপকর্মে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম এমপি বলেন, যদি ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসতে চান, তবে নির্বাচনে অংশ নিন। আর কখনও ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে জনগণের ভোটচুরি করতে দেয়া হবে না। তিনি বলেন, বিদেশিদের কাছে ধর্না দিয়ে লাভ হবে না। এর আগেও আগুন সন্ত্রাসের মাধ্যমেও নির্বাচন বন্ধ করতে পারেননি তারা। এবারও পারবে না। আর কোনোভাবেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার এদেশে ফিরে আসবে না। ফ্যাসিস্টদের মতো নির্বাচন বাধাগ্রস্তের চেষ্টা না করে, বিএনপির প্রতি নির্বাচনে আসার আহ্বান জানান তিনি। নির্বাচনে না আসলে তৃণমূলের কর্মীরাই বিএনপির নেতাদের ধাওয়া দেবে, আর তখন তারা ধাওয়া খেয়েও পালিয়ে বাঁচবে না।

তিনি আরও বলেন, দেশকে সবক্ষেত্রে এগিয়ে নিচ্ছে শেখ হাসিনা সরকার। বাংলাদেশে করোনার টিকা বিনামূল্যে দিয়েছে সরকার। বিশ্ব অর্থনীতি খারাপ অবস্থায় আছে। অর্থনৈতিক খারাপ অবস্থা থেকে শেখ হাসিনার সরকারই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন।

‘শান্তি সমাবেশে’ দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, যে বাংলাদেশ একসময় ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে চিহ্নিত হয়েছিল, সেই দেশকে উন্নয়ন আর অগ্রগতির দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে আওয়ামী লীগের শাসনামলে। তিনি বলেন, কিছু রাজনৈতিক দল উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতে রাস্তায় নেমে অস্থিতিশীলতা তৈরি করছে। শুধু এখনই নয়, সব সময় তারা দেশের মানুষের বিরুদ্ধে কাজ করে গেলে। ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড ছাড়া তারা আর কিছু করতে জানে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আর নির্বাচন হবে না। বিএনপি নেতাদের প্রতি সংবিধান অনুসারে বাতিল হওয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি নিয়ে রাস্তায় না নামার আহ্বান জানান তিনি। তিনি বলেন, ভারতের উলফা নেতা অনুপ চেটিয়া আবারও বলেছেন, ২০০৪ সালে বিএনপির শাসনামলেও ১০ ট্রাক অস্ত্র আনা হয়েছিল। তারা দেশকে সন্ত্রাসের স্বর্গরাজ্য বানিয়েছিল। বিএনপির উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, আন্দোলন আন্দোলন খেলা বন্ধ করুন। এটা করে আপনারা এ সরকারকে ক্ষমতা থেকে নামাতে পারবেন না। বরং সরকারের উন্নয়নকে সহযোগিতা করে মানুষের আস্থা অর্জন করুন।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নুরুল আমিন রুহুলের সভাপতিত্বে ও প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সাইফুন্নবী চৌধুরী সাগরের সঞ্চালনায় শান্তি সমাবেশে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ূন কবির। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সরফুদ্দিন আহমেদ সেন্টু, হেদায়েতুল ইসলাম স্বপন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন আহমেদ মহি, সাংগঠনিক সম্পাদক আকতার হোসেন ও গোলাম সারোয়ার কবির, দফতর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ প্রমুখ।

এদিকে গতকাল সকালে গাজীপুরের কালীগঞ্জে বাংলাদেশ অভিনয় শিল্পী সংঘ আয়োজিত সাধারণ সভা সম্মিলন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশের বিভক্ত রাজনীতিতে সেতু তৈরি না হয়ে দেয়াল উঁচু থেকে উচু হচ্ছে। এই অলঙ্ঘনীয় দেয়াল ভেঙে সম্প্রীতির সেতু তৈরি করতে হবে। বাংলাদেশের অস্তিত্বের জন্য জীবনধারায় ও গনতন্ত্র চর্চার জন্য রাজনীতিতে সেতু নির্মাণ আবশ্যক হয়ে উঠেছে।

প্রতিবেশী ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চেয়ে বাংলাদেশের নাটক গুণে মানে, অভিনয়ে, সংলাপে অনেক সমৃদ্ধ উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, সংস্কৃতি নিয়ন্ত্রণের কোনো বিষয় নয়। শেখ হাসিনার সরকার অভিনয়ের কালো আইন তুলে দিয়েছে।

অভিনয় শিল্পী সংঘের সভাপতি আহসান হাবিব নাসিমের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী পর্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন অভিনয় শিল্পী মামুনুর রশিদ, তারিক আনাম খান, দিলারা জামান, ডলি জহুর, শহিদুল আলম সাচ্চু ও আমিনুল হক চৌধুরী। পরে সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী মঙ্গলপ্রদীপ প্রজ্বলন করে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন।