ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

জাতীয় নির্বাচনের জোর প্রস্তুতি

ভোটের আগে রাজনৈতিক সংলাপে যাচ্ছে না ইসি

ভোটের আগে রাজনৈতিক সংলাপে যাচ্ছে না ইসি

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোর প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোকে অংশগ্রহণ করার জন্য নতুন করে আর কোনো সংলাপ করবে না সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। নিবন্ধিত দলগুলোর মধ্যে যেসব দল ভোটে আসার জন্য অগ্রহী তাদের নিয়েই নির্বাচন হবে।

সূত্র জানায়, রোডম্যাপ অনুয়ায়ী সব কাজ সময়মতো করে যাচ্ছে ইসি। রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ এর আগে করেছে ইসি। এখন সীমানা, ভোটার তালিকা, ভোটকেন্দ্র, নতুন দল নিবন্ধনসহ সব কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। চলতি বছরের ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। এ ভোটে বিএনপিসহ অনেক দল না আসতে চাইলেও তাদের আনার জন্য নতুন করে কোনো উদ্যোগ নিবে না ইসি।

ইসির একজন নির্বাচন কমিশনার আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, আমরা আইন অনুযায়ী ভোট করব, কে আসল কে আসল না এটা আমাদের দেখার কাজ না। আমাদের দায়িত্ব আইন অনুযায়ী সুন্দর ভোট করা। যে ক’টি দল ভোটে আসবে তাদের নিয়ে আমরা ভোট করব।

এ কমিশনার আরো বলেন, আমরা সংলাপ করেছি অনেকে আসেননি আমাদের কিছু করার নেই। আর নতুন করে ভোটে আনার জন্য আমরা কোনো সংলাপ করব না। তারা চাইলে যে কোনো সময় আমাদের সঙ্গে কথা বলতে পারেন। এদিকে নির্বাচনের জোর প্রস্তুতির অংশ হিসেবে শুরু হয়েছে নির্বাচনি কেনাকাটাও। নির্বাচনের ব্যালট পেপার ছাপতে প্রায় ৭০০ টন কাগজ অর্ডার করেছে নির্বাচন কমিশন। আজ নির্বাচনের অন্যান্য মালামাল কেনা নিয়ে বৈঠকে বসছে ইসি সচিবালয়। চলতি বছরের ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ইসি কেনাকাটা শুরু করেছে।

নির্বাচন কমিশন আগামী বাজেটে মোট ৫ হাজার ৪৮৫ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়েছে। এর মধ্যে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, ইভিএম মেরামত, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ও বিভিন্ন স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নির্বাচনের জন্য আগামী অর্থবছরে ৩ হাজার ৯৫৪ কোটি টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ১ লাখ ১০ হাজার ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) মেরামতের জন্য চাওয়া হয়েছে ১ হাজার ২৫৯ কোটি ৯০ লাখ টাকা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এবারে নির্বাচনি ব্যয় দ্বিগুণের বেশি হচ্ছে। কেননা ২০১৮ সালে সংসদ, উপজেলা ও সিটি নির্বাচনের জন্য মাত্র দেড় হাজার কোটি টাকা চাওয়া হয়েছিল। এবারের সেই ব্যয় দ্বিগুণের বেশি হচ্ছে।

এর আগে ইসির সঙ্গে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপ থেকে পাওয়া মতামত থেকে জানানো হয়, কোনো দলকে নির্বাচনে অংশগ্রহণে বাধ্য করতে পারে না এবং সে ধরনের কোনো প্রয়াস কমিশন গ্রহণ করবে না।

রাজনৈতিক দলগুলো থেকে পাওয়া পরামর্শ ও মতামত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, অধিকাংশ দলের পরামর্শ ছিল নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হতে হবে অর্থাৎ নির্বাচনে সবগুলো, বিশেষত প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সক্রিয় রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। কয়েকটি দলের পক্ষে পরামর্শ ছিল নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হওয়া বাঞ্ছনীয়। তবে, কোনো দলকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে বাধ্য করা বা জবরদস্তি করা যাবে না। সবগুলো দলের পক্ষে পরামর্শ ছিল নির্বাচন অবাধ হতে হবে। ভোটারদের স্বাধীন ভোটাধিকার প্রয়োগে সম্ভাব্য সব প্রতিবন্ধকতা অপসারণ করে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড প্রতিষ্ঠা করে নির্বিঘ্নে ভোটাধিকার প্রয়োগের অনুকূল পরিবেশ ও সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।

এ বিষয়ে ইসির মতামত হচ্ছে, নির্বাচন কমিশন সবগুলো দলের বিশেষ করে, প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সক্রিয় অংশগ্রহণ আন্তরিকভাবে প্রত্যাশা করে। নির্বাচন কমিশন কোনো দলকে নির্বাচনে অংশগ্রহণে বাধ্য করতে পারে না এবং সে ধরনের কোনো প্রয়াস নির্বাচন কমিশন গ্রহণ করবে না। তবে, সবগুলো দলকে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার আহ্বান শেষ পর্যন্ত আন্তরিকভাবেই বহাল থাকবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত