ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

করোনার টিকাদান বন্ধ হচ্ছে ২৮ ফেব্রুয়ারি

করোনার টিকাদান বন্ধ হচ্ছে ২৮ ফেব্রুয়ারি

বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে চলমান টিকা কর্মসূচি আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সরকারের কাছে থাকা করোনা টিকাগুলোর মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। অর্থাৎ, ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলমান টিকা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। গতকাল বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের টিকা শাখার পরিচালক ডা. সাইদুজ্জামান ঢাকা মেইলকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ডা. সাইদুজ্জামান বলেন, আমাদের হাতে থাকা ফাইজারের টিকাগুলোর মেয়াদ আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি শেষ হয়ে যাবে। করোনার তৃতীয় ও চতুর্থ ডোজ ফাইজারের ভ্যাকসিনে দেওয়া হচ্ছে। এই কারণে ২৭ ফেব্রুয়ারির পর নতুন করে কাউকে টিকা দেয়া হবে না। তবে সিনোফার্মার টিকা আছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের হাতে এখনও সিনোফার্মার টিকা রয়েছে। এটি প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ হিসেবে দেয়া হচ্ছে। আর প্রথম ও দ্বিতীয় বুস্টারের দুই ডোজ টিকা ফাইজারের মাধ্যমে দেয়া হচ্ছে। এ অবস্থায় ফাইজারের মেয়াদ শেষ হওয়ায় ওইগুলো বন্ধ থাকবে। তবে সিনোফার্মারগুলো চালু থাকবে। আর যারা প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ ফাইজারের নিতে চায় তাদেরকেও অপেক্ষা করতে হবে। তবে বিশেষ কারণ ছাড়া শিশু ব্যতিত প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ দেয়া বন্ধ থাকায়, এর মাধ্যমে কার্যত টিকা কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ থাকছে বলেও জানান তিনি। কবে নাগদ টিকা কার্যক্রম পুনরায় চালু হবে জানতে চাইলে ডা. সাইদুজ্জামান বলেন, টিকার মেয়াদ শেষ হওয়ায় দ্রুত সময়ের মধ্যে নতুন করে টিকা আনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। শিগগিরই সেটা আমাদের হাতে এসে পৌঁছাবে। নতুন টিকাগুলো ফাইজারের। তা এরই মধ্যে বাংলাদেশের পথে রয়েছে। টিকা দেশে আসলে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের ছাড়পত্র পাওয়ার পর পরই টিকা কার্যক্রম পুনরায় চালু করা হবে। এ লক্ষ্যে আমাদের সব প্রস্তুতি রয়েছে, ছাড়পত্র পাওয়ার পর দ্রুততম সময়ের মধ্যে নতুন টিকাগুলো সারাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হবে এবং টিকা কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে চলবে। আমাদের সব পরিকল্পনা এবং টিকা পরিবহণের জন্য গাড়িও প্রস্তুত রয়েছে। এ বিষয়ে কোনো ধরনের ফরমালিটি পালন করা হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, পুনরায় ভ্যাকসিন কার্যক্রম শুরুর বিষয়ে আমাদের সুনির্দিষ্ট কোনো তারিখ নির্ধারণ করা নেই। আমরা কোনো ফরমালিটির মধ্যে যাব না। নতুন ভ্যাকসিন হাতে পাওয়ার পরে স্বাভাবিকভাবে টিকা দেয়া হবে। এদিকে সরেজমিনে রাজধানীর একাধিক টিকা কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, বেশিরভাগ টিকা কেন্দ্রই খালি পড়ে আছে। টিকা গ্রহীতাদের আনাগোনা না থাকায় অলস সময় পার করছেন স্বেচ্চাসেবকসহ দায়িত্বপ্রাপ্ত নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। এ অবস্থার মধ্যে ২৭ তারিখের পর টিকাদান কর্মসূচি বন্ধ থাকবে বলে জানানো হয়েছে কর্মীদের। একই চিত্র রাজধানী ঢাকার অন্যতম প্রধান টিকা কেন্দ্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ)। টিকা কেন্দ্রের দায়িত্বরতরা জানান, কেন্দ্রটিতে করোনার প্রথম ও দ্বিতীয় বুস্টার কার্যক্রম চলমান আছে। তবে টিকা নিতে আসা মানুষের সংখ্যা খুবই কম। প্রতিদিন গড়ে ২০০ থেকে ২৫০ জন মানুষ টিকা গ্রহণ করেন। তাই বেশিরভাগ সময় নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকরা অলস সময় পার করেন। টিকা কার্যক্রম বন্ধের বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বলেন, আমাদের বলা হয়েছে ২৭ তারিখ পর্যন্ত টিকা কার্যক্রম চলবে। এরপর স্বাস্থ্য বিভাগের বৈঠকের পর পুনরায় চালু করা হবে কি না, সে বিষয়ে আমাদের জানানো হবে। একই বিষয়ে রাজধানীর টিবি হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. আয়েশা আক্তার শিল্পী ঢাকা মেইলকে বলেন, সরকারের হাতে থাকা টিকার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় আপাতত টিকা কার্যক্রম বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়েছে। আমাদের কেন্দ্রসহ সব কেন্দ্রে এ বিষয়ে জানানো হয়েছে। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে তা আবারও চালু হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত