ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে নির্যাতন

উদ্বিগ্ন সাধারণ শিক্ষার্থী উৎকণ্ঠায় অভিভাবক

কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা রাজনৈতিক প্রশ্রয় ও বিচারহীনতাই দায়ী শিক্ষাবিদদের অভিমত
উদ্বিগ্ন সাধারণ শিক্ষার্থী উৎকণ্ঠায় অভিভাবক

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) একটি আবাসিক হলে সম্প্রতি গভীর রাতে ছাত্রীকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণসহ নানাভাবে নির্যাতনের ঘটনা দেশব্যাপী আলোচিত হচ্ছে। ছাত্রলীগের দুই নেত্রী ও তাদের কয়েকজন সহযোগী এ ঘটনায় জড়িত বলে সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ। অভিযুক্তদের নানা হুমকি উপেক্ষা করে ও জীবনের ঝুঁকি নিয়েই ভুক্তভোগী তার নির্যাতনের বিষয়টি প্রকাশ করায় এ নিয়ে এখন তোলপাড় হচ্ছে। ঘটনার তদন্ত করছে বিচার বিভাগীয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আলাদা কমিটি। এরইমধ্যে দ্রুত তদন্তকাজ শেষে গতকাল রোববার প্রতিবেদন জমা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটি।

শুধু ছাত্রী নির্যাতনের এ ঘটনাই নয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলে এর আগেও নেতা-নেত্রীদের হাতে আবাসিক শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ধরনের হয়রানি ও নির্যাতনের বহু ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। এর আগে রাজধানীর ইডেন কলেজ হোস্টেলে ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনাও বেশ আলোচিত হয়েছিল। কয়েকদিন আগেও কলেজটির হোস্টেলে ছাত্রীদের মারধরসহ নানা নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। এছাড়া দেশের বড় বড় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন কলেজের আবাসিক হল ও ছাত্রাবাসে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, সিট বাণিজ্য, শিক্ষার্থীদের হয়রানি ও নির্যাতনের ঘটনা তো লেগেই থাকে। এমনকি মাঝেমধ্যে শিক্ষকরাও নির্যাতনের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছেন না।

একইভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন পাবালিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে ক্ষমতাসীন ছাত্র নেতাদের হাতে ‘গেস্টরুম’ ‘র‍্যাগিং’সহ নানাভাবে প্রতিপক্ষ বা সাধারণ শিক্ষার্থীদের নির্যাতনের ঘটনা অব্যাহত আছে। চাঁদাবাজি, ছিনতাইয়ের মতো অপরাধেও জড়াচ্ছে অনেক শিক্ষার্থী।

উদ্ভুত পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট আবাসিক শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের মাঝে চরম নিরাপত্তাহীনতা ও উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে বলে জানা গেছে। মূলত, রাজনৈতিক প্রশ্রয় ও লেজুড়বৃত্তির কারণে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা এবং নানা অপকর্মের দৃষ্টান্তমূলক বিচার না হওয়ার কারণেই এ ধরনের অনৈতিক ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড থামছে না বলে অনেকের অভিমত। এতে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশও চরমভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে বলেও সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সুবর্ণা মজুমদার বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোয় নির্যাতনের বিচার হয় না বলে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা বেপরোয়া হয়ে পড়েছে।

সম্প্রতি চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রাবাসাসে ছাত্রলীগ নেতাদের হাতে নির্যাতনের শিকার হন চার ছাত্র। কয়েকদিন আগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি হলে ছাত্রলীগ নেতাদের মধ্যে সংঘর্ষ ও হলের কক্ষ ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে গত শুক্রবার পুলিশ দুটি হলে অভিযান চালিয়ে তিনটি রামদা ও বেশ কয়েকটি স্ট্যাম্প উদ্ধার করে বলে জানা গেছে।

এদিকে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে না যাওয়ায় গত বুধবার সন্ধ্যার পর রাজশাহী কলেজের মুসলিম হোস্টেলের বিভিন্ন কক্ষে ঢুকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা শিক্ষানবিশ দুই সাংবাদিকসহ অন্তত ৩০ শিক্ষার্থীর ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালায় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত তিন নেতাকে গত শুক্রবার সংগঠনটির পক্ষ থেকে শোকজ করা হয়েছে বলেও জানা গেছে।

জানা যায়, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী কৃষ্ণ রায়কে তার সিট থেকে বের হয়ে যেতে বলেন ছাত্রলীগের নেতারা। তিনি বের হতে না চাইলে তাকে মারধর করে তার সিটে আরেকজনকে তুলে দেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে তাকে এক নেতার কক্ষে ডেকে নিয়ে ফের মারধর করা হয় এবং ‘শিবির’ অ্যাখ্যা দিয়ে মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হয়। এ ঘটনায় মঙ্গলবার ভুক্তভোগী প্রক্টর ও হল প্রাধ্যক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। হল প্রশাসন তদন্ত কমিটিও গঠন করেছে। এর আগের দিন সন্ধ্যায় ফোকলোর বিভাগের নবীনবরণ ও বিদায় অনুষ্ঠান চলাকালে চেয়ার ভাঙচুর করে ছাত্রলীগের কর্মীরা। এ ঘটনায় জড়িত দুই ছাত্রলীগ কর্মীকে ধরে ফোকলোর বিভাগের কার্যালয়ে নিয়ে শিক্ষকরা জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় সংগঠনটির এক নেতা উপস্থিত হয়ে তাদের সেখান থেকে বের করে আনেন। এ সময় তিনি শিক্ষকদের সঙ্গে অসদাচরণ করেন বলেও অভিযোগ করেন ফোকলোর বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেন।

সূত্রমতে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আবাসিক হলগুলোতে শিক্ষার্থী নির্যাতন নতুন নয়। বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থীরা নির্যাতনের শিকার হয়ে আসছেন। করোনা মহামারির পরের সময়ে সিট দখল ও নির্যাতনের পরিমাণ আরো বেড়েছে। ছাত্রলীগের মারধরে কানের পর্দা ফেটে হাসপাতালে চিকিৎসাও নিয়েছেন এক শিক্ষার্থী। চূড়ান্ত পরীক্ষা চলাকালীন মার খেয়ে ভয়ে ক্যাম্পাস ছেড়ে বাড়ি গিয়ে কুরিয়ারে অভিযোগও পাঠিয়েছেন এক শিক্ষার্থী। মধ্যরাতে মারধর করে হল থেকে বের করে দেয়া, হুমকিধমকি ও বিছানাপত্র বের করে দেয়ার মতো অভিযোগের স্তূপ জমা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে। তবে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। বরং ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়ার পরও অনেকটা নীরব থাকছে প্রশাসন।

বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ অধ্যাপক ড. মোহা. হাছানাত আলী বলেন, আবাসিক হল-ক্যাম্পাসে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য দায়ী সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নির্লিপ্ততা। যেহেতু হলের সিট বাণিজ্য, যৌন হয়রানি ও নির্যাতনসহ সাম্প্রতিক বিভিন্ন ঘটনায় ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীরা জড়িত, আর সংশ্লিষ্ট হল প্রভোস্ট, প্রক্টর, ভিসিদের অতিমাত্রায় দলীয় লেজুড়বৃত্তির কারণেই এসব ঘটনা থামছে না। তবে কর্তৃপক্ষ ইচ্ছা করলে এসব কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে পারে।

তিনি বলেন, শিক্ষাঙ্গনের যে কোনো একটি অপরাধকে ধরে যদি অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের ব্যবস্থা করা যায় তাহলে পরিস্থিতি পাল্টে যাবে। যথাযথ বিচার না হওয়ার কারণেই সংশ্লিষ্টরা আরো নিত্য-নতুন পদ্ধতিতে হয়রানি-নির্যাতনসহ নানা অপকর্ম চালাচ্ছে।

সূত্রমতে, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও বড় বড় কলেজগুলোর আবাসিক হলে সিট পেতে শিক্ষার্থীদের চাহিদা ও আগ্রহ থাকে খুব বেশি। কারণ শিক্ষার্থীদের তুলনায় আবাসিক সিটের সংখ্যা খুবই কম। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের তথ্য অনুযায়ী দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মাত্র ৩৬ শতাংশ শিক্ষার্থী আবাসিক সুবিধা পেয়ে থাকে। আর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসিক সুবিধা আছে মাত্র ৩ দশমিক ৪৯ শতাংশ শিক্ষার্থীর।

সূত্রমতে, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মেধার ভিত্তিতে আবাসিক হলের সিট বরাদ্দ দেয়া হয়। তবে হলগুলো ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনের দখল বা নিয়ন্ত্রণে থাকায় সিট বরাদ্দ পেলেও নেতাদের মাধ্যমে ছাড়া সিটে ওঠার সুযোগ পায় না কেউ। এক্ষেত্রে হল কর্র্র্র্তৃপক্ষকেও অনেকটা অসহায় অবস্থানে থাকতে দেখা যায়। আর এই সুযোগে সিট বাণিজ্য বা অঘোষিতভাবে দলীয় ভিত্তিতে সিটে ওঠার সুযোগ দেয়া হয়। তাই আবাসিক শিক্ষার্থীদের জোরপূর্বক রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ, ভিন্ন মতাদর্শী বা অন্য কোনো কারণে কথায় কথায় নির্যাতনের শিকার হতে হয় তাদের। বিশেষ করে ছাত্রীদের অনেকে যৌন নির্যাতনেরও শিকার হন।

আবাসিক হলের এ পরিস্থিতির কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক জানান, আবাসিক হলগুলোতে মেধার ভিত্তিতে সিট বরাদ্দ দেয়া হলেও ক্ষমতাসীন সংগঠন-ছাত্রলীগ নেতাদের কথা ছাড়া কেউ তাতে উঠতে পারে না। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক সব পদেও তাদের পরামর্শে নিয়োগ হয়। তাদের মতের বাইরে গেলে কারো পদে থাকতে দেয়া হয় না। প্রশাসনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকরা ছাত্রনেতাদের কথার বাইরে যেতে পারেন না। রাজনৈতিক কারণে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে সাম্প্রতিক নির্যাতনের ঘটনারও বিচার হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা প্রকাশ করে তিনি বলেন, এ ধরনের কর্মকাণ্ড বন্ধের জন্য প্রশাসনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকদের অভিভাবকের ভূমিকায় থাকতে হবে। তাদের রাজনৈতিক লেজুড়বৃত্তি বন্ধ করতে হবে।

ইবিতে ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা : ইবি প্রতিনিধি জানান, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন রেজিস্ট্রার দপ্তরে জমা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় তদন্ত কমিটি। গতকাল রোববার সকাল ১০টার দিকে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. রেবা মণ্ডল ৫০০৯নং স্মারকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে প্রতিবেদনটি জমা দেন। জানা যায়, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি শনিবার থেকে এ তদন্ত কার্যক্রম হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার এইচএম আলী হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, গতকাল সকাল ১০টায় নির্যাতনের তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা শেষে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় তদন্ত কমিটি। এখানে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী, অভিযুক্ত শিক্ষার্থী, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি ও শেখ হাসিনা হলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাক্ষাৎকার এবং তথ্য-উপাত্ত রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, প্রতিবেদনের ভিত্তিতে মহামান্য হাইকোর্ট যে নির্দেশনা দেবেন সেই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গতকাল উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালামের ব্যক্তিগত সহকারী মিল্টনের মাধ্যমে তদন্তের সিলগালা কপি অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ে জমা দেয়ার কথা।

এ বিষয়ে কমিটির সদস্য অধ্যাপক ড. দেবাশীষ শর্মা বলেন, ‘কর্তৃপক্ষ আমাদের একটি দায়িত্ব দিয়েছিলেন আমরা সেটি পালন করেছি। ভিসির নিকট প্রতিবেদনটি পৌঁছানোর জন্য রেজিস্ট্রার বরাবর দিয়েছি। এখন পরবর্তী করণীয় তারা ঠিক করবেন।’

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয় তদন্ত কমিটির এক সদস্য বলেন, তদন্ত কমিটির সবার স্বাক্ষর সংবলিত ১১ পৃষ্ঠার একটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়েছে। আরো বিভিন্ন নথি সংযুক্ত করে দেয়া আছে। হলের অন্তত ২০ জন ছাত্রীর সঙ্গে এসব বিষয়ে কথা হয়েছে কমিটির। প্রতিবেদনে সব বিষয় খতিয়ে দেখে শুধু যেটা ঘটেছে সেই মূল ঘটনা উপস্থাপন করা হয়েছে। এখানে কমিটির পক্ষ থেকে কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়নি। এর আগে ছাত্রী নির্যাতনের নানা দিক খতিয়ে দেখতে ২৫ ফেব্রুয়ারি তথ্য-উপাত্ত নিয়ে পর্যালোচনায় বসে তদন্ত কমিটি। আইন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. রেবা মণ্ডলের কক্ষে কমিটির সদস্যদের একত্রিত হওয়ার কথা থাকলেও, সেদিন তারা অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. দেবাশীষ শর্মার কক্ষে বসেন।

প্রসঙ্গত, গত ১২ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে সাড়ে চার ঘণ্টা আটকে রেখে নির্যাতন করার অভিযোগ করেন ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ফুলপরী খাতুন নামে এক নবীন শিক্ষার্থী। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরীর নেতৃত্বে তার অনুসারীরা তার ওপর নির্যাতন চালিয়েছেন। ১২ ফেব্রুয়ারি রাতে নির্যাতনের সময় তাকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ, এলোপাতাড়ি থাপ্পড়, বিশ্রী গালাগাল, মুখ দিয়ে নোংরা গ্লাস পরিষ্কার করা এবং এ ঘটনা কাউকে জানালে মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হয়।

এ ঘটনায় ১৪ ফেব্রুয়ারি সকালে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ফুলপরী তাদের বিরুদ্ধে প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদাৎ হোসেন আজাদ ও ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরীন বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। তবে ঘটনাটি অস্বীকার করে পাল্টা অভিযোগ করেন অভিযুক্তরা। উভয় পক্ষের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় হল ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুইটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত