ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

রাজধানীর ঝুঁকিপূর্ণ অবকাঠামো

ভূমিকম্প ও আগুনে প্রাণহানির আতঙ্ক

রাজধানীতে ফায়ার সেফটি না মানা ভবনগুলোয় অভিযানের উদ্যোগ
ভূমিকম্প ও আগুনে প্রাণহানির আতঙ্ক

এশিয়ার দেশ তুরস্ক, সিরিয়া ও তাজিকিস্তানে গত মাসে ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হানে। এছাড়া সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দফায় দফায় শক্তিশালী ভূমিকম্পে মারাত্মক বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হয়েছে বাংলাদেশের কাছাকাছি দেশ নেপাল, চীন, আফগানিস্তান, পাকিস্তান, জাপান, ইন্দোনেশিয়া, ইরান ও ভারতসহ এশিয়ার কয়েকটি দেশকে।

গত ৬ ফ্রেব্রুয়ারি এশিয়ার দেশ তুরস্ক ও সিরিয়ার সীমান্তে ৭ দশমিক ৮ মাত্রায় একটি এবং কয়েক মনিট পর ৭ দশমিক ৬ মাত্রার আরেকটি ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এতে প্রায় অর্ধলক্ষ মানুষ মারা গেছেন। এরপর আরও কয়েক দফায় ছোট-বড় অসংখ্য ভূমিকম্প হয় ওই অঞ্চলে। এতে মৃত্যু ছাড়াও গৃহহীন হয়ে পড়ে কয়েক লাখ মানুষ। এসব ভূমিকম্প পার্শ্ববর্তী জর্ডান, ইসরাইল ও মিশরেও অনুভূত হয়।

এশিয়ার দেশ তাজিকিস্তানে শক্তিশালী ভূমিকম্পে রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৭.২। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে শুধু এশিয়ার দেশগুলোতে ভূমিকম্পে কয়েক লাখ মানুষ মারা গেছে। ফলে এশিয়াজুড়ে ভূমিকম্পের আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা ও গুরুত্বপূর্ণ বিভাগীয় শহর চট্টগ্রাম এবং সিলেটও মারাত্মক ভূমিকম্প ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

তুরস্ক ও সিরিয়ায় দফায় দফায় শক্তিশালী ভূমিকম্পে মারাত্মক বিপর্যয়ের পর ঢাকার অপরিকল্পিত ঝুঁকিপূর্ণ অবকাঠামো নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। রিখটার স্কেলে সাত মাত্রার ভূমিকম্পের ধাক্কা রাজধানী শহর ঢাকা সামলাতে পারবে কি না তা নিয়েও সংশয় রয়েছে। ভূমিকম্প বিশ্লেষকরা মনে করছেন- তেমনটি হলে ধসে পড়বে কয়েক হাজার ভবন, মৃত্যু হবে অন্তত দুই থেকে তিন লাখ মানুষের।

বিভিন্ন সময় এশিয়া অঞ্চলের ভূমিকম্প বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ২০২২ সালের ২২ জুন আফগানিস্তানে আঘাত হানে ৬ দশমিক ১ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প। এতে প্রায় ১ হাজার ১০০ জন মারা যান। ২০১৮ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর এশিয়ার দেশ ইন্দোনেশিয়ায় ৭ দশমিক ৫ মাত্রার ভূমিকম্পে প্রায় ৪ হাজার ৩০০ জন মারা যান। আর ২০১৫-এর নেপালে ৭.৮ বা ৮.১ মাত্রার ভূমিকম্পে সে দেশের সরকারি হিসাবে ৮ হাজারের মতো নিহত হয়েছেন।

২০১৪ সালে ২ আগস্ট চীনের ইউনান প্রদেশে ৬ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্পে ৭০০ জন, ২০১৩ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলে আঘাত হানা ৭ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে ৮০০ জন মারা যান। আর ২০১১ সালের ১১ মার্চে জাপানে আঘাত হানে মহাশক্তিশালী ৯ মাত্রার ভূমিকম্প। সাগরের মাঝে হওয়া এ ভূমিকম্পের প্রভাবে সুনামির সৃষ্টি হয়। যা জাপান উপকূলে আঘাত হানে। ওই সুনামিতে প্রায় ২০ হাজার মানুষ মারা যান। ২০০৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রায় ৭ দশমিক ৫ মাত্রার ভূমিকম্পে ১ হাজার ১০০ জন নিহত হন। আর ২০০৮ সালের ১২ মে চীনের সিচুয়ানে ৭ দশমিক ৯ মাত্রার ভূমিকম্পে মারা যান ৮৭ হাজার ৫০০ জন। ২০০৬ সালের ২৬ মে ইন্দোনেশিয়ায় ৬ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্পে ৫ হাজার ৭০০ মানুষ প্রাণ হারান। তার আগের বছর ২০০৫ সালের ৮ অক্টোবর পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে ৭ দশমিক ৬ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্পে প্রাণ হারান ৮০ হাজার মানুষ। ২০০৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর ইন্দোনেশিয়ায় আঘাত হানে ৯ দশমিক ১ মাত্রার মহাশক্তিশালী ভূমিকম্প। ভারত মহাসাগরে সুনামির সৃষ্টি হয়। ওই অঞ্চলে অবস্থিত বেশ কয়েকটি দেশে সুনামি আছড়ে পড়ে। ভূমিকম্প ও সুনামিতে সে বছর ২ লাখ ৩০ হাজার মানুষ নিহত হন। তার আগের বছর ২০০৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর ইরানে ভূমিকম্পে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ নিহত হন। ২০০২ সালের ২৫ মার্চ উত্তর আফগানিস্তানে ৬ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্পে ১ হাজার মানুষ নিহত হন। আর ২০০১ সালের ২৬ জানুয়ারি ভারতের গুজরাটে ৭ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে প্রায় ২০ হাজার মানুষ প্রাণ হারান।

স্থানীয় দুর্যোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০০৪ সালে ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপ থেকে বাংলাদেশ পর্যন্ত অংশের টেকটোনিক প্লেটের ফাটল বরাবর একটি ভূমিকম্পে সৃষ্টি সুনামি প্রায় তিন ঘণ্টা পর উপকূলে আছড়ে পড়েছিল। ফাটলটি এখনো সক্রিয় আছে। ভূমিকম্প থেকে সুনামি সৃষ্টি হলে উপকূলের ৭১০ কিলোমিটার বিস্তৃত এলাকায় তা প্রায় ৪ মিটার (১৩ ফুট) উচ্চতায় আঘাত হানতে পারে। এগুলো হলে বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বাগেরহাট, খুলনা, বরিশাল, সাতক্ষীরা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের উপকূলীয় অঞ্চল বিপর্যস্ত হয়ে পড়তে পারে বলে অভিমত তাদের।

বাংলাদেশ, যুক্তরাষ্ট্র ও সিঙ্গাপুরের একদল গবেষকের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৪ সালে যে ফল্ট লাইনের ভূমিকম্পে সৃষ্ট সুনামিতে ২ লাখ ৩০ হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটেছিল, সেই একই ফল্ট লাইনে নতুন করে ভূমিকম্পের আশঙ্কা রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, এখানে ৪০০ বছর ধরে শক্তি সঞ্চিত হচ্ছে, যা যেকোনো সময় রিখটার স্কেলে ৯ মাত্রার মতো প্রচণ্ড শক্তিশালী ভূমিকম্প তৈরি করতে পারে। সে ক্ষেত্রে এ অঞ্চলের ১৪ কোটি মানুষের জীবন ঝুঁকিতে পড়তে পারে।

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূলের অংশবিশেষে কিছু পাহাড় রয়েছে। এসব পাহাড় প্রাকৃতিকভাবে সুনামির তীব্রতা রোধে ঢাল হিসেবে কাজ করতে পারবে। কিন্তু বরিশাল ও খুলনা উপকূলের সম্পূর্ণ অংশই অরক্ষিত। এখানকার উপকূলজুড়ে এ ধরনের প্রাকৃতিক ঢাল নেই, যা সুনামি থেকে উপকূলবাসীকে রক্ষায় কাজ করতে পারে।

২০১৬ সালের ৪ জানুয়ারি ৬ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছিল বাংলাদেশ। সেবার আতঙ্কেই মারা যান ৬ জন। সূত্র বলছে, গত ১৫ বছরে ছোট-বড় ভূমিকম্পে ১৪১ বার কেঁপে ওঠে বাংলাদেশ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ছোট ভূমিকম্পগুলো বড় ভূমিকম্পের আলামত। আবার বড় ভূমিকম্পের শত বছরের মধ্যে আরেকটি বড় ভূমিকম্প হয়। সে দিক থেকেও আগামী কয়েক বছরের মধ্যে বড় ধরনের ভূমিকম্পের আশঙ্কা প্রকট।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) বিভিন্ন সময়ে করা জরিপে দেখা যায়, ঢাকায় ১৩ লাখ, চট্টগ্রামে ৩ লাখ ও সিলেটে ১ লাখ বহুতল ভবন রয়েছে। এসব ভবনের ৭৫ শতাংশ হচ্ছে ছয়তলা বা তার চেয়েও উঁচু। ৭ মাত্রার ভূমিকম্প হলে এই ভবনগুলো ও এর বাসিন্দারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। সরকারের সমন্বিত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মসূচির সমীক্ষাতেই বলা হয়েছে, ৭ দশমিক ৫ মাত্রার ভূমিকম্প হলে রাজধানীতে প্রায় ৭২ হাজার ভবন ধসে পড়তে পারে।

বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মেহেদী আহমেদ আনসারি বলেন, গত দুই-তিন বছরে দেশে ভূমিকম্প অনেক বেড়েছে। আবার ১০০ বছরের মধ্যে আমাদের এখানে তেমন বড় ভূমিকম্প হয়নি। এটা আতঙ্কের বিষয়। তার মানে, ছোট এসব কম্পন শক্তি সঞ্চয় করছে। ফলে সামনে বড় ভূমিকম্পের শঙ্কা আছে। তুরস্কে যে ভূমিকম্প হয়েছে, এর চেয়ে ছোট, অর্থাৎ, রিখটার স্কেলে ৭ মাত্রার ভূমিকম্প হলেও শুধু ভবন ধস নয়, ঢাকার অপরিকল্পিত বিদ্যুৎ সঞ্চালন ও গ্যাসলাইন এ নগরকে একটি অগ্নিকূপে পরিণত করতে পারে। কয়েক হাজার ভবন ধসে পড়বে। মৃত্যু হতে পারে আড়াই থেকে তিন লাখ মানুষের। কারণ, আমাদের ভবনগুলো এখনও নিরাপদভাবে তৈরি হচ্ছে না।

ভূতত্ত্ববিদ ও উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বলেন- বাংলাদেশ ভৌগোলিকভাবে এমন এক জায়গায় অবস্থিত যেখানে যেকোনো সময় আট বা তারচেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্প হতে পারে। হুমায়ুন আখতার আরও বলেন, ঢাকায় ৬ লাখের বেশি ইমারত আছে। এদের ৬৬ শতাংশই নিয়ম মেনে হয়নি, ঝুঁকিপূর্ণ। বড় ধরনের ভূমিকম্প যদি হয়, তাহলে ক্ষয়ক্ষতি এখানেই বেশি হবে। একটা মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি হবে। ঢাকা যেভাবে গড়ে উঠেছে, তাতে রাতারাতি পরিবর্তন করে ফেলা যাবে না। এ কারণে এই ঝুঁকি সহজেই কমার সুযোগ নেই।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ অবজারভেটরির সাবেক এই পরিচালক ও তার সহ-গবেষকরা প্রায় দুই যুগ ধরে যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে এই অঞ্চলে ভূমিকম্পের সম্ভাবনা নিয়ে গবেষণা করছেন। তাদের গবেষণা অনুযায়ী, বাংলাদেশের ডাউকি ফল্টে ৮.২ মাত্রার ভূমিকম্প হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। তবে এই ভূমিকম্প ঠিক কোন সময়ে হবে, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। তার গবেষণার হিসাব অনুযায়ী, ভূমিকম্পে ঢাকা মেট্রোপলিটনের এক শতাংশ ভবনও যদি ধ্বংস হয় তাহলে ছয় হাজার ভবন বিধ্বস্ত হবে। যার ফলে অন্তত তিন লাখ মানুষ সরাসরি হতাহত হবেন। আর অপরিকল্পিতভাবে তৈরি শহরে ভূমিকম্প পরবর্তী উদ্ধার ও সেবার কাজ পরিচালনা বাধাগ্রস্ত হওয়ায় আরো বহু মানুষের জীবনের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।

ভূতত্ত্ববিদরা এও বলছেন, ভূমিকম্পের মতো দুর্যোগের পর নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে প্রয়োজনীয় খোলা জায়গা নেই ঢাকা শহরে। ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড (বিএনবিসি) মেনে চলার নির্দেশনা থাকলেও রাজধানীর বেশিরভাগ ভবন মালিকই তা মানছেন না। এ বিষয়ে আইন হওয়ার প্রায় ১৫ বছর পরও এটি ঠিকমতো বাস্তবায়ন না হওয়ায় রাজধানীতে বাড়ছে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন এবং ভূমিকম্পে ক্ষতির আশঙ্কা। সেই সঙ্গে বাড়ছে আগুন আতঙ্ক।

এসব কারণ মাথায় রেখে রাজধানীতে ফায়ার সেফটি আইন না মানা ভবনগুলোর বিরুদ্ধে সিটি করপোরেশন ও ফায়ার সার্ভিস যৌথ অভিযানে নামবে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তারের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন।

তিনি বলেন, যে কোনো কিছু বাস্তবায়ন করতে কিছুটা সময় লাগে। প্রথমে সিটি করপোরেশনের সঙ্গে যৌথভাবে আমরা অভিযানে যাব। যেসব ভবনে ফায়ার সেফটি আইন মানা হয়নি, সে বিষয় আমরা দেখব। আর অন্য বিষয়গুলো দেখবে নির্ধারিত ডিপার্টমেন্ট।

তিনি বলেন- বর্তমানে ফায়ার সার্ভিসে ১৪ হাজার কর্মী রয়েছে, তারা সবাই প্রশিক্ষিত। তাদের প্রতিনিয়ত প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছি। আমাদের ৯০ শতাংশ উন্নত যন্ত্রপাতিও আছে। তবে বড় দুর্যোগের ক্ষেত্রে এটি অবশ্যই যথেষ্ট নয়। তাই জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমাদের সহযোগী সংস্থাগুলোসহ কাজ করছি। যদি এমন কোনো ঘটনা ঘটে, উদ্ধারের প্রস্তুতির জন্য প্রশিক্ষণ ও মহড়া অব্যাহত রাখছি।

ডিজি বলেন, রাজধানী ঢাকা কতটা পরিকল্পিত এর উত্তর সবার কাছে আছে। বিষয় হচ্ছে, এমন কোনো ঘটনা ঘটলে আমি কতটুকু তৈরি। ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি ৬২ হাজার ভলান্টিয়ার তৈরির টার্গেট ছিল আমাদের। এরমধ্যে ৫০ হাজার তৈরি করেছি। তারা আবার অন্যদের প্রশিক্ষিত করছেন। এছাড়া স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। ১ লাখ ৩৩ হাজার গার্মেন্ট কর্মীকেও এই প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হয়েছে।

ঢাকায় অনেক ভবন রয়েছে যেগুলোতে প্রবেশের রাস্তা সরু। ফলে দুর্যোগের সময় উদ্ধার কর্মীদের প্রবেশে সমস্যা হয়। এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিসের ডিজির ভাষ্য, ‘ঢাকায় ভূমিকম্পের মতো বড় দুর্যোগ হলে আমরা ঢুকতে পারব কি না সেটা বিষয় না। ঢুকতেই হবে। এজন্যই প্রশিক্ষণ। তাই এমন কিছু হলে, আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।’

মহাপরিচালক বলেন, বিল্ডিং কোড অনুযায়ী যেসব ভবন হয়নি, সেগুলো শনাক্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সিটি করপোরেশন ও রাজউকের সঙ্গে কাজ করছি। যৌথভাবে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে বাস্তবায়নের চেষ্টা করছি। যেকোনো দুর্যোগ মোকাবিলায় সম্মিলিত চেষ্টা করতে হবে। ফায়ার সার্ভিসের অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি আছে, যেটা নেই তার জন্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলছি।

তিনি বলেন, আমাদের জন্য সত্যিই একটা ঝুঁকি। পুরান ঢাকার মতো যে জায়গাগুলো আছে, সেখানে হয়ত প্রশিক্ষিত জনবল থাকবে, ইকুইপমেন্ট থাকবে, কিন্তু আমরা পৌঁছতে পারব কি?

মহাপরিচালক বলেন, আরেকটি বিষয় আমাদের একটু লক্ষ্য রাখা দরকার, আমাদের মাটির নিচে সুয়ারেজ সিস্টেম আছে, গ্যাস সিস্টেম আছে, ইলেকট্রিসিটি সিস্টেম আছে, যখন ভূমিকম্প হবে তখন এগুলোর কী হবে? এই আজকের সেবামূলক সিস্টেমগুলোই কিন্তু আমাদের জীবননাশের হুমকি হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত