ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

এনসিটিবি সদস্য মশিউজ্জামান

বিতর্কহীন থাকার জন্যই দুটি বই প্রত্যাহার

বিতর্কহীন থাকার জন্যই দুটি বই প্রত্যাহার

ভুলত্রুটি নয়, বিতর্কহীন থাকা এবং সহনশীল পরিস্থিতির জন্যই চলতি শিক্ষাবর্ষের ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির দুটি বইয়ের পাঠদান প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) সদস্য (শিক্ষাক্রম) মো. মশিউজ্জামান।

গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে বিভিন্ন মহলের বিতর্কের মুখে চলতি শিক্ষাবর্ষের ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বিষয় ‘অনুসন্ধানী পাঠ’ বই দুটির পাঠদান প্রত্যাহারের ব্যাখ্যা দেন মো. মশিউজ্জামান।

‘বিজ্ঞানভিত্তিক, অসাম্প্রদায়িক, মানবিক ও সমতাভিত্তিক শিক্ষা পাঠ্যক্রমবিষয়ক অপপ্রচার বন্ধ হোক’ শীর্ষক এই গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে সামাজিক প্রতিরোধ কমিটি নামের একটি সংগঠন।

গত ১০ ফেব্রুয়ারি অনেকটা আকস্মিকভাবেই সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ওই দুটি বই প্রত্যাহারের কথা জানিয়েছিল এনসিটিবি। তবে, কী কারণে তা প্রত্যাহার করা হয়েছিল তার ব্যাখ্যা সেদিন দেয়া হয়নি। এ নিয়ে নানা আলোচনা চলছে। বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ উঠেছে, নির্বাচনের বছরে মূলত ‘রাজনৈতিক কারণেই’ সরকার বই দুটি প্রত্যাহার করে নেয়।

তবে প্রত্যাহারের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে আলোচনা সভায় এনসিটিবির সদস্য মো. মশিউজ্জামান বলেন, প্রত্যাহার হওয়া বই দুটিতে ভুলত্রুটি আছে বলে তারা মনে করেন না। তবে বানান ভুল থাকতে পারে। সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে তারা সবার কাছে বিতর্কহীন থাকার চেষ্টা করেন।

রাষ্ট্রও চায় সবার কাছে একটি সহনশীল পর্যায় থাকুক। সেরকম অবস্থায় তারা বিবেচনা করেছেন যে, এই দুটি পাঠ্যবই যদি প্রত্যাহারও হয়, তাতে শিক্ষার্থীরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়বে না। তবে এটি থাকলে হয়তো আরেকটু সহায়তা করত।

ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির দুটি বই প্রত্যাহার এবং অপপ্রচার প্রসঙ্গে মশিউজ্জামান আরো বলেন, গত ৩ জানুয়ারির পর তারা একটি জটিল পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে যান। তারা লক্ষ্য করেছেন, নির্বাচনের আগের বছরে এগুলো (অপপ্রচার) বেশি করা হয়। ২০১৭ সালেও অপপ্রচার হয়েছে। এবারের অপপ্রচার মাত্রাহীন এবং মিথ্যা প্রচারণায় ভরপুর ছিল। তাদের পক্ষ (সরকার ও এনসিটিবি) থেকে এগুলোর ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা ছিল।

আলোচনায় অংশ নিয়ে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, সরকারের অবস্থান ‘সাপ হয়ে দংশে, ওঝা হয়ে ঝাড়ে’-এর মতো।

অসাম্প্রদায়িক দেশটিকে পুরোপুরি উল্টো দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে মনে করেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী। আর সরকার আপসকামিতার পরিচয় দিচ্ছে বলে মনে করেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্ট্রি মফিদুল হক।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেমের সভাপতিত্বে ও সঞ্চালনায় গোলটেবিল বৈঠকে বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবীরসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিরা বক্তব্য দেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত