আনিছুরের নেতৃত্বে নতুন জঙ্গি সংগঠন

প্রকাশ : ০৩ মার্চ ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র প্রধানের নেতৃত্ব দিচ্ছেন আমির আনিছুর রহমান ওরফে মাহমুদ। আর দাওয়াতি শাখার প্রধান আব্দুল্লাহ মাইমুনের সদস্য ও অর্থ সংগ্রহবিষয়ক এবং উগ্রবাদী বক্তব্য সংবলিত ভিডিও প্রচার করছে। তাদের গ্রেপ্তারে র‍্যাবের গোয়েন্দা দল সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছে। গতকাল র‍্যাব সদর দপ্তর থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত বছরের ২৩ আগস্ট কুমিল্লা ও দেশের অন্যান্য অঞ্চল থেকে ৮ তরুণ নিখোঁজ হয়। এরই সূত্র ধরে র‍্যাবের গোয়েন্দা শাখা এবং অন্যান্য ব্যাটালিয়ন নিখোঁজ তরুণদের উদ্ধারে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। এক পর্যায়ে তরুণ নিখোঁজের ঘটনার পেছনের নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়। এই সংগঠনের ৫৫ জন সদস্য পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকী চীন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) ছত্রছায়ায় পার্বত্য চট্টগ্রামের গহীন অরণ্যে সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছে। এরই ধারাবাহিকতায় পার্বত্য চট্টগ্রামে গত বছরের ৩ অক্টোবর র‍্যাব ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান পরিচালিত হতে থাকে। র‍্যাবের অব্যাহত অভিযানে ৫৯ জন জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করে এবং জঙ্গি প্রশিক্ষণের সহায়তার অভিযোগে ১৭ জন কেএনএফ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে। এছাড়া র‍্যাব সংগঠনটির ২ জনকে ডির‍্যাডিকালাইজড করে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি র‍্যাবের গোয়েন্দা শাখা এবং র‍্যাব-৭ চট্টগ্রাম থেকে পাহাড়ে প্রশিক্ষণরত আরও ৪ জনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার আল আমিন ওরফে মিলদুকের হেফাজত থেকে উদ্ধারকৃত মোবাইল ফোনে নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র প্রধান নেতা বা আমির আনিছুর রহমান ওরফে মাহমুদ এবং দাওয়াতি শাখার প্রধান আব্দুল্লাহ মাইমুনের সদস্য ও অর্থ সংগ্রহবিষয়ক এবং উগ্রবাদী বক্তব্য সংবলিত চাঞ্চল্যকর ভিডিও কন্টেন্ট উদ্ধার করা হয়।

২২ জানুয়ারি সংগঠনের সামরিক শাখার প্রধান মাসুকুর রহমান ওরফে রনবীরকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের সময় তার মোবাইল ফোন থেকে ৮ মিনিট দৈর্ঘ্যরে আরও একটি ভিডিও উদ্ধার করা হয়। ভিডিওতে মোট ২৯ জন জঙ্গিকে শনাক্ত করা হয়। উদ্ধার হওয়া ৭ মিনিট দৈর্ঘ্যরে ভিডিওতে আরও ২৩ জন জঙ্গিকে শনাক্ত করা হয়। ২৩ জনের মধ্যে ১৯ জন জঙ্গি ২২ জানুয়ারি উদ্ধার হওয়া ভিডিওতেও ছিলেন। ভিডিওতে নতুন করে আরও ৪ জন জঙ্গির উপস্থিতি পাওয়া গেছে। তারা হলো- শেখ আহমেদ মামুন ওরফে রমেশ, শামিম মিয়া ওরফে বাকলাই ওরফে রাজান, নিজাম উদ্দিন হিরন ও ডা. জহিরুল ইসলাম ওরফে আহমেদ।

২৩ জানুয়ারি প্রকাশিত ভিডিও এবং ২ মার্চ প্রকাশিত ভিডিওতে শনাক্ত জঙ্গিদের মধ্যে র‍্যাব ১২ জনকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছে। বাকি জঙ্গিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান আছে।

ভিডিওটি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, মূলত অর্থ সংগ্রহ এবং সদস্য সংগ্রহের জন্য এই ভিডিওটি তৈরি করা হয়ে থাকতে পারে। অপরদিকে, দেশে বড় কোনো নাশকতা করার পর নিজেদের অস্তিত্ব দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মহলে জানান দেয়াও ভিডিওর উদ্দেশ্য হতে পারে।

সংগঠনটির নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরা অর্থাৎ প্রধান নেতা বা আমির আনিছুর রহমান, অর্থ ও মিডিয়া শাখার প্রধান রাকিব, দাওয়াতি শাখার প্রধান আব্দুল্লাহ মাইমুন। দুটি ভিডিও’র ব্যাকগ্রাউন্ড ভয়েস দিয়েছেন আল আমিন ওরফে বাহাই (নারায়ণগঞ্জ থেকে নিখোঁজ রিয়াসাত রায়হান, আবু বক্করের প্রাইভেট টিউটর) এবং ভিডিও এডিটিং করেছেন পাভেল নামে অপর এক জঙ্গি।