প্রিন্ট সংস্করণ
০০:০০, ০৩ মার্চ, ২০২৩
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেছেন, শিক্ষার্থীরা যে বিষয়েই অধ্যয়ন করুক না কেন তাদের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনাদর্শ, ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধসহ দেশ ও জাতির গৌরবগাঁথা ইতিহাস, ঐতিহ্য ও মহৎ অর্জন সম্পর্কে জানতে হবে। জাতিরাষ্ট্র গঠনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনন্য অবদান তুলে ধরে উপাচার্য বলেন, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্ব দিতে হবে। গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক বটতলায় ‘পতাকা উত্তোলন দিবস’ উদ্যাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য এসব বলেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবসহ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শাহাদাৎবরণকারী, জাতীয় চার নেতা ও মুক্তিযুদ্ধে শাহাদাৎবরণকারী ৩০ লাখ শহিদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে উপাচার্য বলেন, বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে তৎকালীন ছাত্র নেতারা ১৯৭১ সালের ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবন সংলগ্ন ঐতিহাসিক বটতলায় মানচিত্র খচিত পতাকা উত্তোলন করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করেই মহান মুক্তিযুদ্ধসহ সকল আন্দোলন-সংগ্রামের পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হয়। একটি জাতিরাষ্ট্র বিনির্মাণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই গৌরবগাঁথা অবদান বিশ্বের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এক বিরল দৃষ্টান্ত। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূইয়া ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা।
স্বাগত বক্তব্য দেন অনুষ্ঠানের সমন্বয়ক ও কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবদুল বাছির। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকার। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্যরা, বিভিন্ন হলের প্রাধ্যক্ষ, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সংগীত বিভাগের শিক্ষক আজিজুর রহমান।
বিশ্ববিদ্যালয় কলাভবন সংলগ্ন বটতলা প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। এসময় বিশ্ববিদ্যালয় সংগীত বিভাগ ও নৃত্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে জাতীয় সংগীত পরিবেশিত হয়।
সভাপতির ভাষণে প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ পতাকা উত্তোলনের পটভূমি তুলে ধরে বলেন, দেশের গৌরবময় ইতিহাস ও অজর্ন প্রজন্ম পরম্পরায় বহন করে নিতে হবে। ১৯৭১ সালের ২ মার্চ পতাকা উত্তোলন করা হয়। সেই দিনই ছাত্র সাংগ্রাম পরিষদ গঠন করা হয়। বঙ্গবন্ধু ৩ মার্চ থেকে ৬ মার্চ পর্যন্ত হরতাল পালনের নির্দেশ দেন। কার্যত সেই সময় থেকেই বঙ্গবন্ধুর কথায় তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান পরিচালিত হয় এবং তার ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের মাধ্যমে নিরস্ত্র বাঙালি স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে।
প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল পতাকা উত্তোলন দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বলেন, ২ মার্চ পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমেই বিশ্বকে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের অস্তিত্ব জানান দেয়া হয়েছিল। যে ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার মধ্যদিয়ে পতাকা উত্তোলন করা হয়েছিল তার নেতৃত্বে ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। মুক্তিযুদ্ধ ও দেশের স্বাধীনতার ইতিহাস তরুণ প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পতাকা উত্তোলন দিবসের তাৎপর্য অপরিসীম।
কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ ১৯৭১ সালের ২ মার্চ পতাকা উত্তোলনের ইতিহাস বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন।
আলোচনা পর্ব শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংগীত বিভাগ এবং নৃত্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা দেশের গান ও নৃত্য পরিবেশন করে।
