চা শ্রমিকরা বকেয়া মজুরি থোক হিসেবে জনপ্রতি ১১ হাজার টাকা করে পাবেন। গত বুধবার রাতে রাজধানীর বিজয়নগর শ্রম ভবনের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশীয় চা সংসদ (মালিকপক্ষ) এবং বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন নেতাদের সাথে মতবিনিময় শেষে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান এ ঘোষণা দেন। পরে রাতেই শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন চৌধুরী স্বাক্ষরিত একটি পরিপত্র জারি করা হয়।
পরিপত্রে বলা হয়েছে, চা শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি থেকে পরিশোধ-সংক্রান্ত বিষয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিরসনে বাংলাদেশীয় চা সংসদ (মালিকপক্ষ) এবং বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন (শ্রমিকপক্ষ) এর সাথে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান মতবিনিময় করেন। পরে তিনি চা শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি থোক হিসেবে পরিশোধের জন্য জনপ্রতি ১১ হাজার টাকা নির্ধারণ করে ঘোষণা করেন।
এই অর্থ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ তিন কিস্তিতে পরিশোধ করবেন। যার মধ্যে প্রথম কিস্তি আগামী ৭ মার্চের পূর্বেই পরিশোধ করতে হবে। বাকি দুই কিস্তি পরিশোধের সময় চা শ্রমিক এবং মালিকপক্ষ আলোচনা করে নির্ধারণ করবেন।
উল্লেখ্য, গত বছর ২৭ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে ৫০ বৃদ্ধি করে ১৭০ টাকা নির্ধারণ করে দেন। সেইসাথে মজুরি নির্ধারণের পাশাপাশি বার্ষিক ছুটি, বেতনসহ উৎসব ছুটি, অসুস্থতা ছুটি বাড়ানোর ঘোষণা দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণায় আরো বলা হয়- চিকিৎসা ব্যয়ের চাঁদা মালিকপক্ষ বহন করবে। ভবিষ্যৎ তহবিলে নিয়োগকর্তার চাঁদা আনুপাতিক হারে বাড়বে।’
এছাড়া ভর্তুকি মূল্যে রেশন সুবিধা বাড়ানো হবে। চিকিৎসা সুবিধা, অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিকদের পেনশন, চা শ্রমিকদের পোষ্যদের শিক্ষা বাবদ ব্যয়, রক্ষণাবেক্ষণ, গোচারণভূমি বাবদ ব্যয়, বিনা মূল্যে বসতবাড়ি ও রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ শ্রমিককল্যাণ কর্মসূচি এবং বাসাবাড়িতে উৎপাদন বাড়বে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পরের দিন থেকেই চা শ্রমিকরা বর্ধিত মজুরিসহ বর্ধিত অন্যান্য সব সুবিধাদি পেয়ে আসছেন। তবে শ্রমিকরা ২০২১ এর জানুয়ারি থেকে ২৭ আগস্ট ২০২২ পর্যন্ত সময়ের জন্য বর্ধিত মজুরির বকেয়া দাবি জানিয়ে আসছিলেন।
মতবিনিময় সভায় মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. এহছানে এলাহী, অতিরিক্ত সচিব তৌফিকুল আরিফ, শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন চৌধুরী, বাংলাদেশীয় চা সংসদ চেয়ারম্যান শাহ আলম, মহাসচিব ড. মোজাফফর আহম্মদ, কামরান টি রহমান, চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল, অর্থ সম্পাদক পরেশ কালিন্দীসহ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।