প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বল্পোন্নত দেশগুলোর পঞ্চম জাতিসংঘ সম্মেলনে যোগ দিতে গতকাল কাতারের রাজধানী দোহায় পৌঁছেছেন।
প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইট স্থানীয় সময় দুপুর দেড়টার দিকে দোহার হামাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
কাতার সরকারের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি এবং কাতারে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. নজরুল ইসলাম প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান। পরে প্রধানমন্ত্রীকে আনুষ্ঠানিক মোটর শোভাযাত্রা সহকারে বাসস্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। এর আগে গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটটি কাতারের রাজধানী দোহার উদ্দেশে যাত্রা করে। আজ থেকে আগামী ৯ মার্চ পর্যন্ত দোহায় অনুষ্ঠিতব্য এই সম্মেলনে এই গ্রুপের সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে এটি ঢাকার শেষ অংশগ্রহণ বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, বাংলাদেশ ২০২৬ সালের মধ্যে ফোরাম থেকে উত্তরণ লাভ করতে যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্মেলনে একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন। তিনি কাতারের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। ৮ মার্চ পর্যন্ত কাতারে অবস্থানকালে কাতারের আমিরের সঙ্গে তার বৈঠকের কথা রয়েছে। জ্বালানি খাতে সহযোগিতাসহ দ্বিপক্ষীয় বিষয়গুলো আলোচনায় স্থান পাবে। গতকাল বিকালে শেখ হাসিনার কাতার ন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে (কিউএনসিসি) জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস, ইউএনজিএ প্রেসিডেন্ট সাবা করোসি এবং ইউএনডিপি প্রশাসক আচিম স্টেইনারের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করার কথা।
আজ প্রধানমন্ত্রী কিউএনসিসিতে বিশেষ অতিথি হিসেবে সম্মেলনের উদ্বোধনী পূর্ণাঙ্গ সভায় বক্তব্য দেবেন। পরে তিনি কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি, রুয়ান্ডার প্রেসিডেন্ট পল কাগামে, বাণিজ্য ও উন্নয়নবিষয়ক জাতিসংঘ সম্মেলনের সেক্রেটারি জেনারেল রেবেকা গ্রিনস্প্যান এবং ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) মহাসচিব ডোরেন বোগদান-মার্টিনের সঙ্গে আলাদা বৈঠক করবেন।
এছাড়া তিনি কিউএনসিসিতে বিনিয়োগ ও অংশীদারত্বের ওপর এলডিসি-৫ সম্মেলনে উচ্চ পর্যায়ের নেতাদের মধ্যাহ্নভোজে যোগ দেবেন। যৌথভাবে বাংলাদেশ, লাওস এবং নেপাল আয়োজিত ‘২০২১ সালের উত্তরণের জন্য টেকসই ও সহজ রূপান্তর’ শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা দেয়ার কথা রয়েছে।
আগামীকাল শেখ হাসিনা সেন্ট রেজিস দোহায় ‘দ্য রাইজ অব বেঙ্গল টাইগার : পটেনশিয়াল অব ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক একটি ব্যাবসায়িক শীর্ষ সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করবেন। তিনি মালাবির প্রেসিডেন্ট ড. ল্যাজারাস ম্যাককার্থি চাকওয়েরার সঙ্গে বৈঠক করবেন।
তিনি কিউএনসিসি’তে স্মার্ট ও উদ্ভাবনী সমাজের জন্য এলডিসিতে গবেষণা ও উন্নয়নে বিনিয়োগ শীর্ষক একটি পার্শ্ব ইভেন্টে অংশগ্রহণ করবেন। এছাড়া আবাসিক স্থানে আঞ্চলিক দূত সম্মেলনে যোগ দেবেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী ৭ মার্চ বিশেষ অতিথি হিসেবে ‘আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও আঞ্চলিক সমন্বয়ে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি’ শীর্ষক একটি উচ্চ পর্যায়ের সংলাপে যোগ দেবেন। ডেনমার্কের উন্নয়ন সহযোগিতাবিষয়ক মন্ত্রী ড্যান জর্জেনসেনের সঙ্গে বৈঠক করবেন, এবং সহজ ও টেকসই উত্তরণের জন্য বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব : স্মার্ট বাংলাদেশের লক্ষ্যে অগ্রসর হওয়া শীর্ষক অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। পরে তিনি কাতারে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের আয়োজিত একটি নাগরিক সংবর্ধনায় যোগদান করবেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৮ মার্চ সকালে ঢাকার উদ্দেশে দোহা ত্যাগ করবেন।
