ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

অংশগ্রহণমূলক জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে পথ দেখাবে কে?

অংশগ্রহণমূলক জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে পথ দেখাবে কে?

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে নিয়ে সংকটে রয়েছে রাজনৈতিক মহল। নির্বাচন কমিশন (ইসি) বলেছে, আইন অনুযায়ী সময় মতো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। কে অংশগ্রহণ করবে, কে করবে না, সেটা রাজনৈতিক দলগুলোর বিষয়। নতুন করে আর সংলাপ করবে না সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দুই দলই নিজেদের অবস্থানে অনড়, এমন অবস্থায় অন্য কোন পক্ষ অংশগ্রণমূলক নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করবে, তা নিয়ে চলছে নানা আলাপ-আলোচনা।

সূত্র জানায়, আওয়ামীয় লীগ বলছে ইসির দায়িত্ব নির্বাচন করা। কোন দল নির্বাচনে অংশ নেবে, আর কোন দল নেবে না, সেটা ইসি দেখবে। সেটা আওয়ামীয় লীগের বিষয় না, কাউকে সংলাপে আনতে হলে ইসি অনবে। অন্যদিকে বিএনপি বলেছে তারা এ সরকারের অধীনে নির্বাচন করবে না।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তিন পক্ষ এখন পর্যন্ত তাদের অবস্থানে অনড়। শেষ পর্যন্ত এমন অবস্থা থাকলে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করতে তৃতীয় কোনো পক্ষকে মধ্যস্থতা করতে হবে। তারাই সব মহলকে আলোচনার টেবিলে বসাবে।

এর আগে নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিএনপি কিংবা অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে নতুন করে কোনো সংলাপের সুযোগ নেই। সিইসি বলেছেন, ‘বিএনপিকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের ব্যাপারে একাধিকবার অনুরোধ জানানো হয়েছে। অথচ বিএনপি আমাদের সে অনুরোধ বরাবরই প্রত্যাখ্যান করে আসছে। তারা নির্দলীয় সরকারের অধীনে এবং নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবিতে অনড়। এক্ষেত্রে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে নতুন করে বিএনপি বা অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপের আর কোনো সুযোগ নেই।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এই সরকার নির্বাচন করে ক্ষমতায় আসেনি, জোর করে এসেছে। ২০১৪ সালের নির্বাচনে তারা ১৫৪ জনকে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করে সংসদ গঠন করেছে। পরবর্তীকালে ২০১৮ সালে আগের রাতে ভোট ডাকাতি করে সরকার গঠন করেছে।

তিনি বলেন, আবার সামনে নির্বাচন আসছে। একইভাবে এই সরকার আবারো একটা পাতানো, ষড়যন্ত্রের নির্বাচনের পাঁয়তারা করছে। আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে ভোট কখনো নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু হবে না। এবার আওয়ামী লীগের অধীনে আর কোনো তামাশার নির্বাচন হতে দেব না। এ দেশের মানুষ হতে দেবে না।

বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে বিএনপি যাবে না বলেও জানিয়ে দেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘এই সরকারের অধীনে যদি কোনো নির্বাচন হয়, সেই নির্বাচন কখনোই সুষ্ঠু হবে না। সেই নির্বাচনে বিএনপি যাবে না। সবার আগে এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে। নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করতে হবে। পরে একটি নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে সেই কমিশনের অধীনে নির্বাচন দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার বলেছে, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। কোন সংবিধান? যে সংবিধান নিজের মতো করে কাটাছেঁড়া করা হয়েছে। যেখানে জনগণের কোনো অধিকার নেই, মানুষ ভোট দিতে পারে না।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করার পুরো দায় বিএনপির বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন। তিনি বলেন, যারা বলেছিল পাগল আর শিশুরা ছাড়া তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে কেউ নয়, এখন তারাই আবার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি করে। তারপরও যদি নির্বাচন নিয়ে সংলাপের প্রয়োজন থাকে, সেটা আওয়ামী লীগ একা চাইলে হবে না। সংলাপ হচ্ছে দুই পক্ষের বিষয়। তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে। দুটি কারণে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিতে চাচ্ছে না। প্রথমতো হতে পারে এমন, পার্লামেন্টারি ডেমোক্রেসিতে সারা পৃথিবীতে আপনি দেখবেন, পুরো নির্বাচনটা পরিচালিত হয় পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীকে কেন্দ্র করে। আওয়ামী লীগ কোনো সংঘাত চায় না। আমরা শান্তিপূর্ণ ও সুন্দর গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চাই। সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। কিন্তু কোনো দল যদি দেশের মধ্যে সংঘাত সৃষ্টি করতে চায় এবং নির্বাচন বানচালের চেষ্ট করে, তাহলে আওয়ামী ছাড় দেবে না। খালেদা জিয়া নিয়ে আমিনুল ইসলাম আমিন বলেন, বিএনপিতে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার মতো লোক নেই। কারণ, বিএনপির চেয়ারম্যান খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দুজনেই সাজাপ্রাপ্ত আসামি। তাই তারা কেউই নির্বাচন করতে পারবে না। তাছাড়া বিএনপিঘোষিত ২৭ দফায় একটি প্রস্তাব রয়েছে, এক ব্যক্তি দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবে না। ধরে নিলাম খালেদা জিয়া সাজাপ্রাপ্ত নয় কিন্তু এরই মধ্যে তিনি দুইবার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। এই প্রস্তাবের মধ্যদিয়ে বিএনপি খালেদা জিয়াকে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার থেকে দূরে রাখছে। এটা তারেক রহমানকে নির্দেশে কিনা রাজনীতি বিশ্লেষকদের কাছে বড় প্রশ্ন। এসব কারণে বিএনপি নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত