ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সাংবাদিকদের কাছে রাবি ভিসির দাবি

ক্যাম্পাসে আগুন ও হামলার সঙ্গে বহিরাগতরা জড়িত

ক্যাম্পাসে আগুন ও হামলার সঙ্গে বহিরাগতরা জড়িত

দুই দিন পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি স্থিতিশীল হয়েছে। তবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অগ্নিকাণ্ড ও হামলার সঙ্গে বহিরাগত বিশেষ গোষ্ঠী সম্পৃক্ত আছে বলে দাবি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার।

গতকাল দুপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনা সভায় তিনি এ দাবি করেন। এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন প্রত্যাহার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (আজ) থেকে যথারীতি ক্লাস ও পরীক্ষা চলবে।

উপাচার্য ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার আরও বলেন, শিক্ষার্থী প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনায় বসব। তিন সদস্য কমিটি পুনর্গঠন করে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট করা হয়েছে। সাতদিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

এর আগে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষের ঘটনায় অজ্ঞাত ৫০০ জনকে আসামি করে মামলা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ১২ মার্চ বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবদুস সালাম বাদী হয়ে নগরীর মতিহার থানায় মামলাটি করেন। গতকাল সকাল থেকে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের আনাগোনা খুব একটা লক্ষ্য করা যায়নি। তবে যে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন থাকে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে আন্দোলনকারীদের রাখা গাছের গুঁড়ি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। ফলে রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়কে ছোট যানবাহনগুলো চলাচল শুরু করেছে।

অন্যদিকে, রোববার রাত সাড়ে ১২টার পর ট্রেন চলাচলও স্বাভাবিক হয়েছে। গতকাল সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনের ব্যবস্থাপক আবদুল করিম। এর আগে গত রোববার রাত ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদসংলগ্ন রেললাইনে টায়ার ও চারুকলা অনুষদের শিমুল ফুলের ডামি জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় স্লিপার খুলে রেললাইন উপড়ে ফেলেন বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা।

এরপর রাত সাড়ে ১০টার দিকে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করার জন্য জলকামান নিয়ে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশের ক্রাইসিস রেসকিউ টিম। তাদের উপস্থিতি দেখে শিক্ষার্থীরা সরে পড়ে। এরপর রেলওয়ের কর্মকর্তারা এসে ক্ষতিগ্রস্ত রেললাইন মেরামত করে ট্রেন চলাচল উপযোগী করেন।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, আমরা প্রশাসনের মধ্যে বৈঠক করব। আসলে এ ঘটনায় কী করা যায়? পরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বসে তাদের দাবিগুলো শুনে কাজ শুরু করব। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কাজ চলমান রয়েছে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষের ঘটনায় অজ্ঞাত ৩০০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। রোববার রাতে নগরীর মতিহার থানা পুলিশের এসআই আমানত উল্লাহ বাদী হয়ে এই মামলা দায়ের করেন। গতকাল বেলা ১১টার দিকে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার বিভূতিভূষণ ব্যানার্জি বলেন, এই মামলায় সবাই অজ্ঞাত আসামি। পুলিশ বক্স ও মোটরসাইকেলে আগুন এবং সরকারি কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে এই মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অজ্ঞাতনামা ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করে। এছাড়া এ ঘটনায় তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কমিটিতে রাবির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক হুমায়ুন কবীরকে প্রধান করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর ও রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক তারিকুল হাসান এবং সহকারী প্রক্টর আরিফুর রহমান।

সংঘর্ষের ঘটনার তৃতীয় দিন গতকালও পুলিশ, র‍্যাব, সিআরটি ও ডিবি পুলিশসহ অন্যান্য আইন শৃঙ্খলাবাহিনী রাবি ও তার আশপাশের এলাকায় সতর্ক অবস্থান নেয়। প্রসঙ্গত, ১১ মার্চ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বিনোদপুর বাজারে স্থানীয়দের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনায় প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়। এর মধ্যে কয়েক দফায় ৯৬ জনকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এছাড়া অনেকেই প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত