আমার মা আমাদের মূল্যবোধের শিক্ষা দিয়েছেন

বললেন শেখ পরশ

প্রকাশ : ১৬ মার্চ ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেছেন, আমার মা জানতেন, আমার বাবার প্রতি আঘাত আসতে পারে এবং একাধিক বার বাবাকে হত্যা চেষ্টাও করা হয়েছে। আমার মা সেটা বুঝতে পেরেছিলেন। আমার বাবার জীবনে সেই দুঃস্বপ্ন যেন বাস্তবে পরিণত না হয় সে জন্য তিনি সর্বদা সতর্ক থাকার চেষ্টা করতেন; ভয়ে ভয়ে চলতেন। এ জন্যই তিনি আত্মনির্ভরশীল হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। তিনি অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় এম এ পরীক্ষা দিয়েছিলেন। আমার মা বরিশালের একটি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।

গতকাল যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, মুজিব বাহিনীর স্রষ্টা, বিশিষ্ট সাংবাদিক-কলামিস্ট শহীদ শেখ ফজলুল হক মণি’র সহধর্মিণী শহীদ আরজু মণি সেরনিয়াবাত-এর ৭৭তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে বনানী কবরস্থানে শহীদ আরজু মণিসহ ১৫ আগস্টে নিহত সব শহীদের কবরে যুবলীগের শ্রদ্ধা নিবেদন, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন, আমার মায়ের কোনো লোভলালসা ছিল না। বিয়ের পরে সংসারে মনোযোগ দিয়েছেন। তিনি আমাদের মানুষকে ভালোবাসা আর মূল্যবোধের শিক্ষা দিয়েছেন। রাতে যে গান শুনিয়ে আমাদের ঘুম পাড়াতেন সেটাও ছিল মানবতার গান।

তিনি আরও বলেন, আমার বয়সি অনেকেরই মা আছে, তারা মা বলে ডাকে, মায়ের সেবা করার সুযোগ পাচ্ছেন, কিন্তু আমরা তো মায়ের সেবা করার সুযোগ পাচ্ছি না। আজকে মানবাধিকারের কথা বলে অনেকে। আসলে ব্যাপারটা অবান্তর ও হাস্যকর মনে হয়। আজকে যারা মানবাধিকারের কথা বলেন তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই- পঁচাত্তরে আমাদের কোনো অধিকার ছিল না। কি দোষ ছিল বেবি খালার, কি দোষ ছিল আরিফ মামার, কি দোষ ছিল শেখ রাসেলের, কি দোষ ছিল আমার মায়ের। আমরা তো সেই অধিকার কোনো দিনও পাইনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আল্লাহ বাঁচিয়ে দিয়ে ছিলেন বলে ২১ বছর পর গুলি, বারুদ, বোমা, হত্যা চেষ্টা, আমাদের নেতা-কর্মীদের হত্যা, তাদের উপর অত্যাচার-জুলুমের পরেও ক্ষমতায় এসে বিচারের পথ সুগম করেন তিনি। তার সাহসী ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে আমরা ১৫ আগস্টের বিচার পেয়েছি। ন্যায়পরায়ণতার প্রতীক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার সাহসী নেতৃত্বের কারণেই এটা সম্ভব হয়েছে।

যুবলীগের চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের পরিবার সারা জীবন গণতন্ত্রের জন্যই সংগ্রাম করেছে। আজকে যারা মানবাধিকারের কথা বলে, মানবতার কথা বলে তাদের কাছে আমার প্রশ্ন, ১৯৭৫ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত তাদের ভূমিকা কি ছিল? আমাদের অধিকার আদায়ের জন্য কি করেছেন? মানুষের মৌলিক অধিকারের মধ্যেই এগুলো পড়ে। আমরা সেই অধিকার থেকে বঞ্চিত ছিলাম।

এসময় যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক আলহাজ মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে শহীদ আরজু মণি সেরনিয়াবাতের জন্য দোয়া চাই, দোয়া চাই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ সে দিনের অন্যান্য শহীদের জন্য। সেই সঙ্গে পঁচাত্তরের খুনিদের প্রতি তীব্র ঘৃণা জানাই। তিনি আরও বলেন, আসুন আমরা সচেতন হই, আমরা ঐক্যবদ্ধ হই। সেই পঁচাত্তরের ঘাতক খুনিরা আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠার চেষ্টা করছে।

দোয়া মাহফিলে আরও উপস্থিত ছিলেন, যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মো. রফিকুল ইসলাম, মো. হাবিবুর রহমান পবন, মো. নবী নেওয়াজ, মো. এনামুল হক খান, সুভাষ চন্দ্র হাওলাদার, ইঞ্জিনিয়ার মৃণাল কান্তি জোয়াদ্দার, তাজউদ্দিন আহমেদ, মো. জসিম মাতুব্বর, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সুব্রত পাল, মুহাম্মদ বদিউল আলম, ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নাঈম, মো. রফিকুল আলম জোয়াদ্দার সৈকত, সাংগঠনিক সম্পাদক, ডা. হেলাল উদ্দিন, মো. সোহেল পারভেজ, মশিউর রহমান চপল, ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির হোসেন বাবুল, সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন, দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইন উদ্দিন রানা, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এইচএম রেজাউল করিম রেজা, কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দপ্তর সম্পাদক মো. মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, উপ-দপ্তর সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা প্রমুখ।