তিন বছর পর চালু হলো সোনা মসজিদ স্থলবন্দর ইমিগ্রেশন

প্রকাশ : ১৭ মার্চ ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  রাজশাহী ব্যুরো

চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দর ইমিগ্রেশন চেক পোস্ট দীর্ঘ তিন বছর বন্ধ থাকার পর আবারও খুলে দেয়া হয়েছে। গতকাল দুপুরে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার গুরুত্বপূর্ণ সোনামসজিদ ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট খুলে দেয়া হয়। ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার (রাজশাহী) মনোজ কুমার এ ইমিগ্রেশনের কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।

এর ফলে সোনামসজিদ-মোহদিপুর স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন দিয়ে আসা যাওয়া করতে পারবেন পাসপোর্টধারী যাত্রীরা। এতে দূরত্ব কমবে প্রায় ৬০০ কিলোমিটার। করোনাকালীন পরিস্থিতিতে বন্ধ হওয়ায় ব্যবসা, চিকিৎসা ও ভ্রমণ করতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-রাজশাহীসহ আশেপাশের জেলাগুলোর যাত্রীদের যশোরের বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে যাওয়া-আসা করতে হতো। এতে অতিরিক্ত দুরত্ব বেড়েছিল প্রায় ৬০০ কিলোমিটার। উদ্বোধনকালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বারের সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ বলেন, গত ১২ মার্চ চালু হওয়ার কথা ছিল সোনামসজিদ-মোহদিপুর স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন। তবে কিছু কাগজপত্রের জটিলতায় তা হয়নি। গতকাল দুপুরে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার মনোজ কুমার এ ইমিগ্রেশনের কার্যক্রম উদ্বোধন করলেন। এতে বৃহত্তর রাজশাহী অঞ্চলের ভারতগামী যাত্রীদের একদিকে যেমন খরচ কমবে, তেমনি অন্যদিকে দুরত্ব করবে। ভারতীয় ব্যবসায়ীদের আমন্ত্রণে আমরা ২৫ জন ব্যবসায়ীকে নিয়ে ভারতে যাচ্ছি এই ইমিগ্রেশন দিয়ে।

তরিকুল ইসলাম নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, দীর্ঘ তিন বছর ধরে আমরা ব্যাপক দুর্ভোগে ছিলাম। আমদানি-রপ্তানির কাজে আমাদেরকে ওপারে (ভারত) যেতে হয়। কিন্তু গত ৩ বছর যশোরের বেনাপোল দিয়ে যেতে হয়েছে। এতে দুরত্ব যেমন বেড়েছে ৬০০ কিলোমিটার, তেমনি খরচও অনেক হয়েছে।

মেসবাউল হক, বায়োজিতসহ কয়েকজন পাসপোর্টধারী যাত্রী বলেন, আমরা সোনামসজিদ স্থল বন্দর দিয়ে গমসহ বিভিন্ন পণ্য আমদানি করি। তাই মাঝে মাঝে ব্যবসায়িক কাজে আমাদের ভারতে যাওয়া লাগে। কিন্তু সোনামসজিদ-মোহদিপুর স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন বন্ধ থাকায় আমাদের বেনোপোল দিয়ে যেতে হত। এতে প্রচণ্ড ভোগান্তি পোহাতে হত। টাকাও বেশি খরচ হত। এখন থেকে আমরা এই ইমিগ্রেশন দিয়ে ভারতে যেতে পারব। এতে আমাদের ভোগান্তি কম হবে।

সোনামসজিদ ইমিগ্রেশনের কুলি সাইদুর রহমান জানান, গত তিন বছর ধরে ইমিগ্রেশন বন্ধ থাকার কারণে বেকার ছিলাম। এই পেশায় কাজ করে সংসার চালাই। কিন্তু গত তিন বছর ধরে তা করতে পারিনি। আবার চালু হওয়ায় নিজেদের পেশায় ফিরতে পারলাম। ভালো লাগছে, আবারও কাজে ফিরতে পারছি।

ফিতা কেটে সোনামসজিদ স্থলবন্দর ইমিগ্রেশনের উদ্বোধন করা হয়। পরে উভয় দেশের বিভিন্ন স্তরের সরকারি কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ ফুল দিয়ে একে অপরকে শুভেচ্ছা জানান এবং মিষ্টি বিনিময় করেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ (শিবগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য ডা. শামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য মুহা. জিয়াউর রহমান, মহিলা আসনের সংসদ সদস্য ফেরদৌসী ইসলাম জেসী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বারের সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ, ভারতের মহদীপুর এ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার (কাস্টমস) দেবাশীষ মুখোপাধ্যায়, এ্যাসিস্ট্যান্ট ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) বৈভব চৌধুরী, বিএসএফের কামাডেন্ট সঞ্চয় শর্মা, মহদীপুর স্থলবন্দরের সুপার এলসি ইনচার্জ দেশ দুলাল চ্যাটার্জিসহ অন্যান্যরা। এর আগে একাধিক বার সোনামসজিদ স্থলবন্দর ও ইমিগ্রেশন পরিদর্শন করেন রাজশাহীর ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার মনোজ কুমার। সোনামসজিদ ইমিগ্রেশন খুলে দেয়ায় ভারতীয় সরকার, পশ্চিমবঙ্গের সরকার, রাজশাহীর ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার, এফবিসিসিআইসহ বাংলাদেশ সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ব্যবসায়ী ও পাসপোর্টধারী যাত্রীরা।