উদ্বোধন আগামী বছরের ডিসেম্বর

জাবিতে তৈরি হচ্ছে অলিম্পিক মানের স্পোর্টস কমপ্লেক্স

প্রকাশ : ২০ মার্চ ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  জাবি প্রতিনিধি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সুইমিংপুল আর জিমনেসিয়াম নিয়ে শিক্ষার্থীদের আক্ষেপ অনেক দিনের। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নোংরা পানি আর মশার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুইমিংপুল। অন্যদিকে জিমনেসিয়ামের অবস্থাও বেহাল। এতে নেই সময়োপযোগী ফিটনেস সরঞ্জাম, ব্যাডমিন্টন কোর্টে নেই ট্রাকশন সার্ফেস, এমনকি ডিজিটাল স্কোরকার্ডের সেবা থেকে বঞ্চিত খেলোয়াড়রা। আবার আলোর স্বল্পতার অভিযোগ করেছেন কর্তৃপক্ষ। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিভাবান খেলোয়াড়ের সংখ্যা দিনদিন কমছে বলে অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে নবনির্মিতব্য অত্যাধুনিক স্পোর্টস কমপ্লেক্সের নির্মাণকাজ শেষ হলে সব সংকট দূর হবে বলে জানিয়েছেন উন্নয়ন প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তাদের দাবি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে দেশের সবচেয়ে অত্যাধুনিক স্পোর্টস কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হচ্ছে। যেখানে অলিম্পিক কিংবা নামিদামি ফুটবল ক্লাবের ফিটনেস সেন্টারের সমান সুযোগ সুবিধা

মিলবে। অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্প অফিস সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের পাশে চার একর জমির ওপর নির্মাণাধীন এ স্পোর্টস কমপ্লেক্সের মোট

আয়তন এক লাখ ৭০ হাজার স্কয়ার ফিট। যেখানে থাকবে ক্রিকেট, বাস্কেটবল, ভলিবল, স্কোয়াশ, হ্যান্ডবল, টেবিল টেনিসসহ বিভিন্ন খেলাধুলার ইনডোর স্টেডিয়াম এবং ভারোত্তলন কেন্দ্র। ছেলেমেয়েদের জন্য থাকবে পৃথক ফিটনেস সেন্টার এবং লকার সুবিধা। অভ্যন্তরীণ ক্যাফেটেরিয়ায় পাওয়া যাবে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার। স্পোর্টস বিষয়ক কোর্সের জন্য থাকছে ১১টি প্রশিক্ষণ কক্ষ। সম্পূর্ণ আবাসন ব্যবস্থা সম্বলিত এ কমপ্লেক্সে থাকবে ৫০টি আবাসন কক্ষ এবং কোচদের জন্য পৃথক আবাসন ব্যবস্থা। এছাড়া বিভিন্ন খেলাধূলাবিষয়ক সেমিনার আয়োজনের জন্য নির্মিত হবে সুবিশাল কনফারেন্স রুম।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় হুমায়ুন কবির জয় বলেন, সাধারণত বৃষ্টির সময় মাঠে নামা যায় না। এ সময় জিমনেসিয়ামে বেশি সময় কাটিয়ে নিজেদের প্রস্তুত রাখতে হয়, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান জিমনেসিয়ামে কোনোভাবেই সম্ভব হয় না। কারণ ভারি বৃষ্টিতে সেখানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয় এবং অনুশীলনের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এছাড়া জাতীয় পর্যায়ে প্রতিযোগিতা করার জন্য যতটুকু সুযোগ-সুবিধা প্রয়োজন সেটা আমাদের জিমনেসিয়ামে নেই। নতুন স্পোর্টস কমপ্লক্স হলে আশা করি ইনডোর গেমসগুলোর পাশাপাশি আউটডোর গেমসগুলোর জন্য নিজেকে প্রস্তুত করা সহজ হবে। তখন প্রতিভাবান খেলোয়াড়েরা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে আরো আগ্রহী হবে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-প্রধান প্রকৌশলী (সিভিল, প্রকল্প অফিসে নিয়োজিত) আহসান হাবীব জানান, মেইন ভবনের শুরুতেই থাকবে পদক প্রদর্শনীর জন্য নির্ধারিত

গ্যালারি। ডাইভিং পুল, ব্যালেন্স ট্যাংক এবং বিশাল গ্যালারি সম্বলিত ৫০ মিটার কম্পিটিশন পুল এ কম্পলেক্সের অন্যতম আকর্ষণ। সুইমিংপুল পরিষ্কার রাখার জন্য জার্মানি থেকে ২৫ লাখ টাকার মূল্যের দুটি রোবট কেনা হবে। তিনি আরো বলেন, এখানে আরো থাকছে ৫৭ ফিট বাস্কেটবল, ভলিবল গ্রাউন্ড এবং ৪৫ হাজার স্কয়ার ফিটের গ্যালারি। আরো থাকবে ১৫ হাজার স্কয়ার ফিটের রাবার ফ্লোর, যা নির্মাণ করতে দেশের বাইরে থেকে বিশেষজ্ঞ দল নিয়ে আসার

পরিকল্পনা রয়েছে। প্রকল্পের নকশা প্রণয়নকারী বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক আহসান উল্লাহ মজুমদার বলেন, ‘আমরা সর্বোচ্চ সুযোগ-সুবিধা রেখেই প্রজেক্ট ডিজাইন করেছি। তবে রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। দক্ষ জনবল নিয়োগের মাধ্যমে সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ করা সম্ভব। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন পরিচালক মো. নাসির উদ্দিন বলেন, অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত এ স্পোর্টস কমপ্লেক্স নির্মানে ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৯ কোটি টাকা, যা ২০২৪ সালের ২৪ ডিসেম্বর উদ্বোধন করা হবে।