ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

গণমানুষের আস্থার বাহিনীতে পরিণত হয়েছে র‍্যাব

বললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
গণমানুষের আস্থার বাহিনীতে পরিণত হয়েছে র‍্যাব

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা একটি দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের পূর্ব শর্ত। দেশের উন্নয়নের এই পূর্ব শর্তকে সঠিকভাবে ধারণ করে সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, ডাকাতি, প্রতারণা বন্ধসহ সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে র‍্যাব। র‍্যাব জঙ্গি, সন্ত্রাসী, দুর্নীতিবাজ, চাঁদাবাজ, মাদক কারবারীদের কাছে একটা আতঙ্কের নামে পরিণত হয়েছে। র‍্যাব এরই মধ্যে জননিরাপত্তা রক্ষায় গণমানুষের আস্থার বাহিনীতে পরিণত হয়েছে।

এলিট ফোর্স র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) ১৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যে গতকাল রাজধানীর কুর্মিটোলায় র‍্যাব সদর দপ্তরে আয়োজিত এক দরবারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, র‍্যাবের কার্যক্রমের

ফলেই ধর্ষণ, খুন, অপহরণের আসামিদের গ্রেপ্তারের মাধ্যমে ভুক্তভোগী পরিবারের বিচার পাওয়ার পথ সুগম হয়েছে। মানবিকবোধের জায়গা থেকে র‍্যাব দুস্থ, কাঙাল, প্রতিবন্ধীদের পাশেও দাঁড়াচ্ছে। এছাড়াও বিভিন্ন দুর্ঘটনায় সর্বহারা জনসাধারণের পাশে থেকে কাজ করছে গণমুখী এ বাহিনী।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিগত সময়ে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে সফল অভিযান পরিচালনা করে জনমনে স্বস্তি ফিরিয়ে এনেছে র‍্যাব। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের তিন হাজার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। র‍্যাব জঙ্গিবাদ দমনে মাঠ পর্যায়ে নজরদারির পাশাপাশি সাইবার জগতে সার্বক্ষণিক নজরদারি করছে। জঙ্গিবাদ দমনে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছে র‍্যাব। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যে সফল তৎপরতা চালিয়েছে তাতে র‍্যাবের ভূমিকা অগ্রগণ্য।

তিনি বলেন, মাদকের বিস্তার রোধেও জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানেও আজ ‘চলো যাই যুদ্ধে, মাদকের বিরুদ্ধে’ স্লোগান ধারণ করে কাজ করে যাচ্ছে র‍্যাব। এই সামাজিক যুদ্ধ ও অভিযাত্রা আমাদের সফল করতেই হবে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় কক্সবাজারে নতুন একটি ব্যাটালিয়ন গঠন করা হয়েছে। একই সঙ্গে যুগোপযোগী একটি মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনও করে দিয়েছেন। বর্তমান পরিবর্তিত আর্থসামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক অবস্থার প্রেক্ষাপটে সমাজে অপরাধের ধরনও পাল্টেছে। র‍্যাব এই পরিবর্তনের সঙ্গে নিজেকে প্রস্তুত করছে। এ পর্যন্ত র‍্যাব তিন লক্ষাধিক সন্ত্রাসী, জঙ্গি, অবৈধ অস্ত্র ও মাদক কারবারিসহ নানা অপরাধের সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের গ্রেপ্তারপূর্বক আইনের আওতায় নিয়ে এসেছে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করেছে ১৯ হাজারের বেশি দেশি-বিদেশি অস্ত্র।

আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, অপরাধ দমনে র‍্যাবের কর্মপরিকল্পনা বহুমুখী। অপরাধ দমনে শুধু অভিযানিক প্রক্রিয়ায় সীমাবদ্ধ না থেকে গবেষণা ও প্রশিক্ষণের মতো সময়োপযোগী সফল উদ্যোগও গ্রহণ করছে।

তিনি বলেন, বিশ্ব ঐতিহ্যের নিদর্শন সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত করেছে র‍্যাব। একে একে আত্মসমর্পণ করেছে কক্সবাজার, মহেশখালী, বাঁকখালী অঞ্চলের দস্যুরা। এছাড়াও সুন্দরবন, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এলাকার আত্মসমর্পণ করা ৪০৫ জলদস্যুকে পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় ?যুক্ত করেছে র‍্যাব। ‘নবজাগরণ : অপরাধকে না বলুন’ কার্যক্রমের আওতায় অপরাধে জড়িয়ে পড়তে পারে এমন বেকার শিক্ষা কার্যক্রম থেকে ঝরে পড়া শ্রেণির মানুষকে র‍্যাব কারিগরি প্রশিক্ষণ দিচ্ছে বলে জানান মন্ত্রী।

আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, দেশপ্রেম ও পেশাদারির আলোকে করোনাকালীন সেবা প্রদান ও শীতবস্ত্র বিতরণসহ মানবিক কার্যক্রমও অব্যাহত রাখতে র‍্যাব দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। দেশবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গিয়ে সিনিয়র কর্মকর্তাসহ ১৩ জন অকুতোভয় র‍্যাব সদস্য জীবন দিয়েছেন। আভিযানিক কার্যক্রমে সহস্রাধিক র‍্যাব সদস্য আহত হয়েছেন বলেও জানান তিনি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ আমার অহংকার’ এই মূলমন্ত্রকে বুকে লালন করে আগামীতে আরও উৎসাহ-উদ্দীপনায় দেশপ্রেম, সততা ও নিষ্ঠা-আন্তরিকতার সঙ্গে অর্পিত দায়িত্ব পালন করবে র‍্যাব।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত