বানৌজা শেখ হাসিনা’র কমিশনিং করলেন প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ : ২১ মার্চ ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

সাবমেরিনের সুষ্ঠু পরিচালনা, রক্ষণাবেক্ষণ ও নিরাপদ জেটি সুবিধার জন্য কক্সবাজারের কুতুবদিয়ার পেকুয়ায় সাবমেরিন ঘাঁটি ‘বানৌজা শেখ হাসিনা’ কমিশনিং করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল সোমবার গণভবন থেকে ভিডিও টেলিকনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর অনুমতিক্রমে নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম শাহীন ইকবাল ঘাঁটির অধিনায়ক কমোডর মো. আতিকুর রহমানের হাতে কমিশনিং ফরমান তুলে দেন এবং নৌবাহিনীর রীতি অনুযায়ী আনুষ্ঠানিকভাবে নামফলক উন্মোচন করেন। এর মধ্যদিয়ে ঘাঁটিটি নৌবাহিনীতে আনুষ্ঠানিকভাবে অপারেশনাল কার্যক্রম শুরু করল।

বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে একটি আধুনিক, যুগোপযোগী ও ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনী হিসেবে রূপান্তরে সাবমেরিন সংযোজন ছিল স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের সামরিক শক্তি বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। সংবেদনশীল ও কৌশলগত রণতরী হিসেবে সাবমেরিনের সর্বোত্তম ব্যবহার ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে একটি বিশেষায়িত ও স্থায়ী ঘাঁটির গুরুত্ব বিবেচনায়, প্রধানমন্ত্রীর অনুপ্রেরণা, ঐকান্তিক আগ্রহ ও প্রচেষ্টায় ২০১৭ সালেল ১২ মার্চ ‘বানৌজা শেখ হাসিনা’ নির্মাণে ঘাঁটির নামফলক উন্মোচিত হয়। কমিশনিং অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে একটি আধুনিক শক্তিশালী ও সক্ষম নৌবাহিনী গঠনে সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরেন। সমুদ্রের অফুরন্ত প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় তিনি নৌবাহিনীর আধুনিকায়নের গুরুত্ব তুলে ধরেন। বাংলাদেশের সামুদ্রিক সম্পদ রক্ষা ও দুর্যোগ মোকাবিলায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে আধুনিক ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনীর স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি শ্রদ্ধার সঙ্গে তা স্মরণ করেন।

জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে একটি আধুনিক শক্তিশালী নৌবাহিনী গড়ে তুলতে সরকারের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এ বিশেষায়িত ঘাঁটি সংযোজিত হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। বাংলাদেশের জলসীমা সুরক্ষায় নৌবাহিনীর সাবমেরিনগুলোর অপারেশনাল সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে এ ঘাঁটির গুরুত্ব অপরিসীম।

এছাড়া, দেশের সার্বভৌমত্ব, সমুদ্রসীমার নিরাপত্তা রক্ষা ও চলমান অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা পালনের জন্য নৌবাহিনীর সদস্যদের কঠোর পরিশ্রম ও কর্তব্যনিষ্ঠার জন্য তিনি আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। আইএসপিআর।

উল্লেখ্য, বানৌজা শেখ হাসিনা ঘাঁটিতে সাবমেরিন নিরাপদে রাখতে বেসিন ও অ্যান্ট্রি চ্যানেল, সাবমেরিন ফ্লিট হেডকোয়ার্টারস, যুদ্ধ জাহাজের বার্থিং ফ্যাসিলিটিজ এবং সাবমেরিন-সংক্রান্ত সব ধরনের বেস সাপোর্ট ফ্যাসিলিটিস রয়েছে। বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে সাবমেরিনের অন্তর্ভুক্তির পর হতে এর অবস্থান ছিল কর্ণফুলী নদীর তীরবর্তী বানৌজা ঈসা খানে। সাবমেরিনের অপারেশনাল কার্যক্রম, রক্ষণাবেক্ষণ ও নিরাপদ বার্থিংয়ের জন্য বিশেষায়িত ও স্বয়ংসম্পূর্ণ ঘাঁটি খুবই জরুরি। এ প্রেক্ষিতে সাবমেরিনের নিরাপদ বার্থিং সুবিধার জন্য বাংলাদেশ নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে কক্সবাজার জেলার পেকুয়ায় নির্মিত হয়েছে আধুনিক সব সুবিধা সংবলিত পূর্ণাঙ্গ সাবমেরিন ঘাঁটি বানৌজা শেখ হাসিনা। এর আগে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ‘বানৌজা শেখ হাসিনা’ ঘাঁটিতে ভিডিও টেলিকনফারেন্সে সংযুক্ত হলে নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম শাহীন ইকবাল তাকে স্বাগত জানান। এ সময় সাবমেরিনারদের একটি চৌকস দল মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার প্রদান করেন। এছাড়া, অনুষ্ঠানে মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, মুক্তিযোদ্ধা নৌ কমান্ডো, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনৈতিক ব্যক্তি, নৌ সদর দপ্তরের পিএসও, বিশিষ্ট ব্যক্তি এবং ঊর্ধ্বতন সামরিক ও অসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।