ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

রাজধানীতে শিক্ষক সমাবেশ

মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে ধর্মঘটের হুঁশিয়ারি

মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে ধর্মঘটের হুঁশিয়ারি

দেশের মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে মহাসমাবেশ করেছে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বিটিএ)। গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক সমাবেশে সারা দেশ থেকে আসা মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষকরা অংশ নেন। এ সময় আসন্ন ঈদুল ফিতরের আগে মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ করে শিক্ষক-কর্মচারীদের পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা দেয়া এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ না রাখা হলে আগামী ১১ জুন থেকে সারা দেশে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লাগাতার ধর্মঘট পালনের হুঁশিয়ারি দেয়া হয়।

বিটিএ সভাপতি অধ্যক্ষ বজলুর রহমান মিয়া এ ঘোষণা দিয়ে বলেন, আমরা সরকারকে অনেক সময় দিয়েছি। শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে অনেকবার বৈঠকের চেষ্টা করেছি, কিন্তু তিনি সময় দেননি। তাই আমরা জাতীয়করণের এক দফা দাবিতে রাস্তায় নেমেছি। আগামী ১ বা ২ জুন বাজেট ঘোষণা করা হবে। এবারের বাজেটে যদি মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের জন্য বরাদ্দ না রাখা হয়, তবে ১১ জুন থেকে আমরা ধর্মঘট শুরু করব। দাবি আদায় না করে আমরা ঘরে ফিরব না। এর আগে মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে গতকাল সকাল থেকেই শিক্ষকরা প্রেসক্লাবের সামনে জড়ো হতে থাকেন। বেলা ১১টায় শুরু হয় সমাবেশ। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন বিটিএ সাধারণ সম্পাদক শেখ কাওছার আহমেদ। সমাবেশে বক্তারা বলেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা মাত্র ২৫ শতাংশ উৎসব ভাতা, এক হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া এবং ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পান। অথচ একই কারিকুলামের অধীন একই সিলেবাস, একই অ্যাকাডেমিক সময়সূচি, একইভাবে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও উত্তরপত্র মূল্যায়নের কাজে নিয়োজিত থেকেও আর্থিক সুবিধার ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে রয়েছে পাহাড় সমান বৈষম্য। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠান প্রধানদের বেতন স্কেল সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠান প্রধানদের বেতন স্কেলের একধাপ নিচে দেয়া হয়। তাছাড়া উচ্চতর স্কেলপ্রাপ্ত সিনিয়র শিক্ষকদের বেতন স্কেল ও সহকারী প্রধান শিক্ষকদের বেতন স্কেল সমান হওয়ায় সহকারী প্রধান শিক্ষকদের মধ্যে দীর্ঘদিনের অসন্তোষ রয়েছে।

তারা আরো বলেন, বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসরে যাওয়ার পর অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা পেতে বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয়। ফলে অনেক শিক্ষক-কর্মচারী টাকা পাওয়ার আগেই অর্থাভাবে বিনাচিকৎসায় মৃত্যুবরণ করেন। তাছাড়া কয়েক বছর ধরে কোনো ধরনের সুবিধা না দিয়েই অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্ট খাতে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন থেকে অতিরিক্ত ৪ শতাংশ কাটা হচ্ছে, যা অত্যন্ত অমানবিক। বক্তারা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালে যুদ্ধবিধস্ত বাংলাদেশে প্রায় ৩৭ হাজার প্রাথমকি বিদ্যালয় জাতীয়করণ করেছিলেন। তেমনিভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রায় ২৬ হাজার বেসরকারি রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করে জাতির কাছে স্মরণীয় হয়ে আছেন। এ অবস্থায় দেশ ও জনগণের স্বার্থে দ্রুত জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ বাস্তবায়ন, শিক্ষায় বিনিয়োগে ইউনেস্কো আইএলও’র সুপারিশগুলো বাস্তবায়নসহ সবার জন্য শিক্ষা গ্রহণের সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ প্রয়োজন। সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন সংগঠনের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য আলহাজ মুহাম্মদ আবু বকর সিদ্দিক, রঞ্জিত কুমার সাহা, এসএম শাহাদাৎ হোসেন, দাস আশীয়, মাসুম হাসান, ফরিদুল আলম জাহাঙ্গীর, মীর আশরাফ হোসেন, সহ-সভাপতি আবুল কাশেম, আহসানুল হক মুকুল, আলী আসগর হাওলাদার, বেগম নূরুন্নাহার, গোলাম রব্বানী, আতিয়ার রহমান প্রামানিক, মো. ইকবাল হোসেন প্রমুখ।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত