এপ্রিলে পাঁচ সিটি নির্বাচনের তফসিল

কেন্দ্রে দলীয় প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ সুযোগের সন্ধানে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা

প্রকাশ : ২২ মার্চ ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আরিফুল ইসলাম

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে তিন ধাপে পাঁচটি সিটি করপোরেশনের নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এসব সিটি নির্বাচনে আগামী এপ্রিল মাসে তফসিল ঘোষণা করা হবে। মে ও জুনের মধ্যে এসব সিটি নির্বাচনে ভোটগ্রহণ করবে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। রাজশাহী, বরিশাল, খুলনা, সিলেট ও গাজিপুর সিটি কর্পোরেশনে ভোটগ্রহণ করা হবে।

সিটি নির্বাচনে মনোনয়ন পেতে দলীয় প্রার্থীরা ঢাকায় কেন্দ্রীয় অফিসে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। এদিকে বিএনপি এই নির্বাচনে আনুষ্ঠানিকভাবে অংশগ্রহণ করছে না এটা ধরে নিয়ে সুযোগের অপেক্ষায় রয়েছেন জাতীয় পার্টি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। বিএনপি থেকে কেউ কেউ বহিষ্কার হওয়ার খড়ক মাথায় নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন। তবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনি বছরে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ পাঁচটি সিটি নির্বাচনে অন্য দলকে কতটা ছাড় দেবে তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এর আগে বিএনপির ছেড়ে দেয়া ছয়টি সংসদীয় আসনের উপ-নির্বাচনে শেষ অবধি জাতীয় পার্টির সঙ্গে আওয়ামী লীগের সন্তোষজনক রফাদফা হয়নি। এর ফলে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জাতীয় পার্টির একটা টানাপড়েনের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আসন্ন পাঁচ সিটি নির্বাচনে আপস রফা না হলে জাতীয় পার্টি আলাদা প্রার্থী দিতে পারে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, পাঁচ সিটি নির্বাচনে রাজপথের বিরোধীদল বিএনপি সরাসরি অংশ না নিলেও স্বতন্ত্র প্রার্থীকে গোপনে সমর্থন দিতে পারে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এসব নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে আয়োজন করা যায় সে ব্যাপারে সব ধরনের প্রস্তুতি চালিয়ে যাচ্ছে ইসি।

আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, রাজশাহী ও বরিশাল সিটিতে এবার প্রার্থী পরিবর্তন নাও হতে পারে। খুলনা, সিলেট ও গাজিপুর সিটিতে প্রার্থী পরিবর্তন হতে পারে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিবে দল। তারপরও মনোনয়ন পেতে এরইমধ্যে সম্ভব্য প্রার্থীরা দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন।।

ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখা জানায়, ভোটরের প্রস্তুতি চলছে, ঈদুল ফিতরের আগে প্রথম ধাপের তফসিল দেয়া হবে। যে সিটির মেয়াদ পূর্তির আগে আসবে তার তফসিল আগে দেয়া হবে। মেয়াদ পূর্তির কথা বিবেচনা করে পরবর্তী নির্বাচনি তফসিল ঈদের পর দেয়া হবে।

ইসি সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মে থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। তিনি বলেন, এইচএসসি পরীক্ষা শুরুর সম্ভাব্য তারিখ ৭ জুলাই। সেজন্য এসএসসি পরীক্ষা শেষে ২৩ মে থেকে ২৯ জুনের মধ্যবর্তী সময়ের তিন ধাপে পাঁচটি সিটির ভোট করার বিষয়ে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়েছে।

তিনি জানান, পাঁচটি সিটি নির্বাচন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে করতে হবে। এপ্রিলে রমজান শেষে এসএসসি পরীক্ষা ২৩ মে পর্যন্ত চলার কথা, জুনে ঈদুল আজহা। ঈদুল আজহার আগে এবং এসএসসি পরীক্ষা শেষে মধ্যবর্তী সময়ে এ পাঁচ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পরবর্তী সময়ে তফসিলের সময় কোনটা কোন তারিখে হবে, তা বিস্তারিত জানানো হবে। এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে তফসিল ঘোষণা করা হবে।

সিটি নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করার ইচ্ছা রয়েছে জানিয়ে ইসি কর্মকর্তরা জানান, এটা নির্ভর করবে ইভিএমের প্রাপ্যতার ওপর। নতুন ইভিএম এখনো পাওয়া যায়নি। ইভিএমগুলোর ব্যাটারির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। ব্যাটারি পরিবর্তন কিংবা সার্ভিসিং করাতে হবে। সেজন্য টাকা লাগবে। সার্ভিসিং করিয়ে সচল করার ওপর নির্ভর করবে কতগুলো ইভিএম ব্যবহার করব। তবে কমিশনের ইচ্ছা ইভিএমে ভোট করা।

সিটি করপোরেশন নির্বাচন আইন অনুযায়ী, কোনো সিটির মেয়াদ ধরা হয় প্রথম সভা থেকে পরবর্তী ৫ বছর। কোনো সিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ১৮০ দিনের মধ্যে ভোটগ্রহণ করতে হয়। সেক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির পরবর্তী ভোটের ক্ষণগণনা ১১ মার্চ শুরু হওয়ায় ১০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ভোট করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। অন্যদিকে খুলনা ও রাজশাহী সিটির ক্ষণগণনা শুরু হবে ১৩ এপ্রিল এবং সে কারণে ১০ অক্টোবরের মধ্যে নির্বাচন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। বরিশাল সিটি ভোটের ক্ষণগণনা শুরু হবে ১৪ মে। নির্বাচন করতে হবে ১৩ নভেম্বরের মধ্যে। সিলেট সিটি ৬ মে থেকে পরবর্তী নির্বাচনের ক্ষণগণনা শুরু হবে। ৬ নভেম্বরের মধ্যে ভোট করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আর ময়মনসিংহ সিটি ভোট ১৯ জুনের মধ্যে করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।