ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

কলকাতার আনন্দবাজারের প্রতিবেদন

নেতৃতে বিজ্ঞানী-মন্ত্রী, রপ্তানির বাজার খুঁজছে বাংলাদেশের কৃষি আনন্দবাজারকে কৃষিমন্ত্রী

নেতৃতে বিজ্ঞানী-মন্ত্রী, রপ্তানির বাজার খুঁজছে বাংলাদেশের কৃষি আনন্দবাজারকে কৃষিমন্ত্রী

গত রোববার কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকা ‘নেতৃত্বে বিজ্ঞানী-মন্ত্রী, রপ্তানির বাজার খুঁজছে বাংলাদেশের কৃষি’ শীর্ষক কৃষিমন্ত্রীর সাক্ষাৎকারভিত্তিক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। দেশের চাহিদা মিটিয়ে বাংলাদেশের কৃষিপণ্য এখন রপ্তানির বাজার দখলের লড়াইয়ে নেমেছে বলে আনন্দবাজার পত্রিকাকে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। প্রতিবেদনে বলা হয়, একদা আমেরিকার এক মন্ত্রী যে দেশকে ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ বলে তামাশা করেছিলেন, রাষ্ট্রপুঞ্জ তাকেই উন্নয়নের ক্ষেত্রে ‘অনুকরণীয় দেশ’ হিসাবে তুলে ধরছে। সেই বাংলাদেশ এবার খাদ্যশস্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ- জানিয়েছেন সেখানকার কৃষিমন্ত্রী মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক। তার দাবি, দেশের চাহিদা মিটিয়ে কৃষিজ সামগ্রী এখন রপ্তানির বাজার দখলের লড়াইয়ে নেমেছে। সম্প্রতি কলকাতায় এসে রাজ্জাক জানান, উন্নত দেশে বাংলাদেশের আনাজ ও ফলের ভালো চাহিদা। তবে রপ্তানির জন্য গুণমান ছাড়াও দরকার আধুনিক ও স্বাস্থ্যসম্মত চাষাবাদের অভ্যাস। সেটাই করা হচ্ছে। তার কথায়, ‘জাপানে বাংলাদেশের আমের খুব কদর। কিন্তু গায়ে আঠার দাগ থাকা চলবে না। কীভাবে আম পাড়লে দাগ এড়ানো যায়, তা কৃষকদের শেখানো হচ্ছে।’ মন্ত্রীর দাবি, চাষে জৈব সার ব্যবহারে জোর দিচ্ছে কৃষি মন্ত্রক। উন্নত কৃষি-যন্ত্র কেনায় মিলছে ৫০ শতাংশ থেকে ৭০ শতাংশ সরকারি ভর্তুকি। জোর দেয়া হচ্ছে বিশ্ব মানের প্যাকেজিংয়েও। এজন্য ঢাকার অদূরে শ্যামনগরে তৈরি হয়েছে প্যাকেজিং হাউজ। সেখান থেকে মোড়কবন্দি আনাজ ও ফল যাচ্ছে বিমানবন্দরে। পূর্বাচলে আরো একটির নির্মাণ শুরু হয়েছে দুই একর জায়গায়। পশ্চিম এশিয়ার কিছু দেশ ও ব্রিটেনে নিয়মিত আনাজ যাচ্ছে। তবে তাদের পাখির চোখ ইউরোপ, আমেরিকা ও জাপানের বাজার। এ রাজ্যে এসে শ্রীনিকেতনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি বিভাগ ঘুরে বাংলাদেশের কৃষিমন্ত্রীর মন্তব্য, ‘রবীন্দ্রনাথ বাংলার কৃষিক্ষেত্রের উন্নতির জন্য যে গভীর চিন্তাভাবনা করেছিলেন, তা অনেকে জানেনই না!’ রাজ্জাক নিজে আমেরিকার পারডু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করা কৃষিবিজ্ঞানী। আমেরিকা ও জাপানের কৃষি প্রকৌশল নিয়ে উচ্চতর প্রশিক্ষণ নিয়েছেন, ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা পরিষদের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা। দশকের পর দশক শরতের কাশফুল ফুটলেই বাংলাদেশের মধ্য থেকে উত্তরাঞ্চলজুড়ে তীব্র খাদ্যাভাব দেখা যেত। একে বলা হতো ‘মঙ্গা’ (মহেঙ্গা বা দুর্মূল্য)। রাজ্জাক জানান, এই সঙ্কটকে জয় করা গেছে। পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় দক্ষিণের যশোর, সাতক্ষীরা, বরিশাল, খুলনার উর্বর জমিতে উৎপন্ন শাক-আনাজ, ফলমূল এখন তাজা থাকতেই গোটা দেশে পৌঁছাচ্ছে। ফলে চাষিদের সামনে যেমন বাজার উন্মুক্ত, তেমনই খাদ্যাভাব স্থায়ীভাবে কাটার আশা। ডাল, পেঁয়াজ, সরষের মতো অত্যাবশ্যক যেসব আনাজ ও তৈলবীজে বাংলাদেশ রপ্তানিনির্ভর, তা চাষেও উৎসাহ দেয়া হচ্ছে। গবেষকরা উচ্চফলনশীল উন্নত সরষে উদ্ভাবন করেছেন। বিজ্ঞানী-মন্ত্রী জানান, তার স্বপ্ন দেশের কৃষিক্ষেত্রকে বিশ্ব মানে উন্নীত করা। এ বিষয়ে রবীন্দ্রনাথের কৃষি-ভাবনাও পাথেয় তার।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত