ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

স্বাধীনতা পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী

দুস্থ মানুষকে মর্যাদাপূর্ণ জীবন দিতে কাজ করছে সরকার

দুস্থ মানুষকে মর্যাদাপূর্ণ জীবন দিতে কাজ করছে সরকার

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে দুস্থ মানুষকে একটি মর্যাদাপূর্ণ ও সুন্দর জীবন দিতে কাজ করে যাচ্ছে সরকার। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাকে জনগণের সেবা করার সুযোগ হিসেবে দেখে।

গতকাল রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২৩’ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক বাধা-বিপত্তি মোকাবিলা করে ২০০৮ সালের সাধারণ নির্বাচনে জয়লাভ করে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকায় দেশের উন্নয়ন করা সম্ভব হয়েছে। বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছে। আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অক্ষুন্ন রেখে এগিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছি।

তিনি বলেন, সুনির্দিষ্ট ও দূরদর্শী পরিকল্পনা নিয়ে আমরা সবকিছু করেছি। আমরা কোনো এডহক ভিত্তিতে কিছুই করিনি। পরিকল্পনার ক্ষেত্রে আমরা সবসময় দেশের জনগণের কল্যাণকে প্রাধান্য দিই। দেশকে একটি উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে পরিণত করার লক্ষ্যে ‘রূপকল্প-২০২১’ বাস্তবায়নে প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০১০-২১ ও পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা লাভের পর এখন ‘রূপকল্প ২০৪১’ বাস্তবায়নের মাধ্যমে ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও ‘স্মার্ট বাংলাদেশে’ পরিণত করতে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটি দীর্ঘমেয়াদি ‘ডেল্টা প্ল্যান-২১০০’ গ্রহণ করেছে সরকার, যাতে প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম অন্যের ওপর নির্ভর না করে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে উন্নত ও সম্মানজনক জীবন কাটাতে পারে। আমরা খেলাধুলা, সংস্কৃতি, সাহিত্য, অর্থনীতিসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে এগিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছু করছি।

শেখ হাসিনা বলেন, দারিদ্র্য ৪০ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশে নামিয়ে এনেছি ও মাথাপিছু আয় বাড়িয়েছি। আওয়ামী লীগ সরকার প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ দিয়েছে। প্রত্যেক গৃহহীন ও ভূমিহীন মানুষকে বিনামূল্যে বাড়ি দিচ্ছে। জনগণের দোরগোড়ায় সঠিক শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিচ্ছে এবং প্রতিটি খাতকে এগিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে গবেষণাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে- যার মধ্যে কৃষি, স্বাস্থ্য বিজ্ঞান ও বিজ্ঞান অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

দরিদ্রদের জন্য খাদ্য সহায়তা কর্মসূচি সম্পর্কে তিনি বলেন, সরকার পারিবারিক কার্ডের মাধ্যমে ১ কোটি মানুষকে প্রতি কেজি ৩০ টাকা ভর্তুকি দিয়ে চাল দিচ্ছে। এছাড়া ৫০ লাখ মানুষকে ১৫ টাকা কেজি দরে চাল দেয়া হচ্ছে। রমজান মাসে আরও ৫০ লাখ মানুষকে (প্রতি কেজি ১৫ টাকায়) চাল দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যাতে মানুষ কষ্ট না পায়।

তিনি আরও বলেন, চাল দেয়ার পাশাপাশি রমজান মাসে (দরিদ্রদের জন্য ভর্তুকি মূল্যে) ডাল, ভোজ্যতেল, চিনি ও ছোলাসহ আরও কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ করার পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে। আমরা সম্ভাব্য সব ব্যবস্থা নিচ্ছি- যাতে রমজানে কাউকে খাবারের জন্য কষ্ট করতে না হয়।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দারিদ্র্য ও ক্ষুধা, বৈষম্য ও নিপীড়নমুক্ত একটি দেশ বিনির্মাণে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে সবকিছুই করেছে। বঙ্গবন্ধু যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশকে মাত্র ৩ বছর সাত মাসের মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশে পরিণত করেছিলেন।

শেখ হাসিনা আরো বলেন, যখন দেশি-বিদেশি স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি বুঝতে পারল যে, বাংলাদেশকে আর দমিয়ে রাখা যাবে না, তখন তারা ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট বাংলাদেশের জাতির পিতাকে হত্যা করল। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বাংলাদেশের অগ্রগতি থেমে যায়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস ও ইতিহাসকে বিকৃত করা হয়।

তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা ও তার পরিবারের অধিকাংশ সদস্যকে হত্যার পর গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বারবার বাধাগ্রস্ত হয় এবং স্থিতিশীলতার অভাবে বাংলাদেশ এর আগে খুব একটা অগ্রগতি দেখতে পায়নি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত