আর আলোচনা নয়, এবার ঘোষণা চাই

প্রকাশ : ২৪ মার্চ ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

১৯৭১ সালের ২৪ মার্চ সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে সমাগত মিছিলকারীদের উদ্দেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভাষণ দেন। তিনি বলেন, ‘আর আলোচনা নয়, এবার ঘোষণা চাই।’ ২৫ মার্চের মধ্যে সমস্যার কোনো সমাধান না হলে বাঙালি নিজেদের পথ বেছে নেবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। বঙ্গবন্ধু বলেন, আমরা সাড়ে সাত কোটি মানুষ আজ ঐক্যবদ্ধ। কোনো ষড়যন্ত্রই আমাদের দাবিয়ে রাখতে পারবে না। এই দিনে ভুট্টো-ইয়াহিয়া বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষ ভুট্টো বলেন, ‘উই আর মেকিং সাম প্রগ্রেস।’ কোনো ধরনের নতিস্বীকার না করার সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করেন বঙ্গবন্ধু। তিনি বলেন, কোনো সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া চলবে না। কোন রক্তচক্ষু সহ্য করা হবে না।

মিরপুরে জোর করে পাকিস্তানি পতাকা উত্তোলন : সারাদেশে শান্তিপূর্ণভাবে পতাকা উত্তোলন হলেও মিরপুরের ১০নং সেক্টরে একটি বাড়ির ওপর থেকে ভয়ভীতি দেখিয়ে পতাকা সরানো হয়। বোমা হামলা করা হয়। বাংলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক কাইউমকে ছুরিকাহত করে তার বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। অভিযোগ ওঠে, মিরপুরে অবাঙালিরা সাদা পোশাকধারী পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সদস্যদের সহযোগিতায় বাঙালিদের বাড়িঘরের ছাদ থেকে বাংলাদেশের পতাকা ও কালো পতাকা নামিয়ে জোর করে তাতে আগুন দেয় এবং পাকিস্তানি পতাকা তোলে। রাতে বিহারিরা সেখানে ব্যাপক বোমাবাজি করে আতঙ্কের সৃষ্টি করে।

আওয়ামী লীগ ও সরকারের মধ্যে উপদেষ্টা পর্যায়ে বৈঠক : এদিন সন্ধ্যায় প্রেসিডেন্ট ভবনে আওয়ামী লীগ ও সরকারের মধ্যে উপদেষ্টা পর্যায়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। দুই ঘণ্টাব্যাপী এই বৈঠকে আওয়ামী লীগের পক্ষে সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ ও ড. কামাল হোসেন উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে তাজউদ্দীন আহমদ উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান, আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বক্তব্য প্রদান শেষ হয়েছে। এখন প্রেসিডেন্টের উচিত তার দিক থেকে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা।

প্রতিরোধের আগুন : তখন প্রতিরোধ ছড়িয়ে পড়েছিল বিভিন্ন জেলা শহরগুলোতেও। চট্টগ্রামে পাক সেনারা নৌ-বন্দরের ১৭ নং জেটিতে নোঙর করা এম. ভি. সোয়াত জাহাজ থেকে সমরাস্ত্র খালাস করতে গেলে প্রায় ৫০ হাজার বীর বাঙালি তাদের ঘিরে ফেলে। সেনাবাহিনীর সদস্যরা জাহাজ থেকে কিছু অস্ত্র নিজেরাই খালাস করে ১২টি ট্রাকে করে নিয়ে যাওয়ার সময় জনতা পথরোধ করে।