রাজধানীতে অস্থির মুরগির বাজারে স্বস্তি ফিরছে

প্রায় দুই মাস ধরে দেশের মুরগির বাজারে অস্থিরতার পর স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে। প্রকারভেদে কেজিতে ৬০ থেকে ৮০ টাকা পর্যন্ত কমেছে মুরগির দাম। ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে ২১০ থেকে ২৩০ টাকা দরে।

অথচ চার দিন আগেও ২৭০ থেকে ২৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল এ পোল্ট্রি পণ্য। গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজারের হাঁস-মুরগির বাজারে নতুন মূল্যে ব্রয়লার বিক্রি হওয়ার তথ্য মিলে। গত চার দিন আগে সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছিল ৩৯০ টাকা কেজি দরে। গতকাল সেটি বিক্রি হয় ৩৩০ টাকায়। ৩৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া সাদা কক মুরগি গতকাল বিক্রি হয় ৩২০ টাকায়। পাকিস্তানি কক মুরগির দাম ৩৬০ টাকা; চার দিন আগের বিক্রি ৪২০ টাকায়। ৩৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া লেয়ার এখন বিক্রি হচ্ছে ২৮০ টাকায়।

সম্প্রতি মুরগির বাজারে অস্থিরতা দেখা দিলে নড়েচড়ে বসে তদারকি সংস্থাগুলো। মুরগির দাম নিয়ে বিরাজমান অস্থিরতা কমাতে দেশের বড় চার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে তলব করে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। গত ২৩ মার্চ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে মুরগির অযৌক্তিক দাম বৃদ্ধির বিষয়ে শুনানি শেষে ফার্ম থেকে সর্বোচ্চ ১৯৫ টাকা কেজি দরে ব্রয়লার বিক্রির প্রতিশ্রুতি দেয় প্রতিষ্ঠান চারটি। এরপর থেকেই বাজারে কমতে থাকে ব্রয়লারসহ সব ধরনের মুরগির দাম।

দাম কমার বিষয়ে জানতে চাইলে গতকাল কারওয়ান বাজারের একজন মুরগি বিক্রেতা বলেন, আমরা পাইকারি বাজার থেকে মুরগি কিনি। সেখানে দাম কমলে আমরাও কমে বিক্রি করতে পারি। দাম বাড়লে আমাদেরও বাড়াতে হয়। আজ থেকে দাম কমছে, আগামী কয়দিনে আরো কমতে পারে।

একই বাজারে দুটি ভিন্ন দামে ব্রয়লার বিক্রির কারণ জানতে চাইলে আরেক বিক্রেতা বলেন, কেউ কাপ্তান বাজার থেকে মুরগি কিনে, আবার কেউ অন্য বাজার থেকে। তাই দামের কিছুটা হের-ফের আছে। আবার কেউ আজকে সকালে কেনা মুরগি বিক্রি করছে, তো কেউ দুই দিন আগেরটা বিক্রি করছে। আজকে যারা নতুন মুরগি কিনেছে, তারা ২১০ টাকা দরে বিক্রি করছে, যাদের কাছে আগের মুরগি ছিল তারা ২২০-২৩০ টাকা দরে বিক্রি করছে।

কয়েকজন বিক্রেতা মুরগির দাম আগামীতে কমার কথা বললেও কয়েকজন দাম বাড়ার আশঙ্কার কথা জানালেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক বিক্রেতা বলেন, ফার্ম মালিকরা ইচ্ছা করে মুরগির উৎপাদন কমিয়ে দাম বাড়িয়েছে। সরকার চাপ দেয়ায় তারা এখন দাম কিছুটা কমিয়েছে। কিন্তু আবার ২০ রমজানের পর মুরগির দাম বেড়ে যাবে।

বাজারে স্বস্তি ফিরলেও পুরোপুরি সন্তুষ্ট হতে পারেননি মুরগির ক্রেতারা। তারা বলছেন, দাম কিছুটা কমেছে ঠিকই, কিন্তু সাধারণ মানুষের জন্য এটা যথেষ্ট নয়। ব্রয়লার মুরগির দাম ১৩০-১৪০ টাকা কেজি হলে সাধারণ মানুষের জন্য ঠিক হতো। কিন্তু মুরগিসহ সবকিছুর দাম বেশি।

এক ক্রেতা বলেন, দাম বাড়ানোর সময় ১৩০-১৪০ টাকা বাড়িয়েছে। আর কমানোর সময় মাত্র ৭০-৮০ টাকা কমালে হবে? এভাবে তো সাধারণ মানুষ টিকতে পারবে না। সরকারের যথাযথ পদক্ষেপ না থাকার কারণে ব্যবসায়ীরা দাম বাড়ানোর সুযোগ নেয়।

কারওয়ান বাজারে একই দামে প্রতি পিস কবুতর ১৫০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। পিস প্রতি ১০০ টাকা কমেছে হাঁসের দাম। বর্তমানে প্রতি পিস হাঁস আকারভেদে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।