ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী

বিএনপির উন্নয়নবিরোধী যে কোনো আন্দোলনের ব্যাপারে সতর্ক থাকুন

বিএনপির উন্নয়নবিরোধী যে কোনো আন্দোলনের ব্যাপারে সতর্ক থাকুন

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা রমজান মাসে জনজীবনের পবিত্রতা ও শান্তিকে উপেক্ষা করে আন্দোলনের জন্য বিএনপির আহ্বানের সমালোচনা করে দেশবাসীকে উন্নয়নের বিরুদ্ধে যে কোনো ধরনের আন্দোলনের ব্যাপারে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি আরো বলেন, ‘তারা বিএনপি) এই রমজান মাসেও আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে।’ তিনি তাদের উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘অন্তত এই রমজান মাসে তো জনগণকে আন্দোলন থেকে নিস্তার দেন।’

রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) গতকাল ৫৩তম মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্বকালে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

তিনি দেশবাসীকে মনে করিয়ে দেন যে, রমজান মাসে বেতন বৃদ্ধির আন্দোলনে খালেদা জিয়া ১৭ শ্রমিককে গুলি করে হত্যা করেছিলেন। শেখ হাসিনা আরো বলেন, ‘যারা রমজান মাসে মানুষকে গুলি করে হত্যা করে, তারা রমজান মাসের প্রতি সম্মান দেখাবে কী করে? তাইতো তারা এই মাসে আন্দোলনের ডাক দিয়েছে। পবিত্র রমজান মাস ও মানুষের দুর্ভোগের প্রতি তাদের কোনো অনুভূতিই নেই।’

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ কোনো ইফতার পার্টি না করে, রমজান মাসে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি লাঘবের জন্য তাদের মধ্যে এই অর্থ ও খাবার বিতরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়ন দেখে বিশ্ব সম্প্রদায় বাংলাদেশের প্রতি সম্মান দেখাতে বাধ্য হলেও বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও উন্নয়ন না দেখা বিএনপি নেতা ও কয়েকজন তথাকথিত বুদ্ধিজীবীর কড়া সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘বিশ্ব সম্প্রদায় বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বর্ণনা করতে বাধ্য হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, তার সরকারের অক্লান্ত পরিশ্রম এবং অব্যাহত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার কারণে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে গত ১৪ বছরে বাংলাদেশে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে।

অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি উপস্থিত ছিলেন। অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান এমপি, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, বীর বিক্রম, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, আন্তর্জাতিকবিষয়ক উপকমিটির চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির নানক, রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জমির, প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস, এমপি, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. পারভীন জামান কল্পনা ও অ্যাডভোকেট সানজিদা খানম এমপি, ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক যথাক্রমে হুমায়ুন কবির ও এসএম মান্নান কচি প্রমুখ।

আলোচনা সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ডক্টর আবদুস সোবহান গোলাপ, এমপি ও সহ-সভাপতি সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম।

শেখ হাসিনা জাতির পিতাকে হত্যার পর ২১ বছর, ২০০১ সালের নির্বাচনের পর বিএনপি’র ক্ষমতায় থাকা ৫ বছর এবং পরবর্তী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদসহ ২৯ বছর সময়কে বাংলাদেশের জন্য একটি কালো অধ্যায় হিসেবে বর্ণনা করেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের মানুষের জন্য কালো মেঘ দূর করে একটি নতুন সূর্যের আলো নিয়ে এসেছি। বাংলাদেশ সামনের দিকে যাত্রা শুরু করেছে এবং আলোর দিকে এগিয়ে যাবে।’

দেশ ও জনগণের কল্যাণে আওয়ামী লীগ যে ব্যাপক উন্নয়ন করেছে, সেই আস্থা ও বিশ্বাস নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।

বিএনপি-জামায়াত চক্রের আওয়ামী লীগ ও সরকারের বিরুদ্ধে চালানো অপপ্রচারের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কোনো মিথ্যার দ্বারা বিভ্রান্ত হবেন না।’

শেখ হাসিনা বলেন, কিছু তথাকথিত স্থানীয় বুদ্ধিজীবীর পাশাপাশি অনেক আন্তর্জাতিক শক্তি রয়েছে, যারা বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও উন্নয়ন অব্যহত রাখতে চায় না।

তিনি বলেন, ‘তারা (তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা) বাংলাদেশে কোনো উন্নয়ন হচ্ছে না বলার পাশাপাশি দেশে-বিদেশে (সরকারের) বদনাম করতে ব্যস্ত।’

বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের বর্ণনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার অবকাঠামো, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাসস্থান, বিদ্যুৎ, কৃষি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ প্রতিটি খাতে উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন করেছে।

তিনি আরো বলেন, তার সরকার নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করে বিশ্বকে বাংলাদেশের সক্ষমতা দেখিয়েছে। পাশাপাশি মেট্রোরেল, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেলসহ আরো অনেক কিছু নির্মাণ করা হচ্ছে।

শেখ হাসিনা বিএনপি নেতাদের তাদের আমলে এমন একটি উন্নয়ন দেখাতে বলেন।

আওয়ামী লীগ সভাপতি তার দলের নেতাকর্মীদের জনগণের নির্ভরতা ও আস্থা নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে কখনোই বৃথা যেতে দেয়া হবে না। তাই, বাংলাদেশের জনগণ, আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে, যাতে জাতির পিতাকে হত্যার পর যারা অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছে, তাদের অনুসারীরা জনগণের স্বাধীনতা ও ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে।

তিনি আরো বলেন, অব্যাহত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও উন্নয়ন প্রচেষ্টার কারণে বাংলাদেশ এখন এমন একটি মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে পৌঁছেছে। ‘বাংলাদেশ এখন অদম্য গতিতে এগিয়ে যাবে এবং এই যাত্রায় কেউ বাধা দিতে পারবে না।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত