সরকারি হাসপাতালে বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা ৩০ মার্চ থেকে

জানালেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশ : ২৮ মার্চ ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  সংবাদ বিজ্ঞপ্তি

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, সরকারি হাসপাতালে সকাল ৮টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত চিকিৎসকরা বিনামূল্যে রোগী দেখেন। এতে বিকালে অনেক মানুষ চিকিৎসা নিতে না পেরে বাইরে প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে দেখান। প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানের ‘ফি’ বেশি হওয়ায় দেশের মানুষের চিকিৎসা ব্যয় বহুগুণ বৃৃদ্ধি পায়। এজন্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আগামী ৩০ মার্চ থেকে পাইলটিং প্রক্রিয়ায় দেশের ১০ জেলা ও ২০ উপজেলা হাসপাতালে সরকারি চিকিৎসকদের বিকাল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কিছু সম্মানী ফি দেয়ার মাধ্যমে মানুষ চিকিৎসা নিতে পারবে। এর সঙ্গে একই সময় বিভিন্ন রকম স্বাস্থ্য পরীক্ষাও করা যাবে। গতকাল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ইনস্টিটিউশনাল প্র্যাকটিস নীতিমালা-২০২৩ চূড়ান্তকরণ সংক্রান্ত সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন।

মন্ত্রী জানান, মানুষের চিকিৎসা ব্যয় কেন বৃদ্ধি পাচ্ছে সেসব বিষয় নিয়ে দফায় দফায় আলোচনা হয়েছে। দেশের সব বিভাগে গিয়ে জেলা, উপজেলা হাসপাতালে সেবার মান যাচাই করা হয়েছে। এসব বিষয় নিয়ে দেশের চিকিৎসক নেতাকর্মীদের সংগঠন বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ), স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদসহ (স্বাচিপ) সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পর্যায়ে দফায় দফায় কথা হয়েছে। দেশের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা বৃদ্ধির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাও রয়েছে। সব বিষয় মিলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দেশের মানুষের স্বাস্থ্যসেবার মান বৃদ্ধির বিভিন্ন উদ্যোগের অংশ হিসেবে এই বৈকালিক ইনস্টিউশনাল প্র্যাকটিস আপাতত ছোট আকারে শুরু হচ্ছে। কাজের সুফলতা দেখে দ্রুতই দেশের সব জেলা ও উপজেলা হাসপাতালে বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা চালু করা হবে।

সরকারি হাসপাতালে বৈকালিক স্বাস্থ্য সেবায় চিকিৎসক ও সংশ্লিষ্টদের সম্মানী ফি নির্ধারণ বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, অধ্যাপক পর্যায়ে ফি ৪০০ টাকা। তার সঙ্গে সহযোগী দুইজন পাবেন পঞ্চাশ টাকা করে। সহযোগী অধ্যাপক বা সিনিয়র কনসালটেন্টরা পাবেন ৩০০ টাকা, সহকারী অধ্যাপক বা জুনিয়র কনসালটেন্ট বা সমপর্যায়ের চিকিৎসকরা পাবেন ২০০ টাকা করে, যাদের সহযোগী দুইজন পাবেন ৫০ টাকা করে। এর পাশাপাশি হাসপাতালে রোগীদের সার্জারি, ডায়াগনস্টিক/ক্লিনিক্যাল/প্যারা-ক্লিনিক্যাল টেস্টসহ বিভিন্ন রকম পরীক্ষার জন্যও বৈকালিক ফি নির্ধারণ করে দেয়ার কথা জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

সরকারি চিকিৎসকদের সপ্তাহিক ডিউটি প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, একজন চিকিৎসককে সপ্তাহে মাত্র দুই দিন অতিরিক্ত ৩ ঘণ্টা করে সেবা দিতে হবে। তবে, এই সেবা যাতে মানুষ সপ্তাহে অন্তত ৬ দিন নিশ্চিত করে পায় সেটি নিশ্চিত করতে হবে। চিকিৎসকরা অতিরিক্ত ৩ ঘণ্টা দায়িত্ব পালন করবেন কি না সে প্রসঙ্গে সভায় স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন, চিকিৎসকরাসহ সব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী সরকারি সেবা দানের জন্য সরকারের প্রয়োজন হলে ২৪ ঘণ্টা সেবা দিতে হবে। এটিই নিয়ম। সেক্ষেত্রে সব পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী সরকারের নির্দেশনা মেনে চলতে বাধ্য থাকবে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সভাপতিত্বে সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. আজিজুর রহমান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মো. খুরশীদ আলম, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. টিটো মিঞা, বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) মহাসচিব ডা. এহতেশামুল হক চৌধুরী, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিব) সভাপতি অধ্যাপক ডা. জামাল উদ্দিন চৌধুরী, মহাসচিব অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান মিলন, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ, সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষসহ অন্য ব্যক্তিবর্গ।