ইসির সঙ্গে কোনো আলোচনায় যাবে না বিএনপি

প্রকাশ : ২৯ মার্চ ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে কোনো আলোচনায় যাবে না বিএনপি। গতকাল মঙ্গলবার বিকালে অনুষ্ঠিত দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়।

দলটির সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে আলোচনার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়ে গত ২৩ মার্চ ইসি যে চিঠি পাঠিয়েছে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় সেই চিঠি নিয়ে আলোচনা হয়। সভায় সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয় ইসির সঙ্গে কোনো আলোচনায় না যাওয়ার। বিএনপির নীতিনির্ধারকরা মনে করেন, নির্বাচন নিয়ে ইসির সঙ্গে কোনো আলোচনা করে লাভ নেই। কারণ, নিরপেক্ষ নির্বাচন করার ক্ষেত্রে

ইসির কোনো ক্ষমতাই নেই। এছাড়া ইসি নিজেও পক্ষপাতদুষ্ট এবং সরকারের মদদপুষ্ট। হঠাৎ করে বিএনপিকে আলোচনার জন্য ইসির চিঠিকে গণতান্ত্রিক বিশ্বের ‘চাপ এড়ানোর কৌশল’ বলেও মনে করছেন স্থায়ী কমিটির সদস্যদের কেউ কেউ। এরই মধ্যে দলটির নেতারা বলেছেন, নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে ফয়সালা না হওয়া পর্যন্ত জাতীয় নির্বাচন নিয়ে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করাটা অর্থহীন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশনের গঠন নিয়েই তাদের প্রশ্ন রয়েছে। সেই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা করে কোনো ফল আসবে না।

স্থায়ী কমিটির সভার দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচন প্রশ্নে বর্তমান ইসির সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিক কোনো বৈঠকে বসবে না বিএনপি। ইসি যে চিঠি দিয়েছে, তারও জবাব দেবে না। তবে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করে এ বিষয়ে বিএনপি তাদের বক্তব্য ও অবস্থান জানিয়ে দেবে।

দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সভাপতিত্বে স্থায়ী কমিটির ভার্চ্যুয়াল সভায় মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমেদ, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ অংশ নেন।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আলোচনার জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আওয়াল ২৩ মার্চ বৃহস্পতিবার বিকেলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে চিঠি দেন। তবে চিঠিতে আলোচনার জন্য কোনো দিনক্ষণ উল্লেখ করা হয়নি। ওই রাতেই ইসির আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম।

গত বৃহস্পতিবার মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে আমাদের অবস্থান খুবই পরিষ্কার। আমরা নির্বাচন কমিশনে কোনো আলোচনায় যাব না। নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে ফয়সালা না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন নিয়ে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করা অনর্থক। আমরা মনে করি, এই সরকারের অধীনে কোনো নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। এরপর দলীয় একাধিক সভা-সমাবেশেও এ বিষয়ে বিএনপির মহাসচিব একই ধরনের কথা বলেন।

যদিও গতকাল ঢাকায় আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আওয়াল সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, বিএনপিকে আমন্ত্রণ সংলাপের জন্য জানানো হয়নি, আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে অনানুষ্ঠানিকভাবে আলোচনার জন্য। আর বিএনপিকে আমন্ত্রণ জানানো সরকারের কোনো কূটকৌশলের অংশ নয়।